ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সামাজিক দূরত্ব মানার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

এশিয়ায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত জাপানে

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২২ এপ্রিল ২০২০

এশিয়ায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত জাপানে

জাপানে চলমান জরুরী অবস্থা সত্ত্বেও করোনা রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দেশটিতে ১১ হাজার ১শ’ ৩৫ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। একই সময় পর্যন্ত মারা যায় ২৬৩ জন। চিকিৎসাকর্মীরা করোনা প্রতিরোধে আরও পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে। প্রতিদিনই দেশটিতে শত শত করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির বিশেষজ্ঞরা। খবর জাপান টাইমস ও বিবিসি অনলাইনের। ইউরোপের তুলনায় জাপানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। এরপরই চীন ও ভারতের অবস্থান। দেশজুড়ে মাসব্যাপী জরুরী অবস্থা সত্ত্বেও জাপানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১০,৭৫১ জন এবং মারা গেছে ১৭১ জন। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বাসিন্দাদের প