ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা হতাশ

টাকা উদ্ধারের উদ্যোগ নেই, সোহেলকেও ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

টাকা উদ্ধারের উদ্যোগ নেই, সোহেলকেও ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয়া ই-অরেঞ্জের শত শত কোটি টাকা উদ্ধারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আবার প্রতারণার হোতা বনানী থানার ওসি সোহেল রানাকেও দেশে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় গ্রাহকদের প্রশ্ন- টাকাও পাব না। শাস্তিও দেখব না। সবই থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ই-অরেঞ্জের টাকা আত্মসাতকারীদের কাছ থেকে গ্রাহকের টাকা উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা বা পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে রিমান্ডে নিয়ে জামাই আদরে রেখে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তারা এখন কারাগারে বেশ আরাম আয়েশেই আছে। তাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করার কোন লক্ষণই নেই। অথচ রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বলা হয়েছিল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। এখন দেখা যাচ্ছে কিছুই পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ভারতে আটক সোহেল রানাকেও দেশে আনা যাচ্ছেনা। ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে এখনও সাড়া দেয়নি ভারতের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। পর পর দুদফা চিঠি দেয়ার পরও সাড়া মিলেনি। সেজন্য আবারও চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবি শাখা থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের এনসিবিকে চিঠি পাঠানো হয়। ৭ সেপ্টেম্বর আরেক দফায় অতিরিক্ত তথ্য সংযুক্ত করে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাড়া দেয়নি দিল্লীর এনসিবি। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক বলেন, একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে ঢাকা থেকে। কিন্তু এখনও সাড়া পাওয়া যায়নি। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই সাড়া মিলবে। তারাও এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন। সোহেল রানা ভারতে গ্রেফতার হওয়ায় সে দেশের আইনী বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যে ধরনের উদ্যোগ নেয়া দরকার, বাংলাদেশ পুলিশ টু ভারতের পুলিশ, সেটি করছি। তবে সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে। এ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সোহেলকে ফেরত আনার বিষয়ে অবশ্যই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত ও নির্দেশনার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আমরা স্বরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনও কোন সাড়া পাইনি। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামত ও নির্দেশনা দিলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্দায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়েন সোহেল রানা। পরদিন ভারতীয় গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিএসএফের হাতে আটক সোহেল রানা গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী বহুল আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। বনানী থানার এ পুলিশ পরিদর্শকের বোন ও ভগ্নিপতি ই-অরেঞ্জ পরিচালনা করতেন। এর আগে গত ১৭ আগস্ট অগ্রিম অর্থ পরিশোধের পরও মাসের পর মাস পণ্য না পাওয়ায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী গ্রাহক মোঃ তাহেরুল ইসলাম। ওই সময় তার সঙ্গে প্রতারণার শিকার আরও ৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন। গ্রাহকের এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
×