ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বলিউডের ক্লাসিক প্রেমের সিনেমা পর্ব-২

প্রকাশিত: ১১:১০, ২৩ এপ্রিল ২০২০

বলিউডের ক্লাসিক প্রেমের সিনেমা পর্ব-২

করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারী। স্থবির হয়ে গেছে গোটা পৃথিবী। চরম আতঙ্ক, সীমাহীন অনিশ্চয়তা আর একঘেয়ে অলস বিরক্তিকর জীবন যাপনে সময় পার করছেন সবাই। জীবন বাঁচাতে ঘরে থাকার বিকল্প নেই। ফলে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন প্রায় সবাই। করোনার প্রভাব পড়েছে বিনোদন অঙ্গনে। নতুন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না, টিভি সিরিজ বা সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ থাকায় নতুন এপিসোড দেখানো সম্ভব হচ্ছে না। টিভি চ্যানেল খুললেই করোনার ভয়াল থাবার খবর, যা দেখতে বসে মানসিক বিপর্যয় ঘটছে প্রতিনিয়ত। এই অস্বস্তিকর পরিবেশ এবং ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে নিজেদের রক্ষার উপায় খুঁজছেন যারা, তাদের জন্য বেশ কিছু বলিউডি সাড়া জাগানো রোমান্টিক সিনেমার বিবরণ তুলে ধরা হলো। অনেকেই হয়তো দেখেছেন সিনেমাগুলো, একঘেয়েমি আর আতঙ্কে না কাটিয়ে প্রেমের গল্পে ডুবে যেতে অনলাইনে, ইউটিউব কিংবা টিভি চ্যানেলে রোমান্টিক হিন্দি সিনেমাগুলো দেখে নিতে পারেন। সাদমা : ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবিতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রীদেবী ও কমল হাসান স্মৃতিশক্তি হারানো এক তরুণীর সঙ্গে সাধারণ এক যুবকের ঘনিষ্ঠতার চমৎকার গল্প ‘সাদমা’ ছবির মূল প্রাণ। এ ছবিতে শ্রীদেবী অসাধারণ অভিনয় করেন। ভিন্ন ধারার রোমান্টিক এ ছবির শেষ পরিণতি দর্শকদের বেদনার্ত ও আপ্লুত করে। এখনও এ ছবিটির আবেদন অম্লান। কেয়ামত সে কেয়ামত তক : বলিউডের ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছিল মিষ্টি প্রেমের এই ছবিটি। ১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবিতে, বিবদমান দুই পরিবারের দুজন ছেলেমেয়ের গভীর প্রণয়ে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় চরম নাটকীয়তা সৃষ্টি দর্শকদের ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। এ ছবিতে রোমান্টিক তরুণ-তরুণীর ভূমিকায় আমির খান ও জুহি চাওলার প্রাণবন্ত অভিনয় তাদের ফ্রেশলুক শ্রুতিমধুর মনকাড়া সুরের গান দর্শকদের জাদু করেছিল। রোমান্টিক সিনেমার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক স্থাপনকারী ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবিটি এখনও দর্শকদের দারুণ আনন্দ বিনোদন দিতে সক্ষম। হাম আপ কে হ্যায় কোন : এ ছবিটি আশির দশক শেষে নব্বই দশকের প্রথম দিকে ১৯৯৪ সালে মুক্তি পেয়ে বক্স অফিস কাঁপিয়ে ছিল। মাধুরী দীক্ষিত-সালমান খান জুটির রসায়ন ছবিটির প্রাণ। এ ছবির গানগুলোও চমৎকার। