
ছবি: সংগৃহীত
গ্রামীণ অঞ্চলে বেড়ে ওঠা দেশীয় মুরগি শহুরে মানুষদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের। কিন্তু সুস্থ দেশীয় মুরগি অনেকেই চিনতে না পারায় প্রতারণার শিকার হন। অনেক সময় সোনালী মুরগিকেও দেশী মুরগি হিসেবে বিক্রি করা হয়। এবার এই সমস্যা নিরসনে দেশীয় মুরগির ব্র্যান্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো ‘গ্রামীণ প্রোটিন’। বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। গ্রামীণ ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. ইমরানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেস্ট বাজার এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. সোহরাব হোসেন মেহেদী।
স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পুষ্টির নতুন দিগন্ত
পুষ্টিবিদদের মতে, দেশি মুরগি প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ‘গ্রামীণ প্রোটিন’ এই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন মুরগি নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসচেতন ভোক্তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য পণ্য সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
স্থানীয় সম্পদকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়
প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ‘গ্রামীণ প্রোটিন’ ব্র্যান্ডটি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও পূর্বধলা এবং পাহাড়ি অঞ্চল থেকে সরাসরি দেশি মুরগি সংগ্রহ করে ঢাকায় সরবরাহ করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি শহুরে ভোক্তাদের কাছে প্রাকৃতিক ও পুষ্টিসমৃদ্ধ দেশি মুরগি পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির সম্পর্কে এর সিইও মো. ইমরান বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো গ্রামের কৃষকদের উৎপাদিত দেশি মুরগি শহরের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। আমরা চাই, প্রতিটি পরিবার সুস্থ ও পুষ্টিকর খাবার পেতে সক্ষম হোক।
প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ প্রোটিন’ ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে তাদের সরবরাহ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে পণ্যের মান আরও উন্নত করার পরিকল্পনা করছে।
এ ধরণের উদ্যোগকে অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করে কৃষি অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মো. সদরুল আমিন বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের নেত্রকোনা জেলার অর্থনৈতিক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। আমাদের এলাকার দেশি মুরগির ঢাকা শহরে ব্যাপক চাহিদা থাকায়, আমাদের গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে মুরগি পালনের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।
এই উদ্যোগকে বাংলাদেশের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা স্থানীয় কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের জন্য পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করবে।
জাহিদুল ইসলাম/রাকিব