ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

তারকাদের শূটিংয়ে ফেরার মানবিক আহ্বান

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৫ জুন ২০২০

তারকাদের শূটিংয়ে ফেরার মানবিক আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে থমকে গেছে সারা বিশ্ব। করোনা শুধু মানুষের জীবনের গতি ও অর্থনীতির গতিকেই মন্থর করেনি, থমকে দিয়েছে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বের সকল কার্যক্রম। বৈশ্বিক এই দুর্যোগের প্রভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনও স্থবির। লাইট, ক্যামেরা, এ্যাকশন, কাটের মতো চিরচেনা সেই শব্দগুলোও শিল্পীদের কাছে এখন অপরিচিত। এই প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাংস্কৃতিক অঙ্গণের অস্বচ্ছল ও নিস্নআয়ের মানুষেরা। মিলনায়তনকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কণ্ঠশিল্পী, অভিনয়শিল্পী ও যন্ত্রশিল্পীদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন মঞ্চব্যবস্থাপক, সেট ডিজাইনারসহ এ পেশার সঙ্গে জড়িত নানা শ্রেণীর মানুষ। আর নাটক ও চলচ্চিত্রসহ সকল ধরণের শ্যুটিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করা প্রোডাকশন্স বয় থেকে শুরু করে মেকাপ আর্টিস্ট, লাইটম্যান, সহকারি পরিচালক, ট্রলি বয়, ক্যামেরা ক্রু ও শিল্পীরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে নাটকের শুটিং বন্ধ ছিল মার্চ মাস থেকে। এ শিল্পটির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন শ্রেণীর কলা-কুশলীরা পড়ে যায় চরম অর্থ সংকটে। বিশেষ করে যারা প্রতিটি নাটক থেকে স্বল্প আয় করতো তাদের পরিবারগুলো খুবই কষ্টে দিনযাপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে নাটকসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। তবু ভয়কে জয় করে কাজে ফিরতে পারেননি অনেক স্বনামধন্য শিল্পী। এমতাবস্থায় ‘সবার জন্য আমরা’ এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমানের দিক-নির্দেশনায় অনুষ্ঠান প্রধান দেওয়ান শামসুর রকিব যেসকল বিশিষ্ট শিল্পী নাটকের মধ্যমণি তাদের প্রতি কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়ে পত্র পাঠিয়েছেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সৈয়দ আশিক রহমান ও দেওয়ান শামসুর রকিব জানান, এরই মধ্যে মোশাররফ করিম, নুসরাত ইমরোজ তিশা, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, আফরান নিশো, তাহসান খান, মেহজাবীন চৌধুরী, তৌসিফ মাহবুব, তানজিন তিসা, সাফা কবিরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে তারকাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন, করোনাকালীন এই সময়ে সকলেই বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে দিনযাপন করছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাব আমাদের কমবেশি যার যার কর্মক্ষেত্রেও পড়েছে। বিশেষ করে টেলিভিশিন নাটকসংশ্লিষ্ট সকলেই এর বাইরে নন। কাজ না হাওয়ার বা থাকায় করোনাকালীন সংকটে অর্থ কষ্টে পড়ছেনে অনকেইে। প্রকাশতি বা অপ্রকাশতি ভাবে সকলেই আমরা বিষয়টি জানি। গত ২০ মার্চ লকডাউন বিবেচনায় হঠাৎ করে শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং বর্তমানে শুটিং অনুমোদন দেওয়ার পরও পরিস্থিতি বিবেচনায় আপনার মত জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পীরা নিয়মিতভাবে কাজ শুরু না করায় স্বল্প আয়ের শিল্পীরা সীমাহীন অর্থ কষ্টের মধ্যে পড়েছেন। বিস্তারিতভাবে বললে- আপনার মত শিল্পীরা আরো কিছুদিন কাজ না করলেও হয়তো চলবে কিন্তু টেলিভিশন নাটক সংশ্লিষ্ট অন্যরা বলতে-ক্যামেরাম্যান, সহকারি পরিচালক, মেকআপ আর্টিস্ট, প্রোডাকশন বয়, লাইটম্যান, ক্যামেরাসহকারীসহ অন্যান্য কলা-কুশলী অনেক অর্থ কষ্টে দিনযাপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে টিভি নাটক নির্মাণের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য আপনাদের সহযোগিতা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং সংশ্লিষ্ট সকলের জীবিকার কথা বিবেচনা করে আগামী ঈদে যে কোন চ্যানেলে একাধিক নাটক, টেলিফিল্মে অংশগ্রহণ করার বিনীত অনুরোধ জানিয়েছে আরটিভি। সৈয়দ আশিক রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, দেখুন অনেকেই অভিনয় করছেন, এই ক্রাইসিসের মধ্যে অনেক বড় শিল্পী আছেন যারা একটি শুটিং হাউজে অনেকেই থাকেন-ক্যামেরাম্যান, এ্যাসিসট্যান্ট, এই কাজের মধ্যদিয়ে প্রতিটা লোকের অন্নসংস্থান হয়। শুটিং না হলে অনেকেইতো বেকার হয়ে যায়। সবাই যদি স্বাস্থবিধি মেনে এই কাজে এগিয়ে আসে তাহলে কাজটাকে এগিযে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। সামনে ঈদ আসছে। এই ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই কাজ করে। ডাষ্ট আহ্বান জানিয়েছি। বেেলছি শুধুমাত্র আমার চ্যানেলে না, আপনারা যেকোনো চ্যানেলে যদি অল্প কিছুক্ষণের জন্যও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করেন তাহলে সবার কাজের জায়গার পাশাপাশি অর্থের সংস্থান হয়। অনেক মানুষ কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারে না। তারা কিন্তু অনেকেই আছে যারা শুধুমাত্র এই কাজটাই করে। যদি কাজ করার সুযোগ না থাকে তাহলে তার কি হবে ভেবে দেখুন।
×