ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আয় কমেছে ৮১ ভাগের ॥ বিলস’র গবেষণা

লকডাউনে চাকরি হারানো ৭ শতাংশ শ্রমিক এখনও বেকার

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ১৪ জানুয়ারি ২০২২

লকডাউনে চাকরি হারানো ৭ শতাংশ শ্রমিক এখনও বেকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত বছর সরকার ঘোষিত লকডাউনে পরিবহন, হোটেল- রেস্তরাঁ এবং দোকান শ্রমিকদের আয় কমেছে ৮১ শতাংশ। ওই সময় ৮৭ শতাংশ শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন এবং কর্মক্ষেত্র থেকে খাদ্য, অর্থ সহযোগিতা পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ শ্রমিক। সরকার থেকে এসব শ্রমিকের ১২ শতাংশ বিভিন্ন সহযোগিতা পেয়েছেন। করোনা মহামারীতে বেসরকারী খাতে নিয়োজিত পরিবহন, হোটেল- রেস্তরাঁ এবং দোকান শ্রমিকদের কর্মসংস্থান, আয় ও সামাজিক নিরাপত্তার ওপর বেশ প্রভাব পড়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়। বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ধানম-িতে বিলস’র সেমিনার হলে সংস্থাটি এই গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে। বিলস’র উপ-পরিচালক (গবেষণা) মোঃ মনিরুল ইসলাম গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকার ছয়টি অঞ্চলে এ ধরনের ৪০০ শ্রমিকদের ওপর এই গবেষণা চালায় বিলস। বিলস’র গবেষণায় দেখা যায়, পরিবহন, হোটেল-রেস্তরাঁ এবং দোকান এই তিন খাতে ৯৬ শতাংশই পুরুষ শ্রমিক কাজ করেন। আর নারী শ্রমিকের অধিকাংশই দোকানে কাজ করেন। শ্রমিকদের ৭০ শতাংশ আবার বিবাহিত। শিশুশ্রমিক ৫ শতাংশ। এসব শ্রমিকের ১৩ শতাংশের নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। গবেষণায় বলা হয়, কোভিড-১৯ এর ফলে ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ শ্রমিকই লকডাউনের ফলে কোন না কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৮৭ শতাংশ শ্রমিকের কর্মসংস্থান কমে গেছে। কর্মদিবস কমেছে ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ। কর্মঘণ্টা কমেছে ৯২ শতাংশ শ্রমিকের। এছাড়া লকডাউন-পরবর্তী সময়ে তিন হাজার ৪৮৬ জন শ্রমিক তার কাজ ফিরে পেয়েছে। তবে এখনও ৭ শতাংশের বেশি শ্রমিক কাজ পায়নি বলে জানায় সংস্থাটি। সংস্থাটির গবেষক মনিরুল জানান, কোভিডের কারণে ৮৩ শতাংশ সেবাদানকারী ও ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসময় হয় তারা তাদের সেবা বা ব্যবসা বন্ধ করেছেন নয়তো ব্যবসার পরিসর কমিয়েছেন। ৯৫ শতাংশ বাস ও লেগুনা এবং ৮০ শতাংশ দোকান বন্ধ ছিল সে সময়। এই তিন ধরনের শ্রমিকদের ৫১ দশমিক ৫ শতাংশই ছিলেন চাকরি হারানোর চিন্তায়। গবেষণায় দেখা যায়, সামাজিক নিরাপত্তার জন্য এসব শ্রমিকের ৩৬ শতাংশ করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। তবে লকডাউন-পরবর্তী সময়ে মাস্ক ব্যবহার কমেছে ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ। গবেষণায় আরও দেখা যায়, পরিবহন, হোটেল- রেস্তরাঁ এবং দোকান শ্রমিকদের ৭৯ শতাংশই কোন শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত নন। এদের ৪৩ দশমিক ৩৪ শতাংশই মনে করেন স্বাভাবিক সময়ে শ্রমিক ইউনিয়নের কোন দরকার নেই। বিলস’র গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বিলস’র ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল হক আমিন, বিলস’র পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ ও নাজমা ইয়াসমীন।
×