ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্মীপুরে ঘটক সেজে নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ

প্রকাশিত: ২৩:১২, ২৫ নভেম্বর ২০২০

লক্ষ্মীপুরে ঘটক সেজে নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ঘটক সেজে স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে রাজশাহীতে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ধর্ষক শাকিব হাসানের বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। মাদারীপুরে ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর বখাটে বিষ্ণু কীর্তনীয়া (২৫) গা ঢাকা দিয়েছে। নীলফামারীর ডোমারে অটোরিক্সায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এতে জড়িত অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া বরিশালে বিয়ের প্রলোভনে কলেজ ছাত্রীকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিদেশে পাচারের হুমকি দেয়া হয় এবং জোর করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। সোমবার রাত ও মঙ্গলবার এসব তথ্য জানা গেছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে স্বামী পরিত্যক্তাএক নারীকে ঘটক সেজে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। চরফলকন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতা ওই নারী থানায় অভিযোগ করার পর সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে মোঃ ছগির (৫০) ও মোঃ সুমনকে (২২) চরফলকন এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, রাতেই এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ছগির ও সুমনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় কমলনগরের পাটোয়ারীহাট ইউনিয়নের চরফলকন এলাকার বাসিন্দা সামছুল হকের ছেলে ছগির ও ছায়েদুল হকের ছেলে মোঃ সুমনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মঙ্গলবার জেলা সদর হাসপাতালে ভিকটিমের মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার ড. এসএম কামরুজ্জামান জানান, ঘটক সেজে একজন এবং অপর একজন ওই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। আটককৃতদের মঙ্গলবার বিশেষ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে দু’জনকে আসামি করে কমলনগর থানায় মামলা হয়েছে। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ ॥ রাজশাহীর বাঘায় প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কলেজ ছাত্রী। সোমবার দিবাগত রাতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে জরুরীসেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে ধর্ষক শাকিব হাসানের বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ভিকটিম ছাত্রী বাদী হয়ে বাঘা থানায় মামলা করেছেন। জানা গেছে, রাজশাহী সরকারী কলেজে লেখাপড়ার সময় চারঘাট উপজেলার এক কলেজ ছাত্রীর পরিচয় হয় বাঘা উপজেলার চক নারায়ণপুর গ্রামের ভ্যাগল সরকারের ছেলে রাব্বী হাসানের (২৬)। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় দেড় বছর সম্পর্ক রাখার পর রাব্বী ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করে। দুইমাস আগে তার বন্ধু শাকিব হাসানের সঙ্গে ওই ছাত্রীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। শাকিব মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলশিপুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে এবং মনিগ্রাম বাজারে অবস্থিত গ্রামীণ কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচীর পরিচালক। থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রাব্বীর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন হওয়ার পর তার বন্ধু শাকিব হাসান ওই কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে তার বন্ধুকে যোগাযোগ করে দেয়ার শর্তে কথা বলতে থাকে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে তার বন্ধুর বাসায় ডেকে শাকিব বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ভিডিও ধারণ করে তার বন্ধু। পরে ওই ছাত্রীকে বলা হয়, ‘তুমি যদি ঘটনাটি কাউকে জানাও তাহলে ফেসবুক-ইন্টারনেটে এই ভিডিও ভাইরাল করা হবে। এতে দুর্বল হয়ে পড়ে ওই ছাত্রী।’ সর্বশেষ সোমবার সকালে ওই ছাত্রীকে তার অফিসে ডেকে আনে শাকিব। এরপর বিকেলে ওই ছাত্রী বাড়ি ফেরার সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিবের এক বন্ধু তাকে জানায়, শাকিব বিবাহিত। সে প্রতারণা করছে। এ খবর শুনে ওই ছাত্রী দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং শাকিবের বাড়িতে গিয়ে চিৎকার করে স্থানীয় লোকজন জড়ো করে। মুহূর্তে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করে। পরে বাঘা থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, রাব্বী এবং শাকিব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এর মধ্যে রাব্বীর নামে বাঘা থানায় মাদক সেবন, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, কলেজ ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা করেছেন। তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদারীপুরে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার ॥ মাদারীপুরে ধর্ষণের শিকার ৭ম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে (১৪) সোমবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর বখাটে পলাতক রয়েছে। দু’দিন আটকে রেখে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে বিষ্ণু কীর্তনীয়া (২৫) নামে এক বখাটের বিরুদ্ধে। বিষ্ণু কীর্তনীয়া রাজৈরের আমগ্রাম উত্তরপাড়া এলাকার কৃষ্ণ কীর্তনীয়ার ছেলে। পুলিশ ও নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির উঠানের টিউবওয়েলে হাত ধুতে যায় ওই শিক্ষার্থী। এ সময় ওত পেতে থাকা আমগ্রাম উত্তরপাড়ার কৃষ্ণ কীর্তনীয়ার ছেলে বিষ্ণু কীর্তনীয়া (২৫) তার বন্ধুর সহযোগিতায় ওই শিক্ষার্থীকে গামছা দিয়ে মুখ ও হাত বেঁধে মোটরসাইকেলে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে দু’দিন আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে কৌশলে পালিয়ে ওই স্কুলছাত্রী বাড়ি ফিরে এসে ঘটনাটি পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা রবিবার রাতে রাজৈর থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানান এবং রাতেই বিষ্ণু কীর্তনীয়াকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। মামলা হওয়ার একদিন পর ওই স্কুলছাত্রীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিষ্ণু প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বারবার নিষেধ করার পরও আমার মেয়েকে বিরক্ত করেই যাচ্ছিল। এলাকায় মাদবরদের কাছে বিষয়টি একাধিকবার বলেছি, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। আমার মেয়েটার যে এত বড় ক্ষতি করল আমি ওর বিচার চাই।’ মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই স্কুলছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অটোরিক্সায় গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা ॥ নীলফামারীর ডোমারে অটোরিক্সায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে অটোরিক্সা চালক কামাল ইসলাম (২০) ও ইউনুস আলী (৪৮) নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের মফিজপাড়া গ্রামে। জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় চিলাহাটি মুন্সিপাড়া গ্রামের ওই গৃহবধূ বাবার বাড়ি সান্তাহার যাওয়ার জন্য ডোমার রেলস্টেশনে আসে। কিন্তু রাতে ট্রেন না থাকায় একটি অটোতে ওই গৃহবধূ স্বামীর বাড়ি ফিরছিল। পথে ভেলেঙ্গার ডারা এলাকায় অটোচালক ও তার সহযোগী ওই গৃহবধূকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় গৃহবধূর আর্তচিৎকারে বাসাবাড়ির লোকজন বেরিয়ে এসে গৃহবধূকে রক্ষা ও দু’জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। ডোমার থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতেই গৃহবধূ বাদী হয়ে তাদের নামে থানায় ধর্ষণের চেষ্টার একটি মামলা করেছেন। বরিশালে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ ॥ বিয়ের প্রলোভনে কলেজ ছাত্রীকে বিভিন্নস্থানে আটক করে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বিয়ের জন্য চাপ দেয়া হলে বিদেশে পাচারের হুমকি এবং সাদাস্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। এ ঘটনায় বরিশাল আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানান, নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় হিজলা উপজেলার ডিক্রিরচর গ্রামের মতি খন্দকারের পুত্র ইসমাইল খন্দকারকে (২৫) প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া মতি খন্দকার, শহীদ ভুঁইয়া ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে সহযোগিতা করার অভিযোগে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ সোমবার শেষ কার্যদিবসে ওই ছাত্রীর মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে হিজলা থানার ওসিকে অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নির্যাতিতা তরুণী হিজলা জব্বার মেহমান ডিগ্রী কলেজে অধ্যয়নরত। মামলার প্রধান অভিযুক্ত ইসমাইল একই এলাকার বাসিন্দা। সে দীর্ঘদিন থেকে তাকে (কলেজ ছাত্রী) প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত ৫ নবেম্বর ওই কলেজ ছাত্রী তার এক নিকটাত্মীয়র বাড়িতে যাওয়ার পথে ইসমাইল জোরপূর্বক নিজের মামা শহীদ ভুঁইয়ার বাড়িতে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ৬ নবেম্বর সকালে কলেজ ছাত্রীকে কৌশলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অভিযুক্তদের সহায়তায় একটি আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। ৮ নবেম্বর ওই কলেজ ছাত্রীকে মিরপুর এলাকার একটি বাসায় নিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে নির্যাতিতা ওই কলেজ ছাত্রী বিয়ের দাবি জানালে তাকে বিদেশে পাচার করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ সময় কলেজ ছাত্রী কান্নাকাটি করলে তার বাবাকে খবর দেয়ার পর অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর ওই তরুণীর বাবা ও খালুকে ঢাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনটি সাদা স্ট্যাম্পে নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রী এবং একটি সাদা কাগজে তার বাবা ও খালুর জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়ার পর পুরো বিষয়টি কাউকে জানালে তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
×