ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হলো চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৯ জানুয়ারি ২০২২

উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হলো চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএফডিসির বাইরে সকাল থেকে উৎসুক জনতার ঢল। ভেতরে শিল্পীদের মিলনমেলা। সঙ্গে পুলিশ আর সাংবাদিক। শুক্রবার সকাল হতেই যেন আনন্দের ঢেউ বইছিল পুরো এফডিসিজুড়ে। এক প্রকার রাজকীয়, উৎসবমুখর আর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিশা-জায়েদ ও কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের মধ্যে বিরোধের মাত্রা চরম আকার ধারণ করলেও শুক্রবার সকাল থেকে সেটি আর দেখা গেল না। সব শিল্পী যেন মিলেমিশে একাকার। সকাল থেকে শুরু হয়ে ভোট প্রদান চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। মোট ৪২৮ জন ভোটারের মধ্যে ৩৬৫ জন ভোট দিয়েছে। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। নির্বাচনে মুখোমুখি ছিলেন দুই প্যানেলের তারকা অভিনয় শিল্পীরা। আর দুই প্যানেলের নেতৃত্বে প্রধান দুজনের একজন পর্দার কালজয়ী নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং অন্যজন বাংলা সিনেমার প্রতিষ্ঠিত ভিলেন মিশা সওদাগর। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া খবরে ভোটের ফল পাওয়া যায়নি। আগামী দুই বছরের জন্য চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতৃত্ব দিতে সভাপতি হিসেবে শিল্পীরা কাকে বেছে নেবেন, পর্দার নায়ককে, নাকি ভিলেনকে? এমনটাই প্রশ্ন এখন সবার মনে। যদিও দুজনই তাদের নিজ নিজ প্যানেল নিয়ে ভীষণ আশাবাদী। নির্বাচনে প্রধান সঙ্গী হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন পেয়েছেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও চিত্রনায়িকা নিপুণকে। অন্যদিকে, গেল দুইবারের মতো এবারও মিশা সওদাগরের প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৭তম নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুণের প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন যারা তারা হলেন-সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ। সহ-সভাপতি রিয়াজ ও ডি এ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনুর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক নিরব হোসেন, দফতর ও প্রচার সম্পাদক আরমান, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে আজাদ খান। কার্যকরী পরিষদের সদস্যপদে অমিত হাসান, ফেরদৌস, শাকিল খান, নানা শাহ, আফজাল শরীফ, সাংকো পাঞ্জা, জেসমীন, কেয়া, পরীমনি, গাঙ্গুয়া ও সীমান্ত। মিশা-জায়েদ প্যানেলে সভাপতি মিশা সওদাগর, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ডিপজল-রুবেল, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত, সাংগঠনিক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, দফতর ও প্রচার সম্পাদক জে কে আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ফারহান। কার্যকরী পরিষদের সদস্যপদে নির্বাচন করেছেন অভিনেত্রী রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, অরুণা বিশ্বাস, মৌসুমী, আসিফ ইকবাল, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, নাদের খান ও হাসান জাহাঙ্গীর। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন পীরজাদা হারুন। দুজন সদস্য হলেন-বিএইচ নিশান ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী। আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান, আপীল বোর্ডের সদস্য হিসেবে ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন জেমী ও মোহাম্মদ হোসেন। মিশা-জায়েদ ও কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল ছাড়াও এবারের নির্বাচনে ছিলেন দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এবার মোট ভোটার ছিল ৪২৮ জন। নিরিবিলি পরিবেশে ছোট পর্দার শিল্পীদের ভোট সম্পন্ন ॥ শিল্পকলা একাডেমিতে একেবারে নিরিবিলি পরিবেশে সম্পন্ন হয় টেলিভিশন অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন। শুক্রবার একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রে সকাল নয়টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বর্ধিত সময়সহ চলে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত। দিনভর উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিয়েছেন নাট্যাঙ্গনের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছিল ভোট গণনা। এবার ভোটার সংখ্যা মোট ৭৫২ জন। অভিনয় সংঘের হয়ে এবারের নির্বাচনে ২১টি পদে লড়াই করেছেন ৪৮ জন প্রার্থী। প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্যে সভাপতি পদে লড়াই করেছেন আহসান হাবীব নাসিম ও ড. শাহাদাৎ হোসেন (নিপু)। সহ-সভাপতি পদের তিনটি পদের জন্য লড়াই করেছেন ৫ জন, আনিসুর রহমান মিলন, ইকবাল বাবু, তানিয়া আহমেদ, দিলু মজুমদার ও সেলিম মাহবুব। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়েছেন রওনক হাসান ও কবীর টুটুল। দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন নাজনীন হাসান চুমকী, শামীমা তুষ্টি ও জামিল হোসেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে লড়েছেন সাজু খাদেম, তুষার মাহমুদ ও জুলফিকার চঞ্চল। অর্থ সম্পাদক পদে সায়েম সামাদ ও মুহাম্মদ নূর এ আলম। দফতর সম্পাদক পদে মামুন অর রশিদ ও শেখ মেরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সম্পাদক পদে মাহাবুবুর রহমান মোল্লা ও রাশেদ মামুনুর রহমান অপু। আইন ও কল্যাণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও রওনক বিশাকা শ্যামলী। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে প্রাণ রায় ও মুকুল সিরাজ। তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে তিন জন- আবুল কালাম আজাদ, মাহাদী হাসান পিয়াল ও সুজাত শিমুল। এছাড়া সাতটি কার্যনির্বাহী পদের জন্য নির্বাচন করেছেন আরও ২০ জন প্রার্থী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার খায়রুল আলম সবুজ।
×