ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে চীনা নাগরিকের বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ০১:১০, ২১ জানুয়ারি ২০২২

ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে চীনা নাগরিকের বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃহস্পতিবার দিনভর একটি ভিডিও-ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরপাক খেয়েছে। সর্বত্র আলোচনায়ও ছিল এই বিষয়টি। সেটি হচ্ছে, রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবের সামনের সড়কে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত একটি ভিডিও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক মিনিট ১৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ এক বিদেশী নাগরিক ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে বাগবিত-ায় জড়িয়েছেন। তিনি ‘ইউ ওয়ান্ট মানি’ বলে চিৎকার করে ওই ট্রাফিক পুলিশের সদস্যের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। এ সময় ট্রাফিক পুলিশের আরেক সদস্য নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন। তবে ওই বিদেশী নাগরিক বারবার বলছেন, ‘ইউ ওয়ান্ট মানি, আই গিভ ইউ দিস ...মনি (তুমি টাকা চাইছ, এই নাও, আমি টাকা দিচ্ছি)’- এই বলে তিনি টাকা ছুড়ে মারছেন। এ সময় ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্য আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলছেন, তিনি (গাড়ির) যে কাগজ পেয়েছেন তা ‘ফেইক’। এটা নিয়ে বলতেই তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। পরে ওই গাড়ির বাংলাদেশী চালককে বলতে শোনাা যায়, ‘আপনি আর কথা কইয়েন না, এমনে কেউ ধান্ধা করে?’। পরে ওই বিদেশীকে নিয়ে গাড়ির চালক ততক্ষণে গাড়িটি নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। ভিডিওটি বিভিন্ন গ্রুপ এবং ব্যক্তির আইডিতে শেয়ার দিয়ে বলা হচ্ছে, কাগজপত্র সব ঠিকঠাক থাকলেও পুলিশ গাড়ি থামিয়ে টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ওই বিদেশী। তবে পুলিশের দাবি, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। কাগজপত্র যাচাইয়ে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হওয়ায় ওই বিদেশী ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অধীন থাকা রাওয়া ক্লাবের সামনের রাস্তায় মঙ্গলবার । ভিডিওটি ধারণ করেন কোন এক পথচারী। পরে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ ওই বিদেশী চীনের নাগরিক। তিনি ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন, গাড়িটি তার অফিসের। আজকাল প্রায়ই দেখা যায়, ব্যস্ত রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ না করে গাড়ি আটকে কাগজপত্র পরীক্ষার নামে ধান্ধা করে। বিশেষ করে, মালবাহী ভ্যান থাকলে তো কথাই নেই। মালবাহী গাড়ি পেলেই তা আটকাবেই। এটা যেন রাস্তায় তাদের প্রথম কাজ। আরও একটি বিষয় দেখা যায়, পুলিশ কনস্টেবলদের কাগজ পরীক্ষা করা। সরকার কী ট্রাফিক আইন পরিবর্তন করে পুলিশ কনস্টেবলদের কাগজ পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। আইনে আছে, একজন ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তা সন্দেহজনক মনে হলে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করতে পারবেন । কিন্তু এই আইন এখন পুলিশই মানছে না। ফলে রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার সাহেদ আল মাসুদ জানান, তেজগাঁও রাওয়া ক্লাবের সামনে একটি গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করছিল কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য। ওই গাড়িতে একজন বিদেশী নাগরিক ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা গাড়ির চালকের সঙ্গেই কথা বলছিলেন। কাগজ যাচাই বাছাই করতে একটু সময় লাগছিল। ওই বিদেশীর হয়তো কোন মিটিং ছিল। দেরি হওয়ার কারণে তিনি বিরক্ত হন। তার মনে হয়েছে, হয়তো পরীক্ষা করে দেখেছি, তার সঙ্গে কোন খারাপ আচরণ করা হয়েছে কিনা, তার কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে কিনা। এখন পর্যন্ত এ ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশী নাগরিক হলেই যে তার গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করা যাবে না এমন কোন কথা নেই। আর দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টের শরীরে ক্যামেরা ছিল। তার ক্যামেরায় সব কিছু রেকর্ড হয়েছে। শুধু ভিডিও নয় সবার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে এবং যদি সার্জেন্ট টাকা চেয়েই থাকেন তাহলে তার শাস্তি হবে।’ এ ঘটনায় ওই বিদেশী নাগরিকের অপরাধ হলে তার বিরুদ্ধেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সাহেদ আল মাসুদ। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। কার সমস্য ছিল, সেটি খুঁজে বের করা হচ্ছে।
×