ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজারবাইজানে সেনা পাঠাতে দ্বিধা করবে না তুরস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ২২ অক্টোবর ২০২০

আজারবাইজানে সেনা পাঠাতে দ্বিধা করবে না তুরস্ক

অনলাইন ডেস্ক ॥ আজারবাইজানের অনুরোধ পেলে দেশটিতে সেনা পাঠাতে কিংবা সামরিক সহায়তা দিতে দ্বিধা করবে না তুরস্ক। বুধবার সিএনএন তার্ক-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজ দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত। একইসঙ্গে তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত আজারবাইজানের কাছ থেকে এ ধরনের কোনও অনুরোধ আসেনি। এর আগে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান জানান, কূটনৈতিক উপায়ে আজারবাইজানের সঙ্গে সংঘাতের সমাধান হবে না। তাই আর্মেনিয়ার নাগরিকদের অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তার ওই আহ্বানের একদিনের মাথায় আজারবাইজানের প্রতি নিজ দেশের এমন জোরালো অঙ্গীকারের কথা জানান তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট। আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ফ্রান্সকে নিয়ে গঠিত মিনস্ক গ্রুপেরও সমালোচনা করেন তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এই গ্রুপ সংকট জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তারা আর্মেনিয়াকে রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পুরনো সংঘাত গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে আবার শুরু হয়। গত কয়েক দিনের সংঘাতে প্রায় হাজারখানেক মানুষ নিহত হয়েছে। কারাবাখের আর্মেনিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে তাদের ৮৩৪ মিলিশিয়া নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আজারবাইজান জানিয়েছে, আজারবাইজানের ৬৩ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে আর্মেনীয় বাহিনী। আহত হয়েছে আরও ২৯২ জন। আর্মেনিয়ার অন্তত দুইটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা কথা জানিয়েছে আজেরি বাহিনী। বিদ্যমান সংঘাতে নিজ দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে আর্মেনিয়া। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ বাস্তবতা স্বীকার করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। তিনি বলেন, আর্মেনিয়ার 'বহু হতাহত' হয়েছে। তবে এখনও সেনাবাহিনী কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, ‘আমাদের সবার জানা প্রয়োজন যে আমরা একটা কঠিন পরিস্থিতি পার করছি। জনশক্তি ও উপকরণের ক্ষয়ক্ষতি হলেও আর্মেনিয়ার সেনারা এখনও নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। তারা প্রতিপক্ষের জনশক্তি ও উপকরণের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি করেছে।’ আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেছেন, আর্মেনিয়া তাদের গ্যাস ও তেলের পাইপ লাইনে আক্রমণ করেছে। তুরস্কের প্রচার মাধ্যম হেবারতুর্ক-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আর্মেনিয়া আমাদের পাইপলাইন আক্রমণ করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যদি এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।’ অন্যদিকে সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের সঙ্গে আলাপকালে আজারবাইজানের সঙ্গে তার দেশের চলমান সংঘাতের জন্য তুরস্ককে দায়ী করেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। রয়টার্সকে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তুরস্কের অবস্থান পরিবর্তন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আজারবাইজান থামবে না। তারা সংঘাত থামাবে না। সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর সামরিক জোটের সদস্য আর্মেনিয়া, যার নেতৃত্বে রয়েছে রাশিয়া। আবার আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক। তুর্কি ও আজেরি রাজনীতিকরা দুই দেশের সম্পর্ককে ব্যাখ্যা করতে একটি বাক্য ব্যবহার করে থাকেন। এটি হচ্ছে, ‘এক জাতি, দুই দেশ।’ দুই দেশের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মের মিল রয়েছে। সূত্র: ডেইলি সাবাহ, বিবিসি।
×