ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বাণিজ্যমেলার ভাগ্য নির্ধারণে জরুরী সিদ্ধান্ত কাল

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২২ জানুয়ারি ২০২২

বাণিজ্যমেলার ভাগ্য নির্ধারণে জরুরী সিদ্ধান্ত কাল

এম শাহজাহান ॥ শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে ঢাকার অদূরে অবস্থিত পূর্বাচলের স্থায়ী কমপ্লেক্সের বাণিজ্যমেলায়। তবে করোনা সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে এই মেলার ভাগ্য নির্ধারণে জরুরী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। আগামীকাল রবিবারের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাবে মেলা কর্তৃপক্ষ। হাজার হাজার মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছে ইপিবি। বাধ্যতামূলকভাবে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের মাস্ক ব্যবহারে হিমশিম খেতে হচ্ছে মেলায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। এ অবস্থায় মেলা চালু রাখার বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকে মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। শেষ বিকেলে দর্শনার্থীদের ভিড়ে স্থায়ী কমপ্লেক্সটি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এতে করে বিক্রেতাদের বেচাকেনা বেশ ভালভাবেই জমে উঠেছে। বিক্রি বাড়তে মেলায় স্টল নেয়া বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষ থেকে ছিল ব্যাপক ছাড়ের অফার। এ কারণে ক্রেতারা কিছুটা সস্তায় কিনতে পেরেছেন নিজেদের পছন্দমতো পণ্যসামগ্রী। ক্রোকারিজ সামগ্রী, পোশাক ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য এবং ফার্নিচার বিক্রি হয়েছে দেদার। খুশি বিক্রেতা- ক্রেতারা। একটি মেলায় যে ধরনের আনন্দ উল্লাস ও হৈ-হুল্লোড় হওয়ার কথা তাই হচ্ছে বাণিজ্যমেলায়। অনেকে পরিবারবর্গ নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মেলায়। ঠিক যেন চিরচেনা দৃশ্য। কিন্তু মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থী এমনকি বিক্রেতারাও কতটুকু স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সেই প্রশ্নও ছিল মেলা প্রাঙ্গণে। গাদাগাদি, ঠাসাঠাসি ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার মতো বালাই না থাকায় অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে মেলা প্রাঙ্গণ। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি সমবেত হতে পারবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে বাণিজ্যমেলায় হাজার হাজার মানুষের ঢল! এ অবস্থায় শেষ মুহূর্তে মেলার ভাগ্য নির্ধারণে আবার বসতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান জনকণ্ঠকে বলেন, মেলা চালিয়ে যাওয়া হবে কি না সে বিষয়ে রবিবারের মধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত আসছে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলায় আসছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অনেক চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তিনি বলেন, বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকার পরও স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানা যাচ্ছে না। এ কারণে ওমিক্রন ঝুঁকি কমাতে সরকার চাইলে মেলা স্থগিত করতে পারে। হয়তো এ বিষয়ে রবিবারের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত পাবে ইপিবি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত আসলে তা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করা হবে। তবে এখনও যেহেতু কোন সিদ্ধান্ত আসেনি তাই মেলা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ের পরও ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে মেলার সময় বাড়ানো হয়। উল্লেখ্য, পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাণিজ্যমেলায় দেশী-বিদেশী মোট ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশী ৬টি স্টল ও ৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। বাকিগুলো দেশী স্টল। এবারও প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, জেনারেল স্টল, ফুডকোড, মিনি স্টল, প্রিমিয়ার স্টল ক্যাটাগরি রয়েছে। মিলনায়তনের ভেতরে নিজস্ব একটা ক্যাফেটরিয়া রাখা হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে ৫০০ লোক বসে খাবার খেতে পারেন। ঢাকা থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যাতায়াতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য বিআরটিসির ৩০টি বাস দেয়া হয়েছে। কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে এ বাসগুলো চক্রাকারে মেলায় যাচ্ছে এবং আসছে। অন্যদিকে বেসরকারী খাতের বিভিন্ন পরিবহনও যাচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণে। শুক্রবার সকাল থেকে দীর্ঘলাইন ধরে বিআরটিসি বাসে মেলায় গেছেন ঢাকার দর্শনার্থীরা।
×