ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৫৬, ১ আগস্ট ২০২৫

সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করবে

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)

বাংলাদেশ ব্যাংক সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখায় ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগের পাশাপাশি সার্বিক শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংগঠনটি জানায়, ২০২৫ সালের জুন মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে মাত্র ৬ দশমিক ৪ শতাংশে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ।

ডিসিসিআই মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশের অনিশ্চয়তা, আইনশৃঙ্খলার অস্থিতিশীলতা, সীমিত জ্বালানি সরবরাহ এবং সর্বোপরি কঠোর মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির এই নি¤œগতি আরও তীব্র হচ্ছে। এ অবস্থায় খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৩ লাখ কোটি টাকা, যা মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এটি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি তৈরি করছে।

একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণœ করছে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার। ব্যবসায়িক আস্থার এই নি¤œমুখিতা সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নীতি সুদহার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ডিসিসিআইয়ের মতে, এই দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ সুদের হার বিশেষ করে ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং উৎপাদনশীল খাতের ওপর অতিরিক্ত ঋণের ভার চাপিয়ে দিচ্ছে, যা অর্থনৈতিক গতিশীলতা ব্যাহত করছে। নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী ছয় মাসের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ২ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী নীতিতে ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।

এর বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ২০ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। অর্থনীতিতে যা আর্থিক চাপ বাড়াবে। একই সঙ্গে করদাতাদের ওপর বোঝা বাড়বে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ আরও সঙ্কুচিত করবে।
ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে সুদের হার হ্রাস এবং ঋণের শর্তাবলী সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। একই সঙ্গে সৎ ঋণগ্রহীতাদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা এবং তাৎক্ষণিক খেলাপির ঝুঁকি এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসের সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।

টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে ডিসিসিআই আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং তারল্য নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারির ওপর জোরারোপ করেছে। ডিসিসিআইয়ের মতে, ভবিষ্যতে বিশেষ করে বেসরকরি খাতের আস্থা পুনরুদ্ধার, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আরও নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাতভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির বিকল্প নেই।

প্যানেল হু

×