ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বনানীতে দাফন

অসময়ে চলে গেলেন উন্নয়নের রূপকার জামিলুর রেজা চৌধুরী

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২৯ এপ্রিল ২০২০

অসময়ে চলে গেলেন উন্নয়নের রূপকার জামিলুর রেজা চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী শুধু একটি নাম নয়, দেশের লাখো মানুষের স্বপ্নদ্রষ্টা। দেশের অসংখ্য উন্নয়নের রূপকার অগ্রগণ্য প্রকৌশলী জাতীয় এই অধ্যাপক। সবার কাছে আলোর ফেরিওয়ালা হিসেবেই পরিচিত সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই অধ্যাপক যিনি স্বপ্ন দেখতেন, স্বপ্ন দেখাতেন, বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতেন। আর সেই গুণী মানুষটি আর নেই। সবাইকে ছেড়ে আপন ঠিকানায় চলে গিয়েছেন তিনি। তাঁর রেখে যাওয়া স্বপ্ন আর উন্নয়নে অবকাঠামোর জন্যই দেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে ‘অধ্যাপক জামিলুর রেজা’কে। সোমবার রাত দুটার পর ঘুমের মধ্যে হার্ট এ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়, মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজার চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নিকটাত্মীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত ইসলাম বলেন, সোমবার রাত ২টার দিকে ঘুমের মধ্যে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর ‘ম্যাসিভ হার্ট এ্যাটাক’ হয়। ভোর ৪টার দিকে তাকে নিয়ে যখন স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাই, ততক্ষণে তিনি মারা গেছেন। জামিলুর রেজা চৌধুরীর জামাতা অধ্যাপক জিয়া ওয়াদুদও মঙ্গলবার ভোরে ফেসবুকে তার মৃত্যুর খবরটি জানান। অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম জানিয়েছেন, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মঙ্গলবার জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী গোরস্থানে তার বাবা-মায়ের কবরে শায়িত করার কথা। দুপুর দেড়টার দিকে ধানম-ির ঈদগা মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বল্প পরিসরে জানাজা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিকটতমদের মধ্যে কয়েকজন জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে জামিলুর রেজার মরদেহ বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। কত বিশেষণ যে এই গুণী মানুষটির প্রাপ্য, তা শেষ করা যাবে না। জাতীয় জীবনে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। সবাই এক বাক্যে বলছেন, একজন ভাল মানুষ ছিলেন, সাদা মনের মানুষ ছিলেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুনে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে ভূষিত করে। সত্যিকার অর্থেই এ গুণী মানুষটি হয়ে উঠেছিলেন জাতির শিক্ষক। অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে যেসব বড় বড় ভৌত অবকাঠামো হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোতেই কোন না কোনভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে যাদের হাত দিয়ে বাংলাদেশের ইমারত বিধি তৈরি হয়েছিল জামিলুর রেজা চৌধুরী তাদের একজন। দেশের প্রথম মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। আর এখন পদ্মার ওপরে দেশের সবচেয়ে বড় যে সেতু তৈরি হচ্ছে সেই প্রকল্পের আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্যানেলেরও নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি। এছাড়াও, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পেও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন জামিলুর রেজা চৌধুরী। দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে সরকার তাকে একুশে পদক দেয়। ২০১৮ সালের জুনে আরও দুজন শিক্ষকের সঙ্গে তাকেও জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়। ওই বছরই জাপান সরকার জামিলুর রেজা চৌধুরীকে সম্মানজনক ‘অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান, গোল্ড রেইস উইথ নেক রিবন’ খেতাবে ভূষিত করে। ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী পাওয়া একমাত্র বাংলাদেশী তিনি। ১৯৯৬ সালে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করা জামিলুর রেজা চৌধুরী মৃত্যু পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ছিলেন। তিনি ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। এদিকে, তাঁর মৃত্যুতে মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রতিভাবান এ শিক্ষাবিদের মৃত্যুতে এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন স্বনামধন্য প্রকৌশলী হিসেবে তিনি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলে নেতৃত্বদানকারী এই গুণী ব্যক্তিত্বের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এক বিবৃতিতে ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন স্পীকার। বুয়েটসহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে চাননি। এ বিষয়ে আগেই জীবিত থাকার সময়ে জানিয়েছিলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলে রাজনৈতিক চাপ আসবে। ছাত্ররা আন্দোলন করবে, শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধটা এখন প্রকট। রাতের বেলাও সতর্ক থাকতে হবে, ক্যাম্পাসে কোথায়, কী হচ্ছে। তাঁর ভাষায়, ‘আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, শান্তিতে ঘুমাতে চাই।’ আর সেই শান্তির চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন সবার প্রিয় শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। সিলেটে জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠলেন বিভিন্নস্থানে ॥ জামিলুর রেজা চৌধুরীর জন্ম সিলেট শহরে। ১৯৪৩ সালের ১৫ নবেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী ও হায়াতুন নেছা চৌধুরীর পরিবারে তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। বাবার বদলির চাকরির কারণে তার শৈশব কেটেছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। প্রাথমিক শেষ করে ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে ভর্তি হলেও পরে তার পরিবার ঢাকায় চলে আসে। প্রথমে নবাবপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পরে সেইন্ট গ্রেগরিজ হাইস্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তখনকার আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ)। ১৯৬৩ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করে সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান জামিলুর রেজা চৌধুরী। