
ছবি: সংগৃহীত
অ্যারিজোনার মরুভূমি এলাকায় বসবাসরত মানুষ প্রায়শই র্যাটলস্নেকের (বিষধর সাপ) মুখোমুখি হন। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়ায় সবাই যে সাপ মেরে ফেলে তা নয়। কিছু মানুষ সাপদের রক্ষা এবং নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান হলো র্যাটলস্নেক সল্যুশনস। এই প্রতিষ্ঠানকে কল করলেই তারা পৌছে যায় ঘটনাস্থলে।
ক্রিস্তা রেইনাক নামের এক নারী তার বাড়ির উঠানে একটি বড় র্যাটলস্নেক দেখতে পান। সাথে সাথে কল করেন র্যাটলস্নেক সল্যুশনস-এ। খুব দ্রুত একজন উদ্ধারকর্মী এসে সাপটিকে নিরাপদভাবে ধরে নিয়ে যান পার্শ্ববর্তী মরুভূমিতে। রেইনাক বলেন, “আমি কোনো প্রাণীকে মারা বিশ্বাস করি না, বিশেষত সে যদি শুধু ভুল জায়গায় এসে পড়ে।
র্যাটলস্নেকগুলো মানুষের জন্য বিপদজনক হলেও তারা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তারা ইঁদুরের মতো প্রাণী খেয়ে ফসলের সুরক্ষা করে, এমনকি লেম রোগের মতো রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাপেরা তাদের মল দিয়ে বীজ ছড়ায়, যা গাছপালা জন্মাতে সাহায্য করে।
র্যাটলস্নেক সল্যুশনের প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান হিউজ ছোটবেলা থেকেই সাপের প্রেমে পড়েছিলেন। ২০০৮ সালের আর্থিক মন্দার পর চাকরি হারিয়ে তিনি সাপ উদ্ধারকে পেশা হিসেবে নেন। এখন তার প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ১৫০০টিরও বেশি সাপ উদ্ধার করে।
তবে সমস্যা বাড়ছে মানুষের বসতি ও আবাসন প্রকল্পের জন্য। মরুভূমি কেটে বসতি গড়ে তোলার ফলে সাপের আবাসস্থল কমে যাচ্ছে,ফলে সাপ মানুষের উঠান বা বাগানে ঢুকে পড়ছে। অনেক সময় বাগানে রাখা পাথরের স্তূপ সাপের লুকানোর জায়গা হয়ে দাঁড়ায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বাড়ায় সাপেরা ঠাণ্ডা জায়গার খোঁজে বাড়ির দিকে চলে আসে। ফিনিক্স শহরে ২০২৩ সালে ৫৫ দিন টানা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা ছিল। ফলে সাপ ও মানুষের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আরও বেড়ে গেছে।
সাপগুলো আমাদের শত্রু নয় বরং প্রকৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ—এটাই বোঝাতে চান হিউজ ও তার দল। তিনি বলেন, “মানুষ বলে সাপকে ঘৃণা করো, মারো। আমি তা করি না। আমি সাপদের বাঁচাতে চাই।”
মুমু