ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরার দিয়াবাড়িতে ব্যারাক উদ্বোধনকালে আইজিপি

পুলিশ বাহিনীকে উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে

প্রকাশিত: ২২:১৬, ২৮ জুন ২০২০

পুলিশ বাহিনীকে উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছেন। সেই উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ বাহিনীকে গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধন করার সময় এসব কথা বলেন তিনি। পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান, পুলিশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তনের মাধ্যমে পুলিশকে উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশে পরিণত করা হচ্ছে। উন্নত দেশের পুলিশ হতে হলে পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে। তিনি জানান, পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে। পুলিশে থেকে মানুষের কাছ থেকে অবৈধ সু নেয়া যাবে না। মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়, মানবিক আচরণ করতে হবে। এ সময় বেনজীর আহমেদ কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পুলিশের কোন সদস্য ড্রাগ খাবে না। ড্রাগের সঙ্গে কোনভাবেই সম্পর্কযুক্ত থাকবে না। তিনি জানান, কোন ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। তেমনি পুলিশের কোন সদস্য যদি ড্রাগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান, ৮ মার্চ থেকে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ ভাইরাস প্রতিরোধে তখন পুলিশ সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জনগণের সুরক্ষায় কাজ শুরু করেছে। এখন পুলিশের ২ লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে। বেনজীর আহমেদ জানান, করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার করা হয়েছে। আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি উন্নত বেসরকারী হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। এমনকি পুলিশ সদস্যদের স্কুল-কলেজ এবং হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না। সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়। ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান, এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্যুর হার কমছে। তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩ ভাগ। পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র দশমিক ৫ ভাগ। আইজিপি জানান, পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সঙ্কট নিরসনের লক্ষ্যে আমরা স্বল্পমেয়াদে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যারাক ভবন নির্মাণ করেছি। ডেমরায় করা হয়েছে, উত্তরাতে আজ করা হলো। পূর্বাচলেও আমরা ব্যারাক ভবন নির্মাণ করব। দীর্ঘমেয়াদে আমরা বহুতল ভবন নির্মাণের দিকে যাব। পুলিশ ফোর্সের বসবাসের ঘনত্ব কমিয়ে তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক আবাসনের ব্যবস্থা করতে চাই আমরা। তিনি পুলিশের ব্যারাক ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করার জন্য আবুল খায়ের গ্রুপকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, অতিরিক্ত আইজিগণসহ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
×