
গ্রীষ্মের খরতাপে অতীষ্ঠ জনজীবন। এই মেঘলা আবহাওয়া তো এই আবার খটখটে রোদ। কখনো ঝুপ করে নামে বৃষ্টি। তাই সকালের পরিবেশ দেখে সটান করে বাইরে বের হয়ে যাবেন না। পরিস্থিতি যেমনি হোক রোদ-বৃষ্টি-ঝড়-গরমের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বাইরে বের হবেন।
ছাতা: প্রথম কাজ হচ্ছে সঙ্গে সব সময় একটি ছাতা রাখুন। এটি আপনাকে রোদ-বৃষ্টি উভয় থেকেই রক্ষা করবে। বাজারে নানা নকশার ছাতা পাওয়া যায়। ছোট ফোল্ডিং ছাতাগুলো ব্যাগের মধ্যে সহজেই রেখে দেওয়া যায়। এগুলোর দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু। শুধু মার্কেটেই না পাশের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতেও পাবেন ছাতা। সঙ্গে ভালো মজবুত একটি পলিথিনও রাখবেন, যেন যে কোনো প্রয়োজনে বৃষ্টির পানি থেকে আপনার মূল্যবান জিনিস রক্ষা করতে পারেন। বেশির ভাগ সময় বৃষ্টিতে ভেজা ছাতা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তাই সঙ্গে একটা পলিব্যাগ থাকলে ছাতাটা ভাজ করে তাতে রেখে দিতে পারবেন। তবে অফিস বা এমন কোথাও যদি যান যেখানে আপনাকে দীর্ঘ সময় থাকতে হবে, সেখানে সম্ভব হলে ছাতাটা মেলে রাখবেন। শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবার ভাজ করে রেখে দেবেন, যাতে অন্য কারো সমস্যা না হয়।
সানস্ক্রিন ক্রিম: বাইরে বের হওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে মুখে সানস্ক্রিন ক্রিম লাগিয়ে নিন, এতে আপনার ত্বক সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা পাবে। সঙ্গে সানগ্লাস ও ক্যাপও রাখতে পারেন।
পোশাক: গরমে আরাম এমন নরম পাতলা ঢিলেঢালা হালকা রঙের সুতির পোশাক পরুন। ছেলেরা হাফ হাতা শার্ট পরতে পারেন। তবে হাফ বা ফুল হাতা যেটাই পরেন সুতি, লিলেন, ভিসকস বা যে কোনো নরম আরামদায়ক কাপড়ের পোশাক পরবেন।
পানি ও পানীয়: সঙ্গে অবশ্যই এক বোতল পানি নিয়ে বের হবেন। তবে যতটা সম্ভব ফ্রিজের ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলবেন। আর খেলেও নরমাল পানির সঙ্গে মিলিয়ে খাবেন। আজকাল পথে নানা রকম ফলের জুস বা শরবত বিক্রি হয়, সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। স্বাভাবিক শরবত, ডাব, লবণ পানি বা স্যালাইন পান করতে পারেন, যদি তা আপনার শারীরিক কোনো ক্ষতির কারণ না হয়ে থাকে। আখের রস এখন বিভিন্ন সুপার শপে অত্যাধুনিক মেশিনে তৈরি হয়, সেটা পান করতে পারেন। তবে বাইরের কেনা পানীয় যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। অল্প করে বারবার পানি পান করবেন।
ঠান্ডা ঘর: ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখার জন্য পর্দায় ঠান্ডা পানি স্প্রে করতে পারেন। আবার একটি পাত্রে বরফ বা ঠান্ডা পানি নিয়ে ঘরের মেঝেতে রেখে দিতে পারেন, অথবা কিছু ভারি কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে মেঝেতে রাখতে পারেন। এতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ঘরের বাতাস ঠান্ডা অনুভূত হবে।
মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। তাই কার আড়ালে যে কে আছে তা এক মুহূর্তে বুঝার উপায় নেই। তাপমাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যখন ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করবে, তখন ঘরে বা ছায়ায় অবস্থান করার চেষ্টা করুন। বাইরে থেকে এসেই হাত-পা-মুখ ধুবেন না এবং সরাসরি এসি বা ফ্যানের নিচে বসে ঠান্ডা হতে যাবেন না। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ফ্যান বা এসি থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে বসুন। শরীরের ঘাম শুকিয়ে ঘরের তাপমাত্রায় মিলতে অন্তত আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। তারপর হাত-মুখ ধোয়া বা গোসল করুন।
বাজারে এখন আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ নানা রকম রসালো ফল পাওয়া যায়। সাধ্যের মধ্যে সীমিত পরিমাণ ফল কিনে জুস করে খেতে পারেন। এছাড়া সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। দিনের বেলায় একটানা শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা নিন বা গোসল করুন। অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্যানেল