ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নদ-নদীর পানি আরও বাড়বে

উত্তরাঞ্চলে বন্যার অবনতি

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২৮ জুন ২০২০

উত্তরাঞ্চলে বন্যার অবনতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের জেলা সিলেট ও সুনামগঞ্জেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহে উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি আরও বাড়বে। এই সময়ে বন্যার আরও বিস্তৃতি ঘটবে। তাদের হিসেব অনুযায়ী উত্তরাঞ্চল পেরিয়ে দেশের মধ্যাঞ্চলের এই দফায় বন্যা দেখা দেবে। তারা জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিলেট এবং সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। তারা জানিয়েছে, দেশের উজানে বিশেষ করে ভারতে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি নেমে আসার কারণে সিলেট, সুনামগঞ্জ এলাকার সুরমা, কুশিয়ারা এবং জাদুকাটা নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা নদীর পানি আগেই বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। এসব নদীর পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে নতুন করে আরও লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারা জানায়, দেশের সব প্রধান নদীর পানি সমতালে বাড়ছে। আগামী তিন দিন তা অব্যাহত থাকবে। ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সারিয়াকান্দি এবং সিরাজগঞ্জের কাজীপুর পয়েন্টে এবং ৪৮ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদ সীমা অতিক্রম করবে। বর্তমানে যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ এবং ফুলছড়ি এলাকা দিয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত নদী কুশিয়ারা সোমেশ্বরী এবং ভুগাই কংস নদীর পানিও বিপদ সীমা অতিক্রম করবে বলে জানানো হয়েছে। এই এলাকার সুরমা এবং কুশিয়ারা নদী সুনামগঞ্জ এবং কানাইঘাট এলাকা দিয়ে বিপদ সীমার ৪০ এবং ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তরের তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্ট দিয়ে বর্তমানে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল হয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। তবে এই এলাকার ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, উজান থেকে নেমে আসার পানি এবং দেশের ভেতরে ভারি বর্ষণের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। পানি নেমে আসার ফলে রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, দিনাজপুর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই দফায় বন্যার কবলে পড়তে পারে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের অন্তত পাঁচটি নদীর পানি এসব জেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, পদ্মা, আত্রাই ও হাওড় এলাকার নদীগুলোর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে। এক সপ্তাহ ধরে এসব নদীর পানি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ লাগবে নামতে। সব মিলিয়ে দুই সপ্তাহ বন্যার পানি থাকতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি কুড়িগ্রাম দিয়ে, তিস্তার পানি লালমনিরহাটে, পদ্মার পানি মুন্সীগঞ্জে ও হাওড়ের পানি সুনামগঞ্জ দিয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তারা আরও জানায়, উজান থেকে পানি নেমে আসা ছাড়াও গত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তরাঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে, তা দিনাজপুর থেকে নিচের দিকে নওগাঁর আত্রাইয়ে গিয়ে পড়ছে। এতে ওই জেলা ও বগুড়ায় বন্যা হতে পারে। বাকি এলাকার বন্যা মূলত উজানে ভারত থেকে আসা পানি থেকে সৃষ্টি হবে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছে, উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জি, অসম, মেঘালয়সহ হিমালয়ের পাদদেশে দিনে দুই থেকে তিনশ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে। সেই পানি দ্রুত বাংলাদেশের দিকে নেমে আসে। দেশের ভেতরও বৃষ্টিপাত বেড়ে গেছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মার পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী এক সপ্তাহ ভারতের এসব রাজ্যে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ১০২টি পয়েন্টের মধ্যে ৭৮টির পানি বাড়ছে। সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদ্মার পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে। কুড়িগ্রাম ॥ বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে। শনিবার দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৩ সে.মিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৮ সে.মিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ সে.মিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকায় জেলার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমির আউশ, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা ও শাকসবজির ক্ষেত। এছাড়াও নদীভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়েছে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বানভাসিরা। নিচু লেট্রিন ডুবে যাওয়ায় বিপদে পড়েছে নারী ও শিশুরা। এদিকে প্রচ- নদীভাঙ্গনের মুখে পড়েছে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, থেতরাই, বুড়াবুড়ি, বেগমগঞ্জ এলাকার মানুষ। গত এক সপ্তাহের ভাঙ্গনে বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ২ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে গেছে। গাইবান্ধা ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফুলছড়ির বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি মেরামত না করায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই বাঁধ ভাঙ্গা এলাকা দিয়ে পানি ঢুকে সাঁতারকান্দির চর ও ভাষারপাড়া এলাকা আকস্মিক বন্যায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। ফলে ওই দুটি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ২ হাজার ৫শ’ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এছাড়া গাইবান্ধা বালাসীঘাট সড়কের বাঁধের পূর্ব অংশের সড়কটি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। সাঘাটা, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জের নদীবেষ্টিত চরগুলোর নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার বসতবাড়ির লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে পাট, পটল, কাঁচামরিচ ও শাক-সবজির ক্ষেতসহ সদ্য রোপণকৃত বীজতলা তলিয়ে গেছে। লালমনিরহাট ॥ তিস্তা নদীর ভাটিতে থাকা প্রায় ৫০টি চর ও দ্বীপ চরের বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠে গেছে। অনেকের বাড়িঘর ডুবে গেছে। রান্না করা খাবার ও পানীয় জলের কষ্টে পড়েছেন অধিবাসীরা। শুক্রবার রাতেও ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৪০ মিলিলিটার। পানি আরও বাড়তে পারে। তিস্তা নদীর পানির তোড়ে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের সেতুটির থর থর করে কাঁপছে। ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে তিস্তার ভাটিতে থাকা চর ও দ্বীপচরে বসবাসরত গ্রামবাসীর অনেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাচ্ছেন। অনেকে নিকট আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সিলেট অফিস ॥ ভারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, লোভাসহ প্রায় সব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কানাইঘাট সুরমা নদী ও সারি নদী সারিঘাট পয়েন্টে একই সময়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৪ দিনের টানা ভারিবর্ষণে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। সিলেট জেলা শহরের সঙ্গে গোয়াইনঘাট উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ হাটবাজার পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ী ঢলের পানি জাফলং এলাকার পিয়াইন ও ডাউকি নদী দিয়ে এলাকায় প্রবেশ করছে। এতে পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও ও পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। সিলেট সদর উপজেলার ১নং জালালাবাদ, ২নং হাটখোলা, ৩নং খাদিম নগর, ৭নং মোগলগাঁও, ৮নং কান্দিগাঁওসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এদিকে হাঁটখোলার উমাইগাঁও, জালালাবাদের মানসিনগর, রায়েরগাঁও, কান্দিগাঁও ছামাউরাকান্দি, নীলগাঁও, নলকট, মোগলগাঁও ৪নং ওয়ার্ড, খাদিমনগর আলীনগর, ঘোড়ামারা, ছয়দাগ, গণকিটুক, বাউয়ারকান্দি, বাইশটিলা, রঙ্গিটিলা, পীরেরগাঁও, মধুটিলা, মোকামবাড়ি, বাইলার কান্দি, রইরকান্দি, শিমূল কান্দি, যুগলটিলা, ছালিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। জামালপুর ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও ভারিবর্ষণের কারণে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে করে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, চুকাইবাড়ি ও চিকাজানি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর-উলিয়া রাস্তা তলিয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের বামনা-শিংভাঙ্গা খাল ভরে পানি ঢুকছে। বলিয়াদহ এলাকায় রাস্তা ডুবে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় বলিয়াদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনসহ ও আশপাশের আট-দশটি গ্রামের ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। এছাড়া বেলগাছা, পাথর্শী, কুলকান্দি ও সাপধরি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ও আওনা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের পাট ও আউশ ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত এখন পর্যন্ত অব্যাহত থাকায় জেলার জাদুকাটা, রক্তি, খাসিয়ামারা, চলতি, সুরমা, পাটলাইসহ সবকটি সীমান্ত নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এছাড়া পাহাড়ী ঢলের কারণে হাওড় এলাকাগুলোতে পানি বাড়ছে। সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী এলাকা সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার কাজির পয়েন্ট, নবীনগর, পশ্চিমবাজার, সাহেববাড়ির ঘাট, বড়পাড়া মল্লিকপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নীলফামারী ॥ বন্যা ও ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় ৫ হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ইতোমধ্যে তিস্তার করালগ্রাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ২২ পরিবারের বসতবাড়ি। এ ছাড়া স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত চরখড়িবাড়ি এলাকায় বালুর বাঁধের ২০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়। অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বুড়ি তিস্তা, দেওনাই, চাড়ালকাটা, ধাইজান, খড়খড়িয়া যমুনেশ্বরীসহ সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে আমন বীজতলাসহ অন্যান্য ফসল। ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়নের ছাতুনামা ও ভেন্ডাবাড়ি মৌজার ৬ শত পরিবার পানিবন্দী। এরই মধ্যে ২২টি পরিবারের ঘরবাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। পরিবারগুলোকে নৌকায় করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে শুকনা খাবার ও নগদ দুই হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে।’
×