ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৩শ’ মেগাওয়াট উৎপাদন সম্ভব

রামপালের ফেলে রাখা জমিতে হবে সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

রামপালের ফেলে রাখা জমিতে হবে সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র

রশিদ মামুন ॥ রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের খোলা জমিতে সৌরবিদ্যুত উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল) লিমিটেডকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোম্পানিটি তাদের বোর্ডে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। পিডিবি সূত্র বলছে ফেলে রাখা জমির পুরোটা ব্যবহার করলে অন্তত ৩০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ সম্ভব। শুরুতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে দুটির পরিবর্তে একটি এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর ফলে অধিগ্রহণ করা জমির একটি বড় অংশ খালি পড়ে থাকছে। এই যায়গায় সৌরবিদ্যুত উৎপাদনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছিল। তবে এতদিন সুনির্দিষ্ট করে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে সৌরবিদ্যুত প্রকল্প নির্মাণের কাজ আগায়নি। পিডিবি রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য ১ হাজার ৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে এখন ৪৩০ একর জমি উন্নয়ন করে প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ চলছে। এই জমির মধ্যে ৩৫৫ একর জমিতে প্রথম ইউনিটের বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া এখানে টাউনশিপ, বনায়ন, স্থানীয় কলোনি এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের জায়গা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম ইউনিটের জন্য ৯১৫ একর জমি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে ৬০০ থেকে ৭০০ একরের বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। ফলে এখানে অব্যবহৃত এক হাজার ১০০ একর জমি থেকে যাচ্ছে। প্রতি মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুত উৎপাদনের জন্য সাড়ে তিন একর জমি প্রয়োজন হয়। সেই হিসেবে এখানে ৩০০ মেগাওয়াটের বেশি সৌরবিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব। শনিবার রাতে ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুত খাতের স্টিয়ারিং কমিটির আলোচনায় বিষয়টি আবার উত্থাপন করে বংলাদেশ। এর প্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে এ বিষয়ে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়। কতটুকু জমি ফাঁকা থাকছে সেখানে কি পরিমাণ সৌরবিদ্যুত উৎপাদন করা সম্ভব এসব বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট আগামী বছর শেষে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন জনকণ্ঠকে বলেন, রামপালের অতিরিক্ত জমিতে সৌরবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও এত দিন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এবার ভারত-বাংলাদেশ বৈঠকে বিআইএফপিসিএলকে এ বিষয়ে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোম্পানিটি তাদের বোর্ডে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ প্রকল্পগুলোর বিষয়ে এককভাবে কোন দেশ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। করোনা শুরুর আগে গত বছরের শুরুতে ভারত-বাংলাদেশ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হলেও গত এক বছরের কাছাকাছি সময় আর কোন বৈঠক হয়নি। এতে করে দুই দেশের সরকারী পর্যায়ে যেসব আলোচনা ছিল তা এত দিন ঝুলে ছিল। এখন এসব ক্ষেত্রে আবার সহায়তা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে উভয় দেশ। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইস্যু।
×