ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৮৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ১৩ এপ্রিল ২০২১

করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৮৩ জনের মৃত্যু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ফের নতুন রেকর্ড হয়েছে। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ৮৩ ব্যক্তি। এর আগে রবিবার, ১১ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ ৭৮ ব্যক্তি মারা যান। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ফের করোনা সংক্রমণ পেরিয়ে গেছে সাত হাজার। আগের দুই দিন টানা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৫ হাজারের ঘরে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ২০১। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সই করা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তি বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে আগের মোট ২৫৫টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়, যা আগের দিনের চেয়ে সাতটি বেশি। এসব আরটি-পিসিআর, জিন এক্সপার্ট ও এ্যান্টিজেন ল্যাবে মোট ৩৬ হাজার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর আগে একদিনে এত বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি দেশে। একই সময়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৬৮টি। নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এটি নতুন রেকর্ড। এর আগে, গত ৬ এপ্রিল ৩৪ হাজার ৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৫০ লাখ ৩৭ হাজার ৮৩৩। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে ৭ হাজার ২০১টি নমুনায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের তালিকায় রয়েছে চতুর্থ স্থানে। এর আগে গত ৭ এপ্রিল ৭ হাজার ৬২৬টি, ৯ এপ্রিল ৭ হাজার ৪৬২টি ও ৬ এপ্রিল ৭ হাজার ২১৩টি নমুনায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। গত ৪ ও ৫ এপ্রিলও সংক্রমণ ছিল ৭ হাজারের বেশি। এ নিয়ে এপ্রিল মাসের ১১ দিনের ছয় দিনই সংক্রমণ পেরিয়ে গেল সাত হাজার। গত ২৪ ঘণ্টার করোনা সংক্রমণসহ এ নিয়ে দেশে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৭ ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পরিমাণও আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৫২৩ ব্যক্তি, যা আগের দিন ছিল ৪ হাজার ২১২ ব্যক্তি। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হলেন ৫ লাখ ৮১ হাজার ১১৩ ব্যক্তি। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পরিমাণ বাড়তে থাকায় শনাক্তের বিপরীতে সুস্থতার হার কমছে। দেশে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন রেকর্ড ৮৩ জন। এই প্রথম দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে একদিনে মৃত্যু পেরোল আশির ঘর। এপ্রিলের ১২ দিনের হিসাবে দেখা যায়, এ নিয়ে চার দিনই করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭০ জনের বেশি। এ মাসে একদিনও করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু ৫০-এর নিচে নামেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৮৩ ব্যক্তি মারা গেছেন তাদের ৭৪ ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ও পাঁচ জন বাড়িতে মারা গেছেন। বাকি চার জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ নিয়ে দেশে মোট ৯ হাজার ৮২২ জনের মৃত্যু হলো। মৃত্যুর হার আগের মতোই আছে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত এই ৮৩ জনের মধ্যে ৫৪ পুরুষ, ২৯ নারী। এই ৮৩ জনের মধ্যে ৫২ ষাটোর্ধ্ব, ১৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর। বাকি চার জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর। মৃত এই ৮৩ জনের ৫৪ জনই ঢাকা বিভাগের, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৭, চার জন মারা গেছেন খুলনা বিভাগের। এছাড়া তিন জন রাজশাহী বিভাগের, দুই জন করে বরিশাল ও সিলেট এবং একজন মারা গেছেন রংপুর বিভাগের। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র বলছে, সোমবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন মোট ৭০ লাখ ৫৬ হাজার ৩৭২ ব্যক্তি। সে হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ২০ হাজার ৭৫১ ব্যক্তি। আর গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছেন ২৩ হাজার ৬৫৭ ব্যক্তি। এ নিয়ে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৫৬ লাখ ২৭ হাজার ১০৭ ব্যক্তি। আর গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯১ ব্যক্তি। এ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছেন মোট ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৭১৭ ব্যক্তি।
×