ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কিশোরগঞ্জে যানজট নিরসনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ

প্রকাশিত: ২১:২৩, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

কিশোরগঞ্জে যানজট নিরসনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ১৬ সেপ্টেম্বর ॥ যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের নিয়ম না থাকলেও শহরে যান চলাচলে শ"ড়খলা ও যানজট নিরসনের নামে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। যানবাহন থেকে এই চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। কিছুদিন ধরে মানববন্ধন, স্মারকলিপি দেয়া ও সমাবেশ করাসহ লাগাতার আন্দোলন করছে। পুলিশ বলছে, শহরের ট্রাফিক ব্যব¯'া দেখাশুনার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের। এটি অন্য কারও কাজ না। জানা গেছে, জেলা শহরের যানজট কমানোর লক্ষ্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গত ৫ জুলাই জুমে একটি বৈঠক করে। এতে ৩৭টি বিষয় বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে শহরতলীর ১৩টি ¯'ানে ইজিবাইক স্ট্যান্ড ও পাঁচটি স্থানে সিএনজি স্ট্যান্ড ¯'াপন, শহরে চলাচল করা যানবাহনের সংখ্যা নির্ধারণসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু সিদ্ধান্ত রয়েছে। শহরের যানজট কমানোর এ উদ্যোগকে সংশ্লিষ্ট সবাই স্বাগত জানায়। তবে ৩৭ সিদ্ধান্তের মধ্যে যানবাহন থেকে কোন ধরনের চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত ছিল না। অভিযোগ উঠেছে, ‘যানজট নিরসনে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা, মিশুক ও রিক্সা ইত্যাদি যানবাহন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি’ ওইসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেয়ে এমন কিছু বিষয়ে কাজ করছে, যা সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তারা এখন স্ট্যান্ডে স্ট্যান্ডে কমিটি গঠন করছে। যানবাহন চলাচলে শ"ড়খলা ফেরাতে প্রতি স্ট্যান্ডে ১০-১২ জন করে কর্মী নিয়োগ (যাদের দৈনিক বেতন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা) করেছে। আর এইসব কর্মীর বেতন পরিশোধের দায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে যানবাহনগুলোর ওপর। মাসে প্রত্যেকটি ইজিবাইকের ওপর ৬০০ টাকা করে চাঁদা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যা নিয়ে ইজিবাইক শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিশোরগঞ্জ পৌর ইজিবাইক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম সৈয়দ বলেন, আগে আমরা বিভিন্ন সংগঠনের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ছিলাম। এখন স্ট্যান্ডগুলোতে প্রশাসনের নিয়োগ দেয়া কর্মীরা চাঁদাবাজি করছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তিনি আরও বলেন, চাঁদা আদায় ছাড়া প্রশাসনের যে কোন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আর স্ট্যান্ডের যানবাহন চলাচলের নিয়ন্ত্রণ ব্যব¯'া ট্রাফিক পুলিশের হাতে থাকা প্রয়োজন। এটি অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করলে আরও বিশ"ড়খলা বাড়বে। তিনি জানান, তাদের হিসাব মতে শহর ও শহরের বাইরের অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার ইজিবাইক চলাচল করে (যদিও প্রশাসনের হিসাবে এ সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার)। যা থেকে ৬০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় হওয়ার কথা। এসব টাকা কীভাবে খরচ হবে। এগুলো কেউ জানে না। ফলে পুরো বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে যানজট নিরসনে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, শহরের যানজট নিরসনে ১১টি ইজিবাইক স্ট্যান্ড ও আটটি সিএনজি স্ট্যান্ড ¯'াপন করা হয়েছে। এসব স্ট্যান্ড যেন সুশ"ড়খলভাবে চালাতে প্রতিটি স্ট্যান্ডে ব্যব¯'াপনা কমিটি করা হয়েছে। আর প্রতি স্ট্যান্ডে ১০ জন করে কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের বেতন পরিশোধের জন্য প্রতি ইজিবাইকপিছু মাসিক ৬০০ টাকা চাঁদা ধার্য করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এর মধ্য দিয়ে অনেক লোকের কর্মসং¯'ানও হ"েছ। এ উদ্যোগকে বেশিরভাগ ইজিবাইক শ্রমিক সমর্থন করেছে। অল্প সংখ্যক লোক এর বিরোধিতা করছে। একটি ভাল উদ্যোগকে অহেতুক বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে।
×