ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে মরিয়া সরকার ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ২০ অক্টোবর ২০২১

রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে মরিয়া সরকার ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে ঘটনা ঘটেছে তা নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ফখরুল বলেন, দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এখন ভয়-ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কুমিল্লার ঘটনার রেশ ধরে চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, রংপুর, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ততা ও তাদের চোখের সামনেই অরাজক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ফখরুল অভিযোগ করেন সম্প্রতি কুমিল্লার ঘটনার পর হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার উদাসীন ছিল। সমাজে নৈরাজ্য তৈরি করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার। তিনি বলেন, উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে দেশব্যাপী নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িত করতে নীলনক্সা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের পাইকারি হারে গ্রেফতার করছে পুলিশ। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নোয়াখালীতে সংঘটিত ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, চৌমুহনী সরকারী কলেজের সাবেক জিএস নিজামুদ্দিন রুবেল, জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাতেন সুজন, চৌমুহনী পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাশেদ সুমন, হাতিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরেফিন আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আকরাম হোসেন, মোহাম্মদ আলী, সম্পদ হাওলাদার রাজু, যুবদল নেতা কামরুজ্জামান ও রফিকসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বেলাল উদ্দিন সুমন, হাতিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম আমিরসহ ৬০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় বিএনপি নেতা মজিবুর রহমানসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের নামে মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন ফখরুল। মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমানো যাবে না- মির্জা আব্বাস ॥ মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা আব্বাস বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এবং গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে জনজীবন অতিষ্ঠ। এ পরিস্থিতিতে জনদৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার অঘটনকে কেন্দ্র করে বিএনপির তিনশ’ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মির্জা আব্বাস বলেন, আমার এলাকায় (শাহজাহানপুর) ২৫ ভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। কেউ বলতে পারবে না এ এলাকায় কোনদিন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সময় আমি তাদের পাহারা দিয়েছি খালেদা জিয়ার নির্দেশে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ কষ্ট পাবে ॥ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ কষ্ট পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে আমাদের অর্জনগুলো হারিয়ে যাবে। আমরা আরও বেশি নিচের দিকে নামতে থাকব। তাই আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সকল সচেতন মানুষ যারা আছি তারা সবাই মিলে এই সরকারকে সরাতে হবে। তিনি বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, সাদা-কালো, বাম-ডান সকলকে এক হয়ে এ সরকারকে সরাতে হবে। এরপর দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এবার পূজামণ্ডপে মানুষজনের উপস্থিতি কম ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এবার গয়েশ্বর দাদার বাড়িতে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম। এর আগের বছর যখন গেছি তখন দেখেছি কি উৎসব কি আনন্দ। এবার গিয়ে দেখলাম দাদার বাড়িতে ওইভাবে লোক নেই, কারণ মানুষ ভয় পেয়ে গেছে। এবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছি সেখানেও আমি দেখেছি- অনেক কম মানুষ, বনানীতে পূজামণ্ডপে গেছি সেখানেও অনেক কম মানুষ। কেন? আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, পেশাজীবী নেতা গাজী আব্দুল হক, প্রকৌশলী মিয়া মুহাম্মদ কাইয়ুম, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ডাঃ পারভেজ রেজা কাঁকন, অধ্যাপক আবদুল করীম প্রমুখ।
×