ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ময়মনসিংহে তিন মাসের বিল একসঙ্গে দেয়ার খড়্গ

বিদ্যুত বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন গ্রাহক

প্রকাশিত: ২০:৩২, ১ জুলাই ২০২০

বিদ্যুত বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন গ্রাহক

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ করোনাকালে বকেয়া বিল আদায় বন্ধ রাখার খেসারত গুনতে হচ্ছে এখন ময়মনসিংহের আবাসিক বিদ্যুত গ্রাহকদের। এসময়কার অস্বাভাবাবিক বিল একসঙ্গে পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, মিটার না দেখে বিদ্যুত বিভাগের মনগড়া বিলের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। একসঙ্গে তিন মাসের বকেয়া বিলের পাশাপাশি গত মে মাসের অস্বাভাবিক বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানিয়েছেন, এটি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ ছাড়া আর কিছুই নয়। অবিলম্বে সমস্যা সমাধানসহ গ্রাহক হয়রানি বন্ধের দাবিতে স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, ময়মনসিংহ শাখার নেতৃবৃন্দ। ময়মনসিংহ বিদ্যুত বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ উত্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময় মানুষ ঘরবন্দী থাকার কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ায় বিলও বেড়ে গেছে। ভৌতিক বিলের অভিযোগ অস্বীকার করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যুত বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারা। ভুক্তভোগী স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার আবাসিক বিদ্যুত গ্রাহক মিন্টু আক্কাসের (৩৫) প্রতিমাসে বিদ্যুত ব্যবহারের বিল ছিল ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ মাসের ২৫৪৬ টাকা বকেয়ার সঙ্গে মে মাসের বিল করা হয়েছে ৩ হাজার টাকার ওপরে। এ নিয়ে দিশেহারা মিন্টু সমস্যা সমাধানে ঘুরছেন বিদ্যুত বিভাগের দ্বারে দ্বারে। মিন্টুর অভিযোগ, বিদ্যুত বিভাগের মিটার রিডারদের কারসাজি আর স্থানীয় কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই গ্রাহকদের এই ভোগান্তি। ময়মনসিংহ বিদ্যুত বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ দক্ষিণের কার্যালয়ে সমস্যা সমাধানে মিন্টু বিগত দিনের একাধিক বিলের প্রমাণ প্রদর্শন করেও কার্যকর কোন সমাধান পাননি। অফিস থেকে মিন্টুকে বলা হয়, আগামী জুন মাসের বিলের সঙ্গে এটি সমন্বয় করা হবে। এরকম অস্বাভাবিক বিলের সমাধান খুঁজতে প্রতিদিন ময়মনসিংহের বিদ্যুত অফিসে আসছেন অসংখ্য গ্রাহক। একসঙ্গে ৩ মাসের বকেয়া পরিশোধের চাপের পাশাপাশি মে মাসের অস্বাভাবিক বিল গ্রাহকদের বিপর্যস্তের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলছে। করোনাকালে বিদ্যুত বিভাগের এমন অমানবিক আচরণে ক্ষুব্ধ ও হতাশ তারা। নগরীর বাউন্ডারি রোডের গ্রাহক অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক অধ্যাপক আজিজুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মে মাসের মিটার রিডিংয়ের চেয়ে অস্বাভাবিক ইউনিটের বিল করায় অতিরিক্ত রেটের বাড়তি বিল পরিশোধ করতে হয়েছে তাকে। অথচ মিটার রিডিং অনুযায়ী বিল করা হলে কম রেটের সুবিধা পেতেন তিনি। বেশিরভাগ গ্রাহকের অভিযোগ এই মিটার রিডিং নিয়ে। মিটার না দেখে বিল করায় এমনটি হয়েছে। ময়মনসিংহ বিদ্যুত বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগে ৩ লাখের বেশি আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন। ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করা না হলে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়ে মাইকিং করছে ময়মনসিংহ বিদ্যুত বিভাগ।
×