ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে কে পাচ্ছেন নৌকার মনোনয়ন?

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ৩১ জুলাই ২০২০

নওগাঁ-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে কে পাচ্ছেন নৌকার মনোনয়ন?

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ॥ নওগাঁ জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে নওগাঁ-৬ (রানীনগর - আত্রাই) আসনের এমপি ইসরাফিল আলম গত ২৭ জুলাই ইন্তেকাল করেছেন। ফলে আসনটি শুন্য হয়। ইতোমধ্যেই এ আসনে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। ঈদের পরই তারা সরাসরি আত্মপ্রকাশ করবেন বলেও শোনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই তাদের কেউ মাঠে আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছেন। অপরদিকে বিএনপি কেন্দ্র থেকে সাড়া পাবার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে কে পাচ্ছেন নৌকা প্রতিক তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশিসহ স্থানীয়রা। জানাগেছে, ১৯৯১ ও ৯৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান। ২০০১ ও ২০০৬ সালে পুনরায় আলমগীর কবীর বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মরহুম ইসরাফিল আলম। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবির এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরের ছোট ভাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে আবারো বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। মূলত এ আসনটি চারবার বিএনপির অধীনে থাকলেও ২০০৮ সালের পর থেকে আওয়ামীলীগের দখলে রয়েছে। বিগত বিএনপির সময় এ দুই উপজেলা জঙ্গী এলাকা হিসেবে পরিচিত থাকলেও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর সর্বহারা বা জেএমবির তৎপরতা পুরোটাই নিয়ন্ত্রনে ছিল। তবে আসন্ন জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচনের সময় কোন ধরনের প্রাণহানী চাননা এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতনরা। জানা গেছে, সাবেক এমপি শাহিন মনোয়ারা হক, মরহুম ইসরাফিল আলমের স্ত্রী সুলতানা পারভিন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, রানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন হেলাল ও নওগাঁ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন এবারের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। মরহুম সাংসদ ইসরাফিল আলমের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী রাণীনগর ও আত্রাইয়ে যে পরিমান উন্নয়ন মূলক কাজ করছেন তা আগে কখনো হয়নি। আমিও সার্বক্ষনিক আমার স্বামীর সাথে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে গেছি। আগামীতে আমার স্বামীর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চাই। আমার বিশ্বাস নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এ আসন থেকে মনোনয়ন দিবেন। আমাকে মনোয়ান দিলে শতভাগ বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। শাহিন মনোয়ারা হক বলেন, রানীনগরেই আমার জন্মস্থান। ইতোপূর্বে সংরক্ষিত নারী আসনে সফল এমপি ছিলাম। আত্রাই-রানীনগরের মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে আমি কাজ করতে চাই। আমি আশাবাদী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিবেন। রানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, আমি শতভাগ আশাবাদী মনোনয়ন পাবো এবং বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ। রানীনগর উপজেলায় আওয়ামীলীগের মুল বলতেই আমরা। নওগাঁ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন বলেন, যদি তৃনমুলের অবস্থান বিবেচনা করে মনোনয়ন দেয়া হয় তাহলে আমি আশাবাদী। এ দুই উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পরিকল্পনা আছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী বলেন, গত নির্বাচনের সময় এ আসনের দুই উপজেলায় ব্যাপক জনসমাগম করেছিলাম। এলাকার প্রতিটি বাড়িতে গিয়েছি। আমার বিশ্বাস নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এ আসন থেকে মনোনয়ন দিবেন। নওগাঁ জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। কেন্দ্র যদি মনে করে উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে হবে তাহলে আমরা অংশ নিবো। এরপর প্রার্থী যাচাই-বাছাই করা হবে। আর যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে তো প্রার্থী যাচাইয়ের কোন প্রশ্নই আসে না।
×