
ছবি: সংগৃহীত।
ব্যাংকে টাকা রাখলেই সেটি নিরাপদ—এমন ধারণা আজ আর অনেকের মধ্যে নেই। সম্প্রতি অনেক গ্রাহকই ব্যাংকে টাকা রেখে বিপাকে পড়েছেন। সময়মতো টাকা তুলতে পারছেন না, অনেক ক্ষেত্রে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে—সুদ বেশি দিলেই কি সেই ব্যাংকে টাকা রাখা নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদ হার নয়, ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্যই বলবে সেখানে টাকা রাখা নিরাপদ কিনা। অর্থাৎ, কেবল লোভনীয় সুদের হার দেখে কোনো ব্যাংকে আমানত রাখা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কারণ অতিরিক্ত সুদ দেওয়ার অর্থ হতে পারে ব্যাংকটি অর্থনৈতিক সংকটে আছে এবং গ্রাহকের টাকা সংগ্রহে মরিয়া।
ভালো ব্যাংক চেনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক:
১. খেলাপি ঋণের হার:
যত কম খেলাপি ঋণ, তত ভালো ব্যাংক। ৫% বা তার নিচে খেলাপি হার থাকলে সেটি তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। ১০% এর বেশি হলে সাবধান হওয়া জরুরি।
২. ক্রেডিট রেটিং ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন:
ব্যাংকের রেটিং ও বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন ঘেটে দেখুন—যেখানে ব্যাংকের ঝুঁকি ও অর্থ ফেরত দেওয়ার সক্ষমতার বিবরণ থাকে।
৩. পরিচালনা পর্ষদের পরিচয়:
পরিচালকরা কারা, তাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি কেমন—তাও একটি বড় ইঙ্গিত।
৪. বড় গ্রাহকদের পরিচয়:
যারা ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিচ্ছেন, তারা বিশ্বাসযোগ্য কিনা, তা থেকেও ব্যাংকের নীতিমালা বোঝা যায়।
৫. সেবা ও প্রযুক্তি ব্যবহার:
মোবাইল অ্যাপ, অনলাইন ব্যাংকিং, এটিএম সুবিধা কতটা বিস্তৃত তা দেখে বোঝা যায়, ব্যাংকটি আধুনিক ও গ্রাহকবান্ধব কিনা।
সুদের হার বেশি—মানে বিপদও বেশি?
কোনো ব্যাংক যদি বাজারের চেয়ে অনেক বেশি সুদ অফার করে, তবে সেটি হতে পারে লাল পতাকা। এ ধরনের ব্যাংক আর্থিক চাপে আছে বলেই বেশি সুদ দিয়ে গ্রাহকের আমানত সংগ্রহের চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে আপনার আসল টাকা ফেরত পাওয়াটাই হয়ে উঠতে পারে চ্যালেঞ্জ।
সুতরাং, শুধু বেশি লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে টাকা রাখা উচিত নয়। আগে যাচাই করুন, ব্যাংকটি তলাবিহীন ঝুড়ি কিনা!
নুসরাত