ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সোনার বাংলা গড়তে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ

সমৃদ্ধির পথেই এগোতে হবে

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ১৯ জানুয়ারি ২০২১

সমৃদ্ধির পথেই এগোতে হবে

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে দেশ থেকে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীদের নির্মূলের লক্ষ্যে দল-মতের পার্থক্য ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথেই আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। তাই আসুন, দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে গিয়ে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার নতুন বছরের একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বছরের একাদশ অধিবেশনের (শীতকালীন অধিবেশন) প্রথম দিনে ভাষণ দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্র চর্চা ও উন্নয়ন কর্মসূচীতে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। এ বছর মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে আমরা ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ পালন করব। তবে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়া। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি কল্যাণমূলক, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সক্ষম হবো। গণতন্ত্রায়ন, সুশাসন ও নিরবচ্ছিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সকল রাজনৈতিক দল, শ্রেণী ও পেশা নির্বিশেষে ঐকমত্য গড়ে তোলার সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় সংসদ দেশের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রায় সরকারী দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি সরকারী দল ও বিরোধী দল নির্বিশেষে মহান জাতীয় সংসদে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অভিন্ন সত্তা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক কিংবদন্তি। আপোষহীন নেতৃত্ব দৃঢ় মনোবল আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রধান নেতা। প্রতিটি বাঙালীর কাছে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন মুক্তির মূলমন্ত্র। তিনি বলেন, জীবিত বঙ্গবন্ধুর মতোই অন্তরালের বঙ্গবন্ধু শক্তিশালী। মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচীসহ কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব না হওয়ায় সরকার মুজিববর্ষের মেয়াদকাল ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করেছে। মুজিবর্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বিকাল সাড়ে ৪টায় স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের বেগম রওশন এরশাদসহ সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশন শুরুর পর শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রতিবার বছরের শুরু অধিবেশনের প্রথম দিন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে সংসদে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার তা হয়নি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সংসদের ‘উত্তর প্লাজা’ দিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। স্পীকার রাষ্ট্রপতির আগমনের ঘোষণা দিলে সশস্ত্র বাহিনীর একটি বাদক দল বিউগলে ‘ফ্যানফেয়ার’ বাজিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সম্ভাষণ জানান। সংসদে কক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রবেশের পর নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। স্পীকারের ডান পাশে রাখা লাল রঙের গদিওয়ালা চেয়ারে আসন নেন স্যুট-কোট পরিহিত রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ। স্পীকারের অনুরোধের পর রাষ্ট্রপতি তাঁর লিখিত ভাষণের সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু করেন। এসময় তাঁর মূল বক্তব্য পঠিত বলে গণ্য করার জন্য স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রপতি। স্পীকারের আসনের বাম পাশে রাখা ‘রোস্ট্রামে’ দাঁড়িয়ে দীর্ঘ ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। ১৪৭ পৃষ্ঠার ভাষণের সংক্ষিপ্তসারে রাষ্ট্রপতি দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, খাদ্য-কৃষি, পরিবেশ-জলবায়ু, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, করোনা মহামারী মোকাবেলাসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের কার্যক্রম ও সাফল্যে তুলে ধরেন। এছাড়া দেশে আইনের শাসন সুসংহত ও সমুন্নত রাখা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে সরকারের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। ভাষণ শেষে সংসদ অধিবেশন থেকে প্রস্থানের সময়ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয় এবং সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতিকে সম্মান ও বিদায় জানান। রাষ্ট্রপতির প্রস্থানের পর স্পীকার সংসদ অধিবেশন আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মূলতবি ঘোষণা করেন। কোন সংসদের প্রথম এবং নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ দেয়ার বিধান রয়েছে। পরে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর একটি ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হয়। পুরো অধিবেশনজুড়ে ওই প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেষ বক্তব্যের পর আলোচনা শেষে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংসদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হবে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তাঁর ভাষণে বলেন, দেশে আইনের শাসন সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারসহ চাঞ্চল্যকর অন্যান্য মামলার রায় দ্রুত প্রদান করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে এবং জনজীবনে স্বস্তি বিরাজ করছে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রভাবে গোটা বিশ্বের ন্যায় আমাদের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পসহ অর্থনীতির সকল সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ দফা নির্দেশনাসহ ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে নানামুখী দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সামাজিক সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সংবলিত এক লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান অব্যাহত রাখায় প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীর চাকরি সুরক্ষা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয় এবং নগদ অর্থ বিতরণ ইত্যাদি সরকারী কর্মসূচীর কারণে দেশের একটি মানুষও করোনাকালে না খেয়ে থাকেনি। সময়োপযোগী ও আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার কর্মসৃজন ও কর্মসুরক্ষা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর সময়োচিত সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোভিড-১৯ সঙ্কট মোকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় প্রথিতযশা সাময়িকী ‘ফোবর্স’ কর্তৃক প্রকাশিত নিবন্ধে করোনা মোকাবেলায় সফল নারী নেত্রীদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। কোভিড-১৯ জনিত প্যানডেমিকের সফল মোকাবেলা, অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ও জীবনমান সচল রাখার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ প্রণীত ‘কোভিড-১৯ সহনশীল র‌্যাংকিং’-এ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ এবং বিশ্বে ২০তম স্থান অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়, প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভিনন্দন ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, বিশ্বশান্তি, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূল, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তির খাতের উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং সম্মাননাসহ সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী দর্শন-চিন্তায় আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মাননাসহ অর্জন সম্ভব হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বাঙালী জাতির জীবনে শ্রেষ্ঠ গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংবলিত একটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম প্রস্তুত করা হয়েছে। এর ফলে সরাসরি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে সম্মানী ভাতা প্রদান সহজতর হয়েছে। তিনি বলেন, মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে ১৪ হাজার গৃহ নির্মাণ করে বিনামূল্যে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রদান করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ স্থানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন’- এর নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন শীর্ষক প্রকল্প এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। জনগণ শীঘ্রই করোনা টিকা পাবেন ॥ সরকার খুব শীঘ্রই দেশের জনগণকে কোভিড-১৯ টিকা প্রদান করতে পারবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব লাইফ সাইন্সেস প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরাসরি ক্রয়ের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিএমএসডির মাধ্যমে জরুরীভিত্তিতে ভ্যাকসিন ক্রয় বাবদ ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ভাতীয় প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদান করা হয়। আমি আশা করছি সরকার খুব শীঘ্রই দেশের জনগণকে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান করতে পারবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সব ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। সম্প্রতি সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো সাফল্যের সঙ্গে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরীভিত্তিতে ২ হাজার চিকিৎসক ও ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগ, কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজার ৫২৫ সাধারণ বেড, ৬৬৬টি আইসিইউ এবং ৭৩ ডায়ালাইসিস বেড, ৫৫৪টি ভেন্টিলেটর, ১৩ হাজার ৫১৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ৬৭৮ হাইফ্লো নেইজল ক্যানুলা এবং ৬৩৯টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের ব্যবস্থা রাখার কথা রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। আর্থিক খাত ব্যবস্থাপনায় সরকারের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক অর্জন বিশ্বব্যাপ প্রশংসিত হয়েছে। নোভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। তবে একইসময়ে মাথাপিছু জাতীয় আয় ৮ দশমিক ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা শীর্ষ দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আসছে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ, এই মাহেন্দ্রক্ষণে আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথেই আমাদেরকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। এ বছর মধ্যম-আয়ের দেশ হিসেবে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। তবে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়া। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি কল্যাণকর, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সক্ষম হবো। সরকার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে ॥ রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সানার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ গ্রহণ করে। ৬ষ্ঠ ও ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন অভীষ্টের লক্ষ্যমাত্রাসমূহ নির্ধারিত সময়ের আগেই অর্জন করে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের শ্রেণীতে উত্তরণের সকল যোগ্যতা অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। প্রণয়ন করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। তিনি বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শন ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর প্রধান অভীষ্ট হলো ২০৩১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের অবসান, উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশের মর্যাদায় উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের অবলুপ্তিসহ উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদায় আসীন হওয়া। