
বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষ দিনশেষে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়- ‘নিজের জন্য সময় কোথায়?’ একদিকে কাজের চাপ, মিটিং, ডেডলাইন, টার্গেট- অন্যদিকে সংসারের নানা ব্যস্ততা। এই টানা ছুটে চলার মাঝে নিজের জন্য একটু সময় বের করে নেওয়া অনেকের কাছেই যেন বিলাসিতা। কাজের মাঝে হোক বা কাজ শেষে, নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করাই দরকার। সমস্ত দায়িত্ব সামলে কীভাবে নিজেকে সময় দেওয়া যায়, কী করা যেতে পারে সেই সময়টিতে আসুন জেনে নেই-
পরিকল্পনার মাধ্যমে সময় বের করুন : প্রতিদিনের নির্ধারিত রুটিনের ভেতর থেকেই নিজের জন্য কিছু সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। অফিসের কাজ শুরুর আগে অথবা রাতের একান্ত সময়টুকু হতে পারে নিজের জন্য উপযুক্ত সময়। ৩০ মিনিট হলেও সেই সময়টি একেবারে নিজের জন্য রাখুন। এই সময়টিতে চা বা কফি নিয়ে বারান্দায় বসে থেকে, প্রিয় বইয়ের দু’পাতা পড়ে বা সারাদিনে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বেস্ট মুহূর্তটিকে মনে করে কাটিয়ে দিতে পারেন।
নিজের পছন্দের কাজ করুন : নিজেকে সময় দেওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিজের শখের কাজের পিছনে কিছু সময় ব্যয় করা। গান শোনা, ছবি আঁকা, লেখালেখি কিংবা গাছপালার যত্ন নেওয়ার মতো কাজগুলো মনকে প্রশান্ত করে তোলে। যারা আগে কখনো নিজের শখকে সময় দিতে পারেননি, তারা নতুন করে চেষ্টা করে দেখতে পারেন- নিজের ভালো লাগার জিনিস খুঁজে বের করার মধ্যে অন্যরকম শান্তি রয়েছে।
শরীরচর্চা ও মানসিক প্রশান্তি : শরীরচর্চা কেবল দেহ নয়, মনের জন্যও উপকারী। প্রতিদিন কিছু সময় হাঁটাহাঁটি, হালকা ব্যায়াম, কিংবা যোগব্যায়াম করলে মন ফুরফুরে লাগে। চাইলে সকাল বা সন্ধ্যায় পার্কে হাঁটার অভ্যাস করে নিতে পারেন। এটি একদিকে যেমন শরীরকে সচল রাখে, অন্যদিকে প্রকৃতির মাঝে থেকে কিছুটা প্রশান্তিও অনুভব করা যায়।
ডিভাইসের সঙ্গে দূরত্ব : নিজেকে সময় দেওয়ার ক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস থেকে কিছুটা বিরত থাকা জরুরি। অবসর সময়টুকু সোশ্যাল মিডিয়ায় না কাটিয়ে বাস্তব জীবনে নিজেকে সময় দিন। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিকে একটু দূরে রেখে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ একা বসে থাকাও হতে পারে এক ধরনের মানসিক বিশ্রাম। নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া কোনো স্বার্থপরতা নয়, বরং সেটি আত্মসচেতনতা ও মানসিক সুস্থতার জন্য সহায়ক। অফিস ও বাসার দায়িত্ব পালন করেও দিনের কিছুটা সময় যদি নিজেকে দেওয়া যায়, তবে জীবন হয়ে উঠতে পারে অনেকটা ভারসাম্যপূর্ণ ও আনন্দময়। তাই সময়ের ঘড়ির কাটায় ঘুরে চলা জীবনটাকে একটুখানি বিরতি দিন- শুধু নিজের জন্য।
প্যানেল