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৬৮ সালে সেখানেই পিএইচডি শেষ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘শিয়ার ওয়াল এ্যান্ড স্ট্রাকচারাল এ্যানালাইসিস অব হাইরাইজ বিল্ডিং’। পিএইচডি শেষে দেশে ফিরে আবার বুয়েটে শিক্ষকতা শুরু করেন জামিলুর রেজা চৌধুরী। পদোন্নতির ধারায় ১৯৭৬ সালে হন অধ্যাপক। ২০০১ সাল পর্যন্ত বুয়েটে অধ্যাপনা করার সময় বিভিন্ন সময়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান এবং ফ্যাকাল্টির ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বুয়েটের কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক ছিলেন তিনি। পরে ওই কম্পিউটার সেন্টারই বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনলজিতে পরিণত হয়। বুয়েট থেকে অবসরে যাওয়ার পর ২০০১ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাড়ার সময় এটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে। এরপর ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন। বিশেষজ্ঞ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়েও সরকারের বিভিন্ন পরামর্শক প্যানেলে জামিলুর রেজা চৌধুরীর ডাক পড়েছে। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সফটওয়্যার রফতানি এবং আইটি অবকাঠামো টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৯৭ সাল থেকে পাঁচ বছর। ১৯৯৯ সালে সরকার তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা করার জন্য যে কমিটি করেছিল সেখানে তাঁকেই করা হয় আহ্বায়ক। ২০০১ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর আইটি টাস্কফোর্সেরও সদস্য করা হয়। পুরকৌশলের এই শিক্ষক নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্তরাজ্যের ইনস্টিটিউশন অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের ফেলো জামিলুর রেজা চৌধুরী নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটিতেও তিনি ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডসহ নানা আয়োজনে জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন নেতৃত্বের ভূমিকায়। বহুতল ভবন নির্মাণ, স্বল্প খরচে আবাসন, ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নক্সা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে ইমারত রক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং প্রকৌশল নীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ৭০টি গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে তার। দীর্ঘ এই পথযাত্রায় জামিলুর রেজা চৌধুরীর সঙ্গী ছিলেন তার স্ত্রী সেলিনা চৌধুরী। তাদের মেয়ে কারিশমা ফারহিন চৌধুরীও একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, আর ছেলে কাশিফ রেজা চৌধুরী কম্পিউটার প্রকৌশলী। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শোক ॥ জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া জামিলুর রেজা চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ভূমমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। শোক জানিয়েছেন, বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু)। ব্যক্তিগতভাবে নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল বলে শোক বার্তায় জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও, জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এক শোকবার্তায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশের দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী দুদকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বার বার। তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধে যেসব পরামর্শ দিতেন দুদকের কর্মকৌশলে তার প্রতিফলন ঘটত। গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর। শ্রদ্ধা জানিয়ে বিডিইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর শোকবাণীতে বলেন, অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এবং সহকর্মী। তিনি পরম মমতায় আমাদের আগলে রেখেছিলেন অমৃত্যু। গভীর শোক প্রকাশ করেন, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. মুহাম্মদ সামাদ। এছাড়াও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শোক ॥ জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে গভীর শোক জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বাইরে শোক বার্তা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির মহাসচিব ও ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া শোক বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতি বলেছেন, জামিলুর রেজা চৌধুরী মৃত্যুতে জাতীর অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হলো বলেও মনে করেন তারা। শোক বার্তায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশের শিক্ষা, প্রশাসন ও উন্নয়ন কর্মকা-ে অতুলনীয় ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের শিক্ষা ও উন্নয়নে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো, তা সহসাই পূরণ হওয়ার নয়। গুণী ব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদের পর থেকে সংবাদ মাধ্যমে থকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমকগুলো ভেসে উঠছে শোকবার্তা। এতেই বুঝা যায় কতটা ভালবাসার শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন তিনি। দেশের জন্য অনেক করা সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ভাল থাকুন, ঘুমাক শান্তিতে...। সালমান এফ রহমানের শোক ॥ জাতীয় অধ্যাপক প্রকৌশলী ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি। এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি এবং আমার সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতাপূর্ণ ও আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর আকস্মিক মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ড. চৌধুরী ছিলেন একজন কর্মপ্রাণ মানুষ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব। সারা জীবন তিনি মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারী বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি নিজের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়োজিত করেছিলেন। বাংলাদেশে কম্পিউটার তথা আইসিটি শিক্ষা জনপ্রিয় ও কার্যকর করার অন্যতম একজন পথিকৃৎ ছিলেন ড. চৌধুরী। তিনি তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান এবং সদা তৎপর ছিলেন। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ড. চৌধুরীর নাম বাংলাদেশের শিক্ষা, উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি তাঁর কাজের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি মহান একুশে পদকে ভূষিত হন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক ও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
×