জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পৌর ও ইউপি নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা, প্রার্থীদের আচার-আচরণ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘোরার টুকিটাকি নিয়ে পাঠানো রিপোর্ট। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো।
শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌর নির্বাচন। প্রার্থী ও কর্মী, সমর্থকরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। ভোটাররাও প্রার্থীদের নিয়ে করছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। চলছে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা। প্রার্থীদের মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আহসানুল হক তুহিন ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে জগ মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে নামা যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মামুন আজাদকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সবচেয়ে বেশি। তারাই ভোটের মাঠ বেশি সরগরম করে তুলেছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়েও ভোটারদের রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত গলাচিপা পৌরসভার এটি পঞ্চম নির্বাচন। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ নবেম্বর রবিবার। মোট ভোটার ১৬ হাজার ৩৪০ জন। মেয়র পদে আহসানুল হক তুহিন ও মামুন আজাদ ছাড়াও ইসলামী শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনের মাওলানা নাজমুল হুদা রিপন হাতপাখা মার্কা নিয়ে লড়াই করছেন। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন নিয়ে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দিনরাত চলছে প্রচার। উঠোন বৈঠক ছাড়াও প্রার্থীরা যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। সময় যত ঘনিয়ে আসছে বিশেষত মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ততটাই তীব্র হয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল হক তুহিনের বাবা আবদুল ওহাব খলিফা গলাচিপা পৌরসভায় তিনবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওহাব খলিফার প্রয়াণের পরে ছেলে আহসানুল হক তুহিন মেয়র নির্বাচিত হন। এটি তার দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা। বিদ্রোহী প্রার্থী মামুন আজাদও এর আগে একবার পরাজিত হয়ে এবার দ্বিতীয়বারের মতো ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন।
এ দু’জনের মধ্যেই মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ভোটারদের ধারণা।
মামুন আজাদের সমর্থনে এবার কর্মীরা রীতিমতো মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা ভোটারদের কাছে একটিবারের মতো সুযোগ চাইছেন। মামুন আজাদের নানাবিধ প্রতিশ্রুতিও ভোটারদের মাঝে সাড়া ফেলেছে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি মাঠে নেই। তাদের ভোট এবার ফ্যাক্টর হতে পারে।
রাঙ্গুনিয়ায় ঘাম ঝরাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা
নিজস্বে সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া ॥ আর ১দিন পরেই ২৮ নবেম্বর রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ৮ ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক ৮ চেয়ারম্যান।
বাকি ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ১ জন করে প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। সকল প্রার্থীর প্রতীক আনারস। বেতাগী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নুর কুতুবুল আলমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীক শফিউল আলম শফি। আনারস প্রতীক নৌকার সাথে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে এলাকায় ভোটাররা জানান। ইসলামপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক সিরাজউদ্দিন চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আনারস প্রতীক সিরাজদৌল্লা দুলাল। এখানে দুই প্রার্থী সমানতালে লড়ে যাচ্ছেন। দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ ছৈয়দ তালুকদার নৌকা প্রতীক নিয়ে ঘাম ঝরানো প্রচার চালাচ্ছেন। সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীক প্রার্থী মীর ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দারুণভাবে লড়ে যাচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান আনারস প্রতীক রফিকুল ইসলাম। হোছনাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দানু মিয়া নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে মাঠে রয়েছেন বিএনপি নেতা মীর্জা জসিম উদ্দিন।
বরিশালের ভোটগ্রহণ ইভিএমে
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন নির্বাচনে আগামী ২৮ নবেম্বর জেলার উজিরপুর এবং মুলাদী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে একটি ইউনিয়নে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উজিরপুরের বামরাইল এবং মুলাদীর বাটামারা ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ সমর্থিক দুই প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বাকি তিনটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১ প্রার্থী। যার মধ্যে বাবুগঞ্জের রহমতপুরে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, উজিরপুরের গুঠিয়ায় চারজন এবং হারতায় দুইজন। তৃতীয়ধাপে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বরিশালের ইউনিয়ন পাঁচটি হলোÑ উজিরপুরের হারতা, বামরাইল, গুঠিয়া; বাবুগঞ্জের রহমতপুর ও মুলাদীর বাটামারার মধ্যে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। বাকি ইউনিয়নগুলোতে ভোটগ্রহণ করা হবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নূরুল আলম।
ঈশ^রদীতে ইউপি নির্বাচন জমজমাট
আগামী ২৮ নবেম্বর ঈশ^রদীর সাত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মোট ৮১ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মাত্র ইউনিয়ন পরিষদ সাহাপুরের ১৩ টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে তিন ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ২৮ নবেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে ঈশ^রদীর সাত ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি নির্বার্চন জমে উঠেছে। এ অবস্থায় বাকি চার ইউনিয়নেই নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী, বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাত ইউনিয়নের মেম্বার প্রার্থীরা নানা কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী মাঠে উত্তেজনা রয়েছে। তারা রাতদিন গণসংযোগসহ নানাভাবে ভোটারদের পক্ষে নেয়ার কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিদিনই প্রার্থীদের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করায় নির্বাচনী মাঠ মূলত গরম হচ্ছে। এর সাথে রয়েছে সাত ইউনিয়নের মহিলা-পুরুষ মিলে ২৫৪ ইউপি সদস্য প্রার্থীর প্রচার।
এসব প্রার্থীই গরম নির্বাচনী মাঠকে আরও বেশি গরম করে চলেছেন প্রচারের মাধ্যমে। সকল ইউনিয়নব্যাপী পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, স্টিকারে প্রত্যেক ইউনিয়ন এলাকাকে মনে হচ্ছে গহনার সাজে সজ্জিত হয়েছে প্রত্যেক ইউনিয়নের নির্বাচনী এলাকা। সলিমপুর,সাহাপুর ,সাঁড়া ও লক্ষিকু-া ইউনিয়নে উভয়পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। দু’স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। আবার একাধিক ইউনিয়নে নানা প্রকার ষড়যন্ত্রও করা হচ্ছে নিজ নিজ প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য বলে অভিযোগ উঠেছে একাধিক প্রার্থীর পক্ষ থেকে। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশাসনকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
নীলফামারীতে প্রার্থীদের প্রচার শেষ পর্যায়ে
প্রচার শেষ পর্যায়ে। ২৮ নবেম্বর ভোট গ্রহণের দিন নীলফামারী পৌর নির্বাচনের। ভোট ঘিরে উত্তেজনার বাড়ছে। এই উত্তেজনা অবশ্য কে হচ্ছেন আগামী দিনের নতুন পৌরমেয়র তার চুলচেরা বিশ্লেষণ ঘিরেই। এই বিশ্লেষণ চলছে পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকানে। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর, সংরক্ষিত প্রার্থীরাও প্রচার-প্রচারণার শেষ পর্যায়ে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। এবারই প্রথমবার নীলফামারী পৌরবাসী ইভিএমের মাধ্যমে তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬১ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ২২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৬টি। ভোটার সংখ্যা ৩৫ হাজার ৯৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৪১৬ জন এবং নারী ভোটার ১৮ হাজার ৫৬৫ জন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ইভিএমে ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি স¤পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করছি, উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে পারব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন
১১ নবেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের গোয়ালনগর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ফল পরিবর্তনের প্রতিবাদে ও পুনঃ ভোট গণনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ইউনিয়নে পরাজিত আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও গোয়ালনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কিরন মিয়া।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আলম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা কাউসার মিয়া, খোকন মিয়া, আরশ আলী প্রমুখ।