ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কাজাখস্তানে মানবাধিকার কর্মী বিলাশের আটক ছিল অবৈধ ॥ জাতিসংঘ

প্রকাশিত: ১৪:২০, ৩ ডিসেম্বর ২০২০

কাজাখস্তানে মানবাধিকার কর্মী বিলাশের আটক ছিল অবৈধ ॥ জাতিসংঘ

অনলাইন ডেস্ক ॥ কাজাখস্তান সরকার গত বছর মানবাধিকার কর্মী সেরিকজান বিলাশকে আটক করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিলাশ চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত উইঘুর ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী ফ্রিডম নাউ-এর দায়ের করা পিটিশনের জবাবে নির্বিচারে আটকের বিষয়ে জাতিসংঘের কর্মরত বিভাগ জানিয়েছে, বিলাশ এবং তার সংস্থা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করায় কাজাখস্তান সরকার তাকে টার্গেট করেছিল। তাকে আটক করে কাজাখস্তান সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে। খবর জাস্ট আর্থ নিউজের। রেডিও ফ্রি ইউরোপ রেডিও লিবার্টি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের মার্চে কাজাখ কর্তৃপক্ষ বিলাশকে গ্রেপ্তার করে।বিলাশ জিনজিয়াংয়ের তথাকথিত শিক্ষা শিবিরে বন্দি চীনা বংশোদ্ভূত কাজাখদের মুক্তির জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন। আতাজুর্ত এরিকটাইলেরি (পিতৃভূমির স্বেচ্ছাসেবক) নামের একটি সংগঠনের প্রধান বিলাশ। তিনি ২০১৮-২০১৯ সালে চীনের জিনজিয়াং থেকে আগত কাজাখিদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সমাবেশ করেন। এই সমাবেশে জিনজিয়াংয়ের বন্দিশিবিরে আটকে থাকা কাজাখিদের মুক্তির দাবি তুলেছিলেন তিনি। বিলাশের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ এনে পাঁচ মাস তাকে জিম্মায় রাখা হয়ে। ২০১৯ সালের আগস্টে ৩০০ ডলার জরিমানা আদায় করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। ফ্রিডম নাউয়ের আইনজীবী কর্মকর্তা অ্যাডাম লেদম্যাট বলেছেন, বিলাশকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছিল কাজাখস্তান। এর মধ্য দিয়ে দেশটি অপরাধের পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলছেন, জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সেরিকজান আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু এই পদক্ষেপের কারণে তার নিজ দেশের সরকার তাকে চুপ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমরা কাজাখস্তানকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মেনে চলার আহ্বান জানাই। সেইসঙ্গে সেরিকজানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার ও তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। অভিযোগ রয়েছে, জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১০ লাখ উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে ক্যাম্পে আটক রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে চীন সরকার। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, প্রদেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, ‘শিক্ষা শিবির’ নামক ক্যাম্পে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে আটকে রেখে তাদের নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সমালোচনা করতে অথবা সেই ধর্ম পরিত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সংখ্যালঘুদের ক্যাম্পে রেখে ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হচ্ছে।
×