ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলন অবশ্যম্বাবী : নজরুল

প্রকাশিত: ১৮:২০, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

আন্দোলন অবশ্যম্বাবী : নজরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্দোলন অবশ্যম্ববী বলে মন্তব্য করেছেন ২০ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ২০ দলীয় জোটের আয়োজনে জোটের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে নিশ্চয়ই আন্দোলন হবে। আন্দোলনের মুখেই যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, যারা দুর্নীতি ও অনাচার করে জনগনকে কষ্ট দিয়েছে তাদের পতন নিশ্চিত করা হবে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকার অনেক নৌকায় পা দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারপরও শেষ রক্ষা হবে না। কারণ, দুই নৌকায় পা দিলে ডুবে যেতে হয়। এই সরকার তো দুই নৌকায় নয়, অনেক নৌকায় পা দিয়ে বসে আছে। তাই যেকোনো সময়ে এ সরকার পড়ে যাবে। নজরুল খান বলেন, বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তা নেই বলে তারা ভোটার, রাজনৈতিক দল ও জনগণকে ভয় পায়। তারা জানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে মোটেও জিততে পারবে না। এটা আমাদের কথা য়। তাদের নেতারাই বলছেন। ক্ষমতা চলে গেলে আওয়ামী লীগের ণোকেরা পালানোর জায়গাও পাবে না। নজরুল বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের ভবিষ্যত পরিনতির কথা জানে। এজন্যই তারা জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয় না। আর নির্বাচন কমিশন অভাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এ ব্যর্থতার কারণে তাদের একদিন জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। নজরুল বলেন, সাধারণ একটা প্রবাদ আছে যে, সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখতে নাই। অর্থাৎ কিকল্প রাখতে হয় সব ব্যাপারে। আমরা দেখেিেছ ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী যেমন- মাস্ক, পিপিই ইত্যাদি নিয়ে কি কেলেংকারী হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণেই তা হয়েছে। এ ছাড়া চাল, ডাল, তেল, নুনের মুল্যবৃদ্ধি ও ভোটকারচুপি নিয়ে কেলেংকারী হয়েছে। এসব কারণে দেশের মানুষ চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে বর্তমান সরকারের কোন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেই। দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে পারলে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। তবে যে যার অবস্থানে থেকে আমাদের যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমার বিশ্বাস এ বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। নজরুল বলেন, বাংলাদেশ এক অদ্ভুত রাষ্ট্র, দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে, আবার ধর্মনিরপেক্ষতাও আছে। একই সংবিধানে গণতন্ত্রও আছে, সমাজতন্ত্রও আছে। এ ছাড়া সংবিধানে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদও আছে, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদও আছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য সব ব্যাপারে কম্প্রমাইজ করার জন্যই তা করা হয়েছে। নজরুল বলেন, আমি বিশ্বাস করি মানুষের মধ্যে এতো বেশি কষ্ট বিদ্যমান যে তারা পরিবর্তন চাচ্ছে। আর এ জন্য আমাদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আন্দোলনের জন্য ২০ দলীয় জোটে আলোচনা হতে হবে। তার আগে আমি যখন অন্যের কথা বলব, তখন আমার নিজের কথাও বলতে হবে। আমি আমার নিজ দায়িত্ব বা আমার ভূমিকা ঠিকমতো পালন করছি কিনা এর জবাবদিহি করতে হবে। আমরা যদি যার যার দায়িত্ব বা যার যার ভূমিকা ঠিক মতো পালন করি তাহলে আন্দোলন সফল হবে। আর যদি আমরা নিজেদের দায়িত্ব যার যার মতো না পালন করি তাহলে কিভাবে আন্দোলন সফল হবে। ২০ দলীয় জোট নেতাদের উদ্দেশ করে নজরুল বলেন, আমি আশা করব আগামী দিনে আমরা সবাই যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবো। যে নীতি ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে আমরা ২০ দলীয় জোট গঠন করেছিতার আলোকে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই করতে হবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে একটাই- সেটা হলো আন্দোলনের মানসিক প্রস্তুতি নিন। কারণ জনগনের আশাআকাঙ্খা পূরণের দায়িত্ব আমাদের ওপর। তাই আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, আমরা যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা যারা জনগনের ক্ষমতার প্রতি আস্থাশীল, আমরা যারা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি তাদের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করা। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জামায়াত নেতা মিয়া মো. গোলাম পারোয়ার, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, খেলাফত মজলিশের অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের শওকত আমীন প্রমুখ।
×