ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টানা তিন জয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ১ ডিসেম্বর ২০২০

টানা তিন জয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়েই চলেছে। সোমবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচেও জিতেছে তারা। শক্তিশালী বেক্সিমকো ঢাকা ও জেমকন খুলনাকে উড়িয়ে দেয়া দলটাকে আটকাতে পারেনি ফরচুন বরিশাল। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অবশ্য মাত্র ১০ রানে হেরেছে তারা। তবে এর ফলে হ্যাটট্রিক জয়ে এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে ৬ পয়েন্ট পাওয়া চট্টগ্রাম। আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৫১ রানের লড়াকু পুঁজি পায় চট্টগ্রাম। জবাবে দুই বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪১ রান করতে সক্ষম হয় বরিশাল। মুস্তাফিজ ও শরিফুল ৩টি করে উইকেট নেন। তৃতীয় ম্যাচে এটি বরিশালের দ্বিতীয় হার, তাদের অর্জন মাত্র ২ পয়েন্ট। নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে বিধ্বস্ত করে চট্টগ্রাম পরে ব্যাটিং করে। সোমবার টস জেতার পর তাই এবার আগে তাদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় বরিশাল। তাদের সেই পরিকল্পনা ফলপ্রসূই হয়েছে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন রানের মধ্যে থাকা সৌম্য সরকার (৫)। ততক্ষণে অবশ্য স্কোরবোর্ডে ২২ রান উঠেছে লিটন দাসের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে। ইনজুরি আক্রান্ত মুমিনুল হক না থাকায় এদিন ওয়ানডাউনে নামেন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। তবে দলের তৃতীয় ম্যাচে এসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ১৩ বলে ১৭ রান করার পর তাকে ফিরিয়েছেন সুমন খান। লিটনও সাজঘরে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজের অফস্পিনে। ২৫ বলে ৪ চারে ৩৫ রান করেন তিনি। এরপর শামসুর রহমান শুভ ২৮ বলে ২৬ ও মোসাদ্দেক হোসেন ২৪ বলে ২৮ রানের দুটি ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। মূলত চট্টগ্রামের ইনিংসটাকে লড়াকু পুঁজিতে পরিণত করেন সৈকত আলী। ৭ নম্বরে নেমে মাত্র ১১ বলে ২৭ রান করার পথে তিনি ১ চার, ৩ ছক্কা হাঁকান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫১ রান তোলে চট্টগ্রাম। আবু জায়েদ রাহী ৪২ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে সতর্কভাবে শুরু করে বরিশাল। মিরাজ ও তামিম ইকবাল জুটি এরপরও ২৩ রানে ভেঙ্গে যায়। ১৩ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ১৩ রান করা মিরাজকে কট এ্যান্ড বোল্ড করেন শরিফুল। এরপর পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন তামিম। তবে রান তোলায় তেমন গতি ছিল না তাদের। চাপটা সৃষ্টি করেছিলেন মূলত কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ। ১৬ বলে ১১ রান করা ইমনকে সাজঘরে পাঠিয়ে তিনি ব্রেক থ্রু এনে দেন। তামিম দেখে শুনে খেলছিলেন, তাকেও শিকার করেন মোসাদ্দেক। ৩২ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩২ রান করেছিলেন তামিম। এরপর আর মুস্তাফিজ-শরিফুল বাঁহাতি পেসে অসহায় করে দেন বরিশালকে। শুধু আফিফ এদিন নিজেকে ফিরে পেয়ে ২২ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ২৪ রানের ইনিংস খেলতে পেরেছেন। টি২০ ক্যারিয়ারে ১ হাজার রান পূর্ণ করেছেন তিনি। এই ম্যাচে নামার আগে আফিফের সে জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ রানের। মাঝে তৌহিদ হৃদয় ১০ বলে ১৭ রানের একটি ইনিংস খেলে আউট হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪১ রানের বেশি করতে পারেনি বরিশাল। ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। শরিফুল ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়েছেন ৩ উইকেট নিতে। উভয়ে ১৪টি করে ডট বল করেছেন যা রান তাড়া করতে নামা বরিশালকে লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন করে দেয়। কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে অধিনায়ক মিঠুনের দারুণ রসায়নে আরেকটি জয়ের আত্মতৃপ্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুর্বার চট্টগ্রাম। স্কোর ॥ গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ইনিংস- ১৫১/৭; ২০ ওভার (লিটন ৩৫, মোসাদ্দেক ২৮, সৈকত ২৭; রাহী ২/৪২)। ফরচুন বরিশাল ইনিংস- ১৪১/৮; ২০ ওভার (তামিম ৩২, আফিফ ২৪; মুস্তাফিজ ৩/২৩, শরিফুল ৩/২৭)। ফল ॥ গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ শরিফুল ইসলাম (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম)।
×