ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিনেমা হলে ব্যাংক ঋণ

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ১৩ মে ২০২২

সিনেমা হলে ব্যাংক ঋণ

শিল্পগুণসমৃদ্ধ ও মানসম্মত চলচ্চিত্র একটি দেশকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তোলে। সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র মানুষের সুকমার বৃত্তিগুলো জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করে। চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখে। একসময় দেশের সিনেমা হলগুলোতে প্রচুর দর্শক সমাগম দেখা গেলেও বর্তমানে অধিকাংশ দর্শক সিনেমা হল বিমুখ। বর্তমানে সারাদেশে মাত্র ১৭৪টি সিনেমা হল টিকে আছে, এসবের মধ্যে নিয়মিত সিনেমা প্রদর্শিত হয় ১১০টিতে। ২৮ জেলায় আদৌ কোন সিনেমা হল নেই। অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে দেশীয় চলচ্চিত্রে বিনোদনের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। দর্শককে সমাজ সচেতন করে তোলার বিষয়টি থেকে যায় প্রায় অবহেলিত। বিশ্লেষকরা এরূপ মনোভাবকেই আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের দুর্দশার প্রধান কারণ মনে করছেন। চলচ্চিত্র শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সিনেমা হলগুলোর সংস্কার, আধুনিকায়ন, যন্ত্রাংশ কেনা এবং নতুন হল নির্মাণের জন্য সিনেমা হল মালিকদের স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ বা বিনিয়োগ অর্থায়নে একটি বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে দুই ধাপে দেয়া হবে এই টাকা। প্রত্যেক গ্রাহককে প্রতিটি সিনেমা হলের জন্য ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধার নিশ্চয়তা অর্থায়নকারী ব্যাংক নির্ধারণ করবে। কিন্তু কোন সিনেমা হলই ৫ কোটি টাকার বেশি পাবে না। এ বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক আবেদনের সময়সীমা ৯ মাস বাড়িয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। এই স্কিম থেকে যারা পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা নিতে চায়, তাদের চলতি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। উল্লেখ্য, এর আগের সার্কুলারে ৩১ মার্চের মধ্যে আবেদন করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। সমাজে যখন কোন সঙ্কট তৈরি হয়, তখন তার সমাধানও নিহিত থাকে সেখানেই। দেশের কিছু ছবি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্কট ও সমাধানের উপায় নিয়ে ভাবছে। সিনেপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। বিষয়গুলো অত্যন্ত ইতিবাচক। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পও একদিন ঘুরে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশা অমূলক নয়। এই পরিবর্তন হয়ত খুব দ্রুত হবে না, তবে হবে। কেননা, অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেশি চলচ্চিত্র দেখেন। দেশের চলচ্চিত্র শিল্পোন্নয়নে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধার সদ্ব্যবহারে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হওয়া জরুরী। সুস্থ সংস্কৃতিচর্চার পথ উন্মুক্ত এবং সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো সচল ও অনুশীলন করার মাধ্যমে আলোকিত সমাজ বির্নিমাণ সম্ভব। সে অবস্থায় সিনেমা হল মালিকদের সরকার প্রদত্ত স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণের সুবিধা কাজে লাগিয়ে হলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকীকরণ অবশ্য কর্তব্য।
×