ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার মধ্যেও জেএমবি আনসার ও আল্লাহর দল তৎপরতা চালাচ্ছে

প্রকাশিত: ২৩:২০, ২৩ জুন ২০২০

করোনার মধ্যেও জেএমবি আনসার ও আল্লাহর দল তৎপরতা চালাচ্ছে

গাফফার খান চৌধুরী ॥ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি, আনসার আল ইসলাম ও আল্লাহর দল তৎপরতা চালাচ্ছে। জঙ্গী সংগঠন তিনটি তৎপরতা চালাতে বিভিন্ন এ্যাপস ব্যবহার করছে। তহবিল বাড়াতে ব্যবহার করছে বিকাশ ও ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার পদ্ধতি। তৎপর থাকা সংগঠনগুলো একটি প্ল্যাটফরমে আসার চেষ্টা করছে। যাতে ভবিষ্যতে তারা আরও শক্তিশালী হয়ে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে সক্ষম হয়। তারা আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস ও আল কায়েদার অনুসারী। সম্প্রতি তিনটি জঙ্গী সংগঠনের সতেরো সদস্য গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে এমন তথ্য। র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স বিভাগের প্রধান ও বাহিনীটির লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, বহু দিন ধরেই জেএমবি, আল্লাহর দল ও আনসার আল ইসলাম এক প্ল্যাটফরমে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে নানা ধরনের মতবিরোধের কারণে এখনও তারা সেটি করতে পারেনি। বছরের শুরু থেকেই তারা তুলনামূলক বেশি তৎপরতা শুরু করে। এজন্য বিভিন্ন এলাকায় তৎপর থাকা জঙ্গীদের গ্রেফতারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই নির্দেশনা মোতাবেক সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত আনসার আল ইসলামের একটি গ্রুপের আট সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। আনসার আল ইসলাম সদস্যদের গ্রেফতারে চালানো অপারেশনটি পরিচালনা করে র‌্যাব-২। র‌্যাব-২ এর স্পেশালাইজড ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানির কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী জনকণ্ঠকে জানান, আনসার আল ইসলামের গ্রেফতারকৃত আট জনের মধ্যে ইতোমধ্যেই চার জন তাদের তৎপরতা থাকাসহ নানা বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। জবানবন্দী মোতাবেক তারা পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে থাকা বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের মতো দেশের প্রত্যন্ত একটি এলাকা দখলে নিতে চায়। সেটি কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বা কোন গহীন জঙ্গলের গ্রাম হতে পারে। সেখানে তারা মুসলিম ভিলেজ গড়ে তুলবে। গ্রামটি ইসলামী আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সেখান থেকেই তারা দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য সশস্ত্র অপারেশন চালাবে। মুন্সীগঞ্জ, সিলেট ও পাবনার পরিবেশগত কারণে তাদের তৎপরতা তুলনামূলক বেশি। ইসলামের পথে যারা বাধা বলে তারা মনে করে, তাদের হত্যাই তাদের প্রধান কাজ। হত্যার ক্ষেত্রে তারা আর আগের মতো ছুরি-চাকু বা চাপাতি ব্যবহার করবে না। দ্রুত হত্যা নিশ্চিত করতে তারা পিস্তল বা রিভলবারের মতো আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের অর্থদাতা মুহিব মুশফিক খান ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়েছে। তারা ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপ, টেলিগ্রাম ও মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটানোর পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে নানা পরামর্শ করত। তাদের টার্গেট নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কিশোর ও যুবকরা।
×