
.
দক্ষিণ-পূর্ব এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে বাজার সম্প্রসারণে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এজন্য আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বাস্তবায়ন জরুরি বলে মনে করছেন দু’দেশের ব্যবসায়ীবৃন্দ। বুধবার গুলশানে এফবিসিসিআই এবং থাই-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব কথা উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রয়েল থাই অ্যাম্বাসির চার্জ দ্য’ অ্যাফেয়ার্স মি. পানম থংপ্রায়ুন।
সভায় বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার বাণিজ্য সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, থ্যাইল্যান্ড হলো এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম বাণিজ্যিক হাব। আর, বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল দক্ষ এবং তরুণ জনশক্তি। এসব সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে উভয় দেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ, অবকাঠামো, জ্বালানি এবং হাল্কা প্রকৌশল প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক।
উভয় দেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা এফটিএ ইস্যুতে অগ্রসর হবে আশাবাদ ব্যাক্ত করে মো. হাফিজুর রহমান রহমান বলেন, বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা আমদানি-রপ্তানি আরও তরান্বি^ত হবে। পাশাপাশি বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে। এ সময়, দক্ষিণ-পূর্ব এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বাজার সুবিধাকে কাজে লাগাতে আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষ নিবিড়ভাবে কাজ করবে বলে আশাবাদী রয়েল থাই অ্যাম্বাসির চার্জ দ্য’ অ্যাফেয়ার্স পানম থংপ্রায়ুন। এই সভার মাধ্যমে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং আরও শক্তিশালী হবে বলে প্রত্যাশা তার।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, থাই-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ, থাই-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন, এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মো. আলমগীর, এফবিসিসিআই’র ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের প্রধান মো. জাফর ইকবাল এনডিসি, থাই-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ এবং উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাবৃন্দ।
উদ্যোক্তারা মনে করেন, থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে হেল্থ সেক্টরে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। থাইল্যান্ড যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে উন্নতমানের হসপিটাল নির্মাণ করলে বাংলাদেশ সরকার সহায়তা প্রদান করবে। এতে করে উভয় দেশে উপকৃত হবে। থাইল্যান্ডের মেডিক্যাল সেক্টরের বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশ সফর করলে বিনিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হবে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ থাইল্যান্ডের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিতে যান।
এ কারণে থাইল্যান্ডের উদ্যোক্তারা এ দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। উল্লেখ্য, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে ৪৪.০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ৯৫২.৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। এরপর থেকে প্রতিবছরই থাইল্যান্ড থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে।
বাংলাদেশ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ঔষধ, সামুদ্রিক মৎস্য ও অন্যান্য প্রাণিজ পণ্য, কাগজ ও কাগজের পাল্প, সাবান, প্লাস্টিক পণ্য এবং রাবার রপ্তানি করছে। বাংলাদেশের আরও অনেক পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে থাইল্যান্ডে। রপ্তানি বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া গেলে থাইল্যান্ডে রপ্তানি বৃদ্ধি করা সম্ভব। থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশ ‘ওয়ান বেল্ড ওয়ান রোড’ উদ্যোগের সদস্য, এতে উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লাভবান হবে।
প্যানেল মজি