ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩০ বছরে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত

ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে টোঙ্গা

প্রকাশিত: ১৭:৫০, ১৮ জানুয়ারি ২০২২

ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে টোঙ্গা

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে একটি আগ্নেয়গিরিতে বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে। এর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গাতে। প্রথমবারের মতো প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, পুরো টোঙ্গা কালো ধোঁয়া ও ছাইয়ে ঢেকে গেছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা। টোঙ্গার কেন্দ্রীয় হাপাই দ্বীপপুঞ্জের ছবি প্রকাশ করেছে নিউজিল্যান্ডের প্রতিরক্ষা বাহিনী। ছবিতে গাছ, বাড়ি ও মাঠ ধূসর ছাইয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখা যায়। হাঙ্গা টোঙ্গা-হাঙ্গা হা’পাই নামের আগ্নেয়গিরিটিতে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে শনিবার। এরপর পুরো প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবিতে টোঙ্গার রাজধানীর কালোফোউ জেলায় একই রকমের দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে আগ্নেয়গিরির ধ্বংসাবশেষে বাড়ি-ঘর ও গাছপালা ঢাকা পড়েছে। তাছাড়া কিছু ভবন ধসে পড়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সাহায্য কর্মীরা জেলার পানি দূষণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এরই মধ্যে টোঙ্গায় একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। পাশাপাশি অব্যাহত আছে উদ্ধার অভিযান। উদ্ধারকর্মীরা সতর্ক করে বলেন, দুর্যোগটিতে টোঙ্গা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনো অজানা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে বিশেষ করে কয়েকটি দ্বীপ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক আলেকজান্ডার ম্যাথিউ বলেন, সুনামির ফলে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা নিম্নাঞ্চলের দ্বীপগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন। যা ঘটেছে তার খুব কমই আমরা জানতে পারছি। বিভিন্ন দাতা দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টোঙ্গার বিমানবন্দর ছাইয়ে ঢাকা পড়ায় মানবিক সহায়তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের ফিজির নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, টোঙ্গা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশটিতে এক লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। দ্বীপপুঞ্জটির ১০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৫০টি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়। তাছাড়া টোঙ্গা ও ফিজিকে সংযুক্ত করা সাগরের নিচ দিয়ে যাওয়া একটি ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হয়েছে। যা মেরামতে বেশ কিছুদিন লেগে যেতে পারে। কেবলটি বিশ্বের সঙ্গে সংযোগের জন্য টোঙ্গার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান চিফ টেকনোলজি অফিসার ও সাউদার্ন ক্রস ক্যাবলসের অপারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিন ভেভারকা। টোঙ্গার রাজধানী থেকে আগ্নেয়গিরিটি ৬৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ঘটনাস্থল থেকে নিউজিল্যান্ডের দূরত্ব দুই হাজার তিনশ কিলোমিটার এবং ফিজির দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটার। সুনামির ঢেউ আঘাত হেনেছে হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উপকূলেও। প্রচণ্ড ঢেউয়ে পেরুতে মার গেছেন দুইজন। আগ্নেয়গিরিটি ভূমিকম্পের দিক থেকে অত্যন্ত সক্রিয় প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ারের ওপরেই অবস্থিত। সূত্র: ব্লুমবার্গ, সিএনএন
×