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার এ লক্ষ্যসমূহ অর্জনে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা এবং রেমিটেন্স প্রেরণ পদ্ধতি সহজীকরণের সুফল হিসেবে প্রবাসে আয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাস আয় পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দাঁড়িয়েছে, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে প্রবাস আয় হ্রাসের সম্ভাবনা থাকলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রবাস আয়ে প্রবৃদ্ধির হার ৩৮ শতাংশ, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ ২০২২ সালের জুলাইয়ে শেষ ॥ স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু’র দুই প্রান্তের মাওয়া ও জাজিরা সংযোগকারী সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপন করার মাধ্যমে সেতুর ছয় দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ জুলাই ২০২২ সাল নাগাদ সমাপ্ত হবে। এর ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের সমম্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক তিন-দুই কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুলেন টানেলের নির্মাণকাজ ডিসেম্বর ২০২২ সাল নাগাদ সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যে টানেলের ১ম টিউবের নির্মাণ শেষে গত ১২ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ২য় টিউবের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত র‌্যাম্পসহ ৪৬ দশমিক সাত-তিন কিলোমিটার ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ জুন ২০২৩ সাল নাগাদ সম্পন্ন হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাভার ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ১১টি রুটের ২৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সাবওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ২০২১ সালের জুন নাগাদ সমাপ্ত হবে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বালিয়াপুর হতে নিমতলী-কেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক দুই-চার কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। খাদ্যের পাশাপাশি মাছ-মাংস-ডিমেও স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ ॥ রাষ্ট্রপতি বলেন, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকদের যথাযথ ফসলচাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও দুর্যোগ প্রণোদনা এবং সারসহ কৃষি উপকরণে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান, কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভর্তুকি, প্রতিকূলতা সহিঞ্চু জাত উদ্ভাবন, প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনয়ন ইত্যাদি নীতি গ্রহণ করেছে। ফলে খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৪ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও ফসল উৎপাদন ধারা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মৎস্য ও প্রাণিজাত পণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাত কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ইলিশের উৎপাদন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না ॥ রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ বলেন, ‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৬শ’টি পরিবারের জন্য বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ মানবিক বিবেচনায় বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিকের বাসস্থানের জন্য আশ্রায়ণ-৩ প্রকল্প বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক নোয়াখালী জেলার ভাসানচরে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ৩ হাজার ৪৭৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো ইউনেস্কো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং বৃহত্তর সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের আওতায় সৃজনশীল অর্থনীতি বিনির্মাণে যুব সমাজের নেয়া অসামান্য উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য সাধারণ অর্জন ও তাঁর অবদানের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন। এ পুরস্কার বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ব্রান্ডিং ও ইমেজ বিল্ডিং-এ বিশেষ ভূমিকা রাখবে। দুর্নীতি-সন্ত্রাস-মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ॥ দুর্নীতি-মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, এ লক্ষ্যে ১৮টি সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়ন ও সময়োপযোগী করা হয়েছে। পুলিশ, এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় জরুরী সেবা ‘৯৯৯’ সেবাসহ অনলাইন জিডি, মহিলা, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সকল থানায় পৃথক ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে পুলিশের সেবা প্রদানের মানোন্নয়ন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক ও আত্মগোপণকারী আসামি ক্যাপ্টেন আবুল মাজেদকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড রায় কার্যকর করা হয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফের যৌথ প্রচেষ্টায় যশোরের ৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার সীমান্ত ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে ডোপ টেস্ট কার্যকর করা হয়েছে। পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মানোন্নয়নে ই-পাসপোর্ট চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কোরের ১৭টি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহন ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজিত হয়েছে। দুটি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট প্রথম স্থান পুনরুদ্ধার করেছে।
×