বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
মানুষের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা আছে এমন মন্তব্য করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, বাজারে যে পণ্য ঢুকছে তা অবিক্রীত থাকছে না। কেউ খালি হাতে ফিরছেন না।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে ‘দ্রব্যমূল্যে অস্থিরতা: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাজারে কখনো নজরদারি করে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বাজারের একটা সাপ্লাই চেন আছে। এ সাপ্লাই চেনে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষি পণ্যগুলো হার্ভেস্টিংয়ের সময় বেশি উৎপাদন হয়। তারপর ৩-৪ মাস উৎপাদন হয় না। এসময় যদি আপনি এটাকে গুদামজাত না করেন… গুদামজাত করা ও মজুতদারি এ দুটির মধ্যে যদি পার্থক্য নির্ধারণ না করতে পারি বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একইভাবে আমদানি পণ্য আমরা যদি সিজনে না কিনে অফ-সিজনে কিনি আমাদের বেশি দাম দিতে হবে।’
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘তেল এবং চিনি এ দুটি আমরা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আমদানির ওপর নির্ভরশীল থেকে আমাদের মতো একটা দেশে ১৭ কোটি মানুষকে আমদানি করে সরবরাহ করা বেশ কঠিন। বাজারে কিন্তু যে পণ্য আমাদের ঢুকতেছে তা অবিক্রীত থাকছে না। কেউ কিন্তু আবার খালি হাতে ফিরছে না। এ দেশে কিন্তু দুর্ভিক্ষ বা খাদ্যের সংকট ছিল। বাজারে টাকা দিলেও খাদ্য পাওয়া যেত না। সেখান থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। আমাদের কিন্তু এখন চাল আমদানি করতে হয় না। মানুষের হাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা আছে।’
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে দোষ চাপানোর প্রবণতা বেশি। এখানে দোষ হলো- ব্যবসায়ীর, শিল্পপতির ও সরকারের। আর কারও দোষ নেই! এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সামনে কীভাবে সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যায়, সে জন্য কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে না পারলে যত আইনই করেন বা থাকুক, তা কার্যকর করা যাবে না। তাই বাজার ব্যবস্থাপনায় বিধি, নিয়ন্ত্রক ও হস্তক্ষেপের পার্থক্য খেয়ালা রাখতে হবে। পণ্যের উৎপাদন ও আমদানি পণ্যের বন্দর থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দূর করা দরকার। এটা করা না গেলে নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যায়।’
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার দিকে নজর রাখতে হবে। সামষ্টিক অর্থনীতি ঠিক করতে হবে। এটি ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে। এটি সমাধান করা গেলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো যাবে। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নিলে আশা করছি লক্ষ্য অর্জন সহায়ক হবে।’
এম হাসান