ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাইগাররা নিউজিল্যান্ড যাচ্ছে আজ

ভাল খেলার প্রত্যয় তাসকিনের

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ভাল খেলার প্রত্যয় তাসকিনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ড যাচ্ছে আজ। বিকেলে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করবে টাইগাররা। এ সফরে আছেন বাংলাদেশ পেসার তাসকিন আহমেদও। আজ দেশ ছাড়ার আগে সোমবার নিউজিল্যান্ডে ভাল খেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তাসকিন। নিউজিল্যান্ডের গিয়ে তিন ওয়ানডে ও তিন টি২০ ম্যাচের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ডানেডিনে সফরের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে আগামী ২০ মার্চ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ২৩ মার্চ দ্বিতীয় ওয়ানডে ক্রাইস্টচার্চে। ওয়েলিংটনে শেষ ওয়ানডে হবে ২৬ মার্চ। এরপর হ্যামিল্টনে ২৮ মার্চ হবে প্রথম টি২০ ম্যাচ। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় টি২০ হবে নেপিয়ারে। অকল্যান্ডে শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১ এপ্রিল। ২ এপ্রিল দেশে ফিরে আসবেন ক্রিকেটাররা। প্রায় দেড়মাসের সফরে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। ২০ সদস্যের দল যাচ্ছে। কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তাসহ মোট ৩৫ সদস্যের দল যাচ্ছে। সফরের মাঝপথে আর কেউ যেতেও পারবেন না। আবার কেউ আসতেও পারবেন না। আর তাই এতবড় বহর একবারেই যাচ্ছে। দুই দলের জন্যই মোট ২০ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত দলে তামিম ইকবাল খান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন কুমার দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, তাসকিন আহমেদ, আল-আমিন হোসেন, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান ও নাসুম আহমেদ আছেন। দলে সাতজন পেসার রাখা হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন যেহেতু বরাবরই পেসবান্ধব। পেসাররাই ম্যাচে মূল পার্থক্য গড়ে দেন। সে বিবেচনাতেই বিশেষজ্ঞ পেসার হিসেবে তাসকিন আহমেদ, আল-আমিন হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও রুবেল হোসেনের সঙ্গে রয়েছেন পার্টটাইম পেসার সৌম্য সরকারও। এ পেসারদের মধ্য থেকেই ওয়ানডে ও টি২০ একাদশ গঠন করা হবে। এ পেসারদের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সবচেয়ে বেশি খেলেছেন মুস্তাফিজ ও তাসকিন। দুইজনই ৫টি করে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। মুস্তাফিজ ৮টি ও তাসকিন ৭টি উইকেট নিয়েছেন। এ সাত পেসারের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সবচেয়ে বেশি ৩টি টি২০ ম্যাচ খেলে ৭ উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন। মুস্তাফিজ দুইটি টি২০ ম্যাচ খেলে ১টি উইকেট নিতে পেরেছেন। এবার নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজ আগে হবে। তাসকিন তাই কোন সমস্যায় না পড়লে একাদশে যে থাকবেন তা নিশ্চিতই বলা চলে। তিনি নিউজিল্যান্ডে চ্যালেঞ্জ জয় করে ভাল কিছু করতে প্রস্তুতও। তাসকিন জানিয়েছেন, ‘আসলে প্রত্যেকটা সিরিজই আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং, ভাল করার একটা তাড়না থাকে। কিন্তু সবকিছুর থেকে আসল জিনিসটা হলো আমার মূল যে ফোকাসটা, আমার লক্ষ্যটা যেটা সেটা পূরণ করতে চাই। একজন পেসার হিসেবে পেসের সঙ্গে, যথাযথভাবে এবং সবকিছু মেনে চলে করে যা ভাল হয় সেটাই করতে চাই।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আসলে নিউজিল্যান্ডে এর আগেও দুইবার খেলেছি আমি । বিশ্বকাপ খেলেছি এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলেছি। সবসময় অনেক চ্যালেঞ্জিং হয় বাইরে থেকে যারাই খেলতে যায় ওদের কন্ডিশনে ওদের সঙ্গে। ওইখানে ভাল করতে হলে আসলে সহজে কোন কিছু পাওয়া সম্ভব না বোলার, ব্যাটসম্যান দুজনের জন্যই। কারণ ওদের কন্ডিশনে সবসময় ওরাই ফেবারিট থাকে এবং প্রতিপক্ষ দলের জন্য অনেক কঠিন হয়। তবে আমাদের শতভাগ তো দিতেই হবে সঙ্গে বিশেষ কিছুও করতে হবে। সবসময় মন্থর এবং লো বাউন্সে খেলার অভ্যাস থাকে আমাদের। ওখানে দেখা যাবে অনেক বাউন্স এবং বল দ্রুতগতিতে যেতে পারে, আমাদের জন্য একটু কঠিন হয়। তবে আমি আশাবাদী কারণ আমরা অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো খেলেছিলাম তখন কিন্তু অনেক ভাল উইকেট ছিল ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের জন্য। সে রকম যদি স্পোর্টিং উইকেট হয় আমাদের ভাল করার সুযোগ থাকবে।’ কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খেলাই আসল চ্যালেঞ্জ থাকে। তাসকিনও মানছেন তা, ‘ওটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায় অনেক সময় যে মানিয়ে নেয়া। প্রচণ্ড বাতাস থাকে। যে বাতাসটা নিউজিল্যান্ডে আসলে ফিল্ডিং করার সময় বা বোলিংয়ে রানআপের সময় বা ব্যাটিংয়ে ফোকাস করতে সমস্যা করে। কিন্তু এগুলো আসলে অজুহাত হতে পারে না। এগুলো নিয়েই আমরা চেষ্টা করব মানিয়ে নিয়ে ভাল করার।’ নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কঠোর কোয়ারেন্টাইনের মধ্যে থাকতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের। ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের প্রথম সাতদিন রুমের বাইরে বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সতীর্থদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ। এমনকি সবাইকে পরিষ্কার করতে হবে যার যার রুমের টয়লেটও। কঠিন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে ক্রিকেটারদের। এর আগে কখনই এমন অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়তে হয়নি। সাম্প্রতিক সময় নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়াকেও কোয়ারেন্টাইন নিয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হয়নি। সাতদিন পর থেকে মিলবে অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা। যদিও স্থানীয় কোন সাপোর্ট স্টাফ থাকবে না সে সময়। তবে ১৪ দিন পর থেকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা যায় নিউজিল্যান্ডে। থাকে না কোন রকমের বাধা। এ কোয়ারেন্টাইন নিয়ে তাসকিন জানান, ‘এটা মানসিকভাবে একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। এ রকম পরিস্থিতিতে তো আগে কখনও থাকা হয়নি। যদিও আমরা শেষ কয়েকটি সিরিজ বা টুর্নামেন্ট জৈব সুরক্ষা বলয়ের অভ্যন্তরে থেকে খেলেছি, এটা একটু আলাদা হবে... ছয়দিন একই রুমে বন্দী থেকে নিজে সবকিছু করা। তারপর কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ হলে আস্তে আস্তে অনুশীলন আরম্ভ হবে। তো মানসিকভাবে শক্ত থাকাটা জরুরী। একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা হবে।’
×