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাসি ঠাট্টা প্রেম রোমান্স চরম ড্রামা দর্শকদের দারুণভাবে ধরে রাখে গল্পের মধ্যে। ম্যায়নে পেয়ার কিয়া : ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবিটি বলিউডের সেরা রোমান্টিক ছবির তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। সালমান খান-ভাগ্যশ্রী জুটির এ ছবির গল্পে গতানুগতিক ধনী-গরিবের প্রেম দেখানো হলেও উপস্থাপনার চমৎকারিত্ব এবং বেশ কিছু শ্রুতিমধুর গান এ ছবিকে দর্শকদের কাছে বিপুলভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছিল। চাঁদনি : শ্রীদেবী-ঋষি কাপুর জুটির রোমান্টিক এ ছবিটি ১৯৮৯ সালে মুক্তি পেয়ে বক্স অফিস কাঁপিয়ে ছিল। শ্রীদেবীর লাস্যময়ী ইমেজ, মনমাতানো অভিনয়, নাচ-গান এবং সুইজারল্যান্ডের মনোরম লোকেশনে এ ছবির চিত্রায়ন ‘চাঁদনির’ বড় সম্পদ। শ্রীদেবীর সুঅভিনেত্রী হয়ে ওঠার বড় প্রমাণ ছিল এ ছবি। যা তাকে আজও অমর করে রেখেছে। দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে : বলিউডের ইতিহাসে দুর্দান্ত রেকর্ড সৃষ্টিকারী এ ছবিটি ১৯৯৫ সালে মুক্তি পেয়ে একটানা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ছবি ঘরে প্রদর্শিত হয়েছিল। শাহরুখ খান কাজল রোমান্টিক জুটি হিসেবে পর্দায় অসাধারণ ক্রেজ সৃষ্টি করেন এ ছবির মাধ্যমে। দিলওয়ালে দুলহানিয়া লেজায়েঙ্গে ছবির সংলাপ গান এবং বিভিন্ন দৃশ্যকল্প দর্শকদের আজও মুগ্ধ, আকৃষ্ট করে। অসাধারণ কোন গল্প নয় হয়েও চমৎকার প্রাণবন্ত অভিনয় ও গল্প উপস্থাপনায় স্মার্টনেস দর্শকদের চুম্বকের মতো ধরে রাখতে সক্ষমÑ এ ছবিটি প্রমাণ করেছিল। হাম দিল দে চুকে সানাম : ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবিতে ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি সালমান খান, ঐশ্বরিয়া রাই ও অজয় দেবগনকে তিনটি প্রধান চরিত্রে কাস্ট করে তাদের কাছ থেকে সেরা কাজটি আদায় করে নিতে পেরেছিলেন। সালমান ঐশ্বরিয়া জুটির রোমান্স এ ছবির অনন্য আকর্ষণ। এক সময়ের বাস্তব জীবনের প্রেমিক প্রেমিকা এই দুই সুপারস্টারের পারস্পরিক অন্তরঙ্গতার আরেকটি দলিল বলা যায় ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ ছবিটিকে। কুচ কুচ হোতা হ্যায় : বলিউডের রোমান্টিক ছবির ইতিহাসে আরও একটি মাইলফলক সৃষ্টিকারী এ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে। শাহরুখ খান, কাজল ও রানী মুখার্জী অভিনয় করেছেন তিন প্রধান চরিত্রে। আধুনিক সময়ের তরুণ-তরুণীর চাওয়া পাওয়া, প্রেম ভালবাসার বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছিল ছবিটিতে। এ ছবিতে শিল্পীদের অপূর্ব অভিনয়, মনমাতানো গান এখনও দর্শকদের আগ্রহ জাগায়। দেবদাস : ব্যর্থ প্রেমের অমর কাহিনী ‘দেবদাস’ নিয়ে অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছে এ পর্যন্ত তবে ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দেবদাস’ ছবিটি নানাভাবে দর্শকদের আলোড়িত করেছে। দেবদাস চরিত্রে শাহরুখ খানের হৃদয় উজাড় করা অভিনয়, ব্যর্থ প্রেমিকের হাহাকার দুঃখ-বেদনা অসাধারণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পার্বতী ও চন্দ্রমুখী চরিত্রে ঐশ্বরিয়া রায় ও মাধুরী দীক্ষিতের পাল্লা দিয়ে অভিনয় ও নৃত্যকুশলতা প্রদর্শন ‘দেবদাস’ ছবির বড় একটি আকর্ষণ।
×