ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কাফরুলে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে ও পুড়িয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ১ ডিসেম্বর ২০২০

কাফরুলে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে ও পুড়িয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কাফরুলে সম্পত্তির বিরোধের জের ধরে সীমা বেগম (৩১) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে ও পুড়িয়ে হত্যা করেছে সৎ ছেলের পরিবার। পুলিশ জানায়, এ ঘটনার ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে নিহতের সৎ ছেলে এসএম আশিকুর রহমান নাহিদ (২৭), তার স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা আইরিন (২২), নাহিদের শ্বশুর তারেক উলাহ (৫০), শাশুড়ি রোকেয়া বেগম (৪০), শ্যালক সাকিব (২০), মামা শ্বশুর নাসিরউদ্দিন আশেক উল্লাহ (৪৫)। তবে এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শাহজাহান শিকদার পলাতক রয়েছে। কাফরুল থানার ওসি মোঃ সেলিমুজ্জামান জানান, সোমবার ভোরের দিকে রাজধানীর উত্তরখান এলাকা থেকে নিহতের সৎ ছেলে নাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। ঘণ্টা খানেক পর কাফরুলের ইমাননগর ও আশপাশের এলাকা থেকে জাকিয়া, আসেক, রোকেয়া, শাহজাহান ও সাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। ওসি জানান, গ্রেফতারকৃতরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দীন বলেছিলেন, রবিবার রাতে কাফরুল থানাধীন ইমামবাগ এলাকার ১০তলা একটি ভবনের সাততলা থেকে সীমা বেগম নামে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সীমার দ্বিতীয় স্বামী শাহজাহানের সঙ্গে ওই ফ্লাটে থাকতেন। সীমা শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী। নিহত সীমার শরীরের এক অংশ পোড়া ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত সীমার শরীরে পোড়াক্ষতসহ পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে নিহতের ভাই মোঃ হেলাল করিম বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে কাফরুল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের ধারণা, গৃহবধূ সীমাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। সীমার সৎ ছেলে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। নিহতের ভাই হেলাল করিম জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। তিনি জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পারিবারিকভাবে সীমা ও শাহজাহানের বিয়ে হয়। এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি তার সৎ ছেলে নাহিদ। শাহজাহানের আর্থিক অবস্থা ভাল। তিনি কার্টন ফ্যাক্টরির মালিক। কিছুদিন ধরে নাহিদ তার নামে সম্পত্তি লিখে দিতে বাবা শাহজাহান শিকদারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। সীমা তার মা-বাবাকে সাংসারিক অশান্তির কথা জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাকে যে এভাবে খুন হতে হবে, তা তারা বুঝতে পারেননি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন হেলাল করিম। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে সীমার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মগের্র সামনে নিহতের চাচাত ভাই শফিকুল ইসলাম জানান, রবিবার বিকেলে সীমার জামাই শাহজাহান তাদের দ্রুত কাফরুলের ইমামবাগ এলাকার বাসায় আসতে বলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি জানান, সীমা মারা গেছেন। সীমার স্বজনদের ভাষ্য, নাহিদের শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাফরুলের বাসায় ছিলেন। রবিবার বিকেলে পুলিশ সীমার লাশ উদ্ধার করে তার ঘরের খাটের ওপর থেকে। পুলিশ জানায়, সীমার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। শরীরের পেছনের অংশ পুড়ে যাওয়া। লাশের পাশে একটা লুঙ্গি পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা, লুঙ্গি দিয়ে শ্বাসরোধের পরে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে সামীকে হত্যা করা হতে পারে।
×