ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সমাজ ভাবনা - বিষয় ॥ স্কুল কলেজে স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশিত: ২১:১৬, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

সমাজ ভাবনা - বিষয় ॥ স্কুল কলেজে স্বাস্থ্যবিধি

বাসব রায় ॥ বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর ছোবল থেকে বাংলাদেশও রেহাই পায়নি। বিভিন্ন সময়ে সরকার ঘোষিত লকডাউন এবং করোনার অধিকতর সংক্রমণে দেশবাসী দিশেহারা; পাশাপাশি দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশসহ নিয়মিত লেখাপড়া দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। দেশে বর্তমানে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর পরিমাণ কম হওয়ায় সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। চলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে দেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ বিষয়ক বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সেনিটাইজিং ব্যবস্থা গ্রহণসহ বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। সপ্তাহে ক্লাসের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে একটি ক্লাসরুটিনও দেয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে দীর্ঘদিনের একটা সঙ্কট কিছুটা কেটে গেলেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই গেল। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এখনও ভ্যাকসিনের বাইরেই আছে। বিদ্যালয়গুলো খোলার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়বে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এ সমস্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে কঠিন একটি বিষয়। এক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ না হলে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে আবারও পূর্বের পরিস্থিতিতে পড়তে পারে পাঠপ্রদান ও গ্রহণ প্রক্রিয়াটি। পাঠদান কর্মসূচী যেন স্বাভাবিক গতি নিয়ে চলতে পারে সেজন্যে শিক্ষকদের তদারকি ও গৃহীত পদক্ষেপগুলোর যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন জরুরী। পাঠদান প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে শ্রেণীভিত্তিক নিরাপদ দূরত্বের বিষয়টি বাস্তবায়নসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বাধ্যতামূলক হতে হবে। কোন অবস্থাতেই শিক্ষার্থীরা গা ঘেঁষে যেন না বসতে পারে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানে আইসোলেশন একটি কক্ষ থাকা বাঞ্ছনীয় এবং জ্বর মাপার মেশিন দিয়ে প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলো অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে দৃঢ়ভাবে অভ্যস্ত হবেন। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালীন সময়েই যে শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা বিধিনিষেধ মেনে চলবেন তা নয় বরং পারিবারিক ও সামাজিক সবক্ষেত্রেই এসব নিয়মকানুন সতর্কতার সঙ্গে মেনে চলতে সচেষ্ট থাকাটা উভয়ের জন্যই জরুরী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে বলেই যে করোনার সংক্রমণ কমে যাবে বা করোনা ঝুঁকি থাকবে না এমনটি নয়। এখনও পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন গ্রহণে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। নিত্যকার রুজিরোজগারের কারণে সঠিক নিয়ম বা বিধি মেনে চলা আমাদের জন্যে খুবই কঠিন। তবু জীবন বাঁচাতে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে অতি-সতর্কতার বিকল্প কিছু নেই। ঐকবদ্ধ যে কোন প্রয়াস বাস্তবায়নে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ প্রক্রিয়ায় মেনে চলার বিকল্প নেই। নিয়মিত কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের মানসিক ভীতি কাটিয়ে তুলতে সচেষ্ট হবেন এমনটিই আশা করছি -।আমরা আশাবাদী যে, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে মাঠপর্যায়ে বিধিনিষেধের কর্মশালা ও সার্বিক সচেতনা বৃদ্ধিকরণের মাধ্যমে একদিন বাংলাদেশ করোনামুক্ত হবেই হবে। দিনাজপুর থেকে
×