ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে গেমিং নীতিমালা জরুরী

প্রকাশিত: ২০:০৫, ১৩ নভেম্বর ২০২১

বাংলাদেশে গেমিং নীতিমালা জরুরী

বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও মোবাইল গেমসের বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলারের এই মোবাইল গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন একটিভ প্লেয়ার আছে যারা নিয়মিত নানা ধরনের মোবাইল গেমস্ খেলছে। বৈশ্বিক জনসংখ্যার বিচারে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ নম্বর এবং এই দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠী কিশোর ও তরুণ হওয়ায় বাংলাদেশ গেমের বিশ্ববাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট। গেমিংয়ের এই বিলিয়ন ডলার বাজার ধরতে দেশে শতাধিক গেমিং কোম্পানি গড়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান; আসছে বিদেশি বিনিয়োগ। ২০১৯ সালে ভারতের প্রথম সারির মোবাইল গেমস্ নির্মাতা কোম্পানি মুনফ্রগ ল্যাবস্ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে এবং এখানে তাদের অঙ্গসংগঠন উল্কা গেমস্ লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করে। সম্প্রতি ভারতের মুনফ্রগ ল্যাবস্ এবং তাদের বাংলাদেশ অঙ্গসংস্থা উল্কা গেমস্ লিমিটেড -এর শতভাগ শেয়ার বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে অধিগ্রহণ করেছে সুইডেনভিত্তিক মোবাইল গেমস্ নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান স্টিলফ্রন্ট গ্রুপ। এর মাধ্যমে উল্কা গেমস্ লিমিটেড বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের মোবাইল গেমিং কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলো। গেমিং নীতিমালা জরুরি রাইজ আপ ল্যাবস্ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এরশাদুল হক বলেন, গেমিং স্টুডিওগুলো তাদের গেইম থেকে বিজ্ঞাপন, সাবস্ক্রিপশন ও ইন-অ্যাপ পারচেজ এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকে। খেলার সময় বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান উপার্জন হয়। তাছাড়া সাধারনত সকল মোবাইল গেইমে ভার্চুয়াল স্টোর থাকে। প্লেয়াররা তাদের গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে আরও ভালো করার জন্য এই স্টোর থেকে ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট অথবা সাবস্ক্রিপশন ক্রয় করেন। এখান থেকেই গেইম সবচেয়ে বেশি উপার্জন করে থাকে। যে গেইম যত বেশি জনপ্রিয়, তার ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট অথবা সাবস্ক্রিপশন তত বেশি ক্রয় হয়। এরশাদুল হক বলেন, গেম ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মসংস্থান ও আয়ের দারুন সুযোগ রয়েছে। এখন ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিতে নীতিমালা খুব জরুরি। আশা করি সরকার এ দিকটা দেখবে। উল্কা গেমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জামিলুর রশিদ বলেন, আমাদের দেশে তৈরি গেইম থেকেও এখন অনলাইন এবং অফলাইন ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে আয় হচ্ছে। মূলত গেইমের অ্যাড, সাবস্ক্রিপশন ও ইন-অ্যাপ পারচেজ থেকে এই আয় হয়ে থাকে। দেশীয় তালিকাভুক্ত কোম্পানীগুলো এই আয় থেকে সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রদান করে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে উল্কা গেমস্ লিমিটেড বাংলাদেশ সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ মোট ৪.৯৮ কোটি টাকা প্রদান করেছে; ২০২০-২১ অর্থবছরে তা ১০ কোটি ছোঁয়ার আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন তিনি। জামিলুর রশিদ বলেন, সঠিক পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও অনেক গেমিং স্টুডিও এ খাতে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন ও সরকারের রাজস্ব আয়ে অবদান রাখবে। এছাড়াও যেসকল বিদেশী গেমস্ বাংলাদেশের বাইরে থেকে ব্যবসা করছে, তাদের এই দেশে লোকাল অফিস ও ডেভেলপমেন্ট সেন্টার করার জন্য তাগিদ দেয়া যেতে পারে। তাতে করে সরকার তার ন্যায্য ভ্যাট-ট্যাক্স পাবে এবং সেই সাথে সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান।
×