ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জন কেরি আজ আসছেন

প্রকাশিত: ২২:১৫, ৯ এপ্রিল ২০২১

জন কেরি আজ আসছেন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক দূত জন কেরি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসছেন। আগামী ২৩ ও ২৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে ডেকেছেন। ওই সম্মেলনে দাওয়াত দিতে তিনি সশরীরে ঢাকায় আসছেন। সফরকালে তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে লিডার সামিট অন ক্লাইমেটে অংশগ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাবেন। এছাড়াও তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও অন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু সংক্রান্ত বিশেষ দূত জন কেরির এই ঢাকা সফর দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে আশা করছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম প্রধান ইস্যু হচ্ছে, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা করে করোনাকালে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন নতুন খাত উদ্ভাবন। আগামী দিনের এই জলবায়ু লড়াইয়ে জয়ী হতে বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি পশ্চিমা এই দেশটির উদ্যোগে চলমান ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়নেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন। এছাড়া গত কয়েক বছর ধরে প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। আগামী ২৩ ও ২৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ‘ক্লাইমেট লিডারস সামিট’ নামে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। মূলত এসব কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জলবায়ু বিষয়ক একটি সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতে সশরীরে আজ ঝটিকা সফরে ঢাকা আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। জলবায়ুজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় এই বছর খুব ভাল অগ্রগতি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, যা দেশটির জন্য জরুরী। প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জন কেরি এই বিষয়ে একাধিক দেশ ভ্রমণে বের হওয়ার কারণ হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র যে অগ্রগতি করতে চায় তা সমন্বয়ের জন্য শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে। যাতে সকলে মিলে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা যায়। এই সফরে জন কেরি এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জনস্বাস্থ্য আইন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তাও পর্যবেক্ষণ করবেন। তবে এই সফরে তারা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট গত ৩১ মার্চ জানিয়েছে, আসন্ন ক্লাইমেট লিডারস সামিট এবং কপ২৬ (বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন) সম্মেলনের খুব ভাল অগ্রগতি নিশ্চিত করতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি ১ থেকে ৯ এপ্রিল আবুধাবি, নয়াদিল্লী ও ঢাকা সফর করবেন। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ।’ একইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের অনেক অর্জনও আছে। জন কেরির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর (এ কে আব্দুল মোমেনের) দুই দফা কথা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত উদ্যোগে তারা বাংলাদেশকে পাশে চায়। বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতা নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় একজন নেতা ঢাকায় আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তার সফর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে আমরা আশা করি।’ দ্বিপক্ষীয় বিষয় হয়তো এবারের আলোচনায় থাকবে না জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘জলবায়ু সংলাপে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। একইসঙ্গে অন্য বিষয়গুলো চলে আসবে। বাংলাদেশ যখন তাদের বিবেচনার মধ্যে গুরুত্ব পাবে তখন অন্য বিষয়গুলোও সামনে আসবে। যেমন রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হতে পারে।’ রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের দেশের একটি অঞ্চলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়টি সামনে আসতে পারে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কী চিন্তা করছে, আমরা কিভাবে মোকাবেলা করছি এটি সবাই জানতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবে বড় পরিবর্তন দেখছি। দেশটি প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। এ ধরনের আলোচনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু এখন আমরা এর উল্টোটা দেখতে পাচ্ছি।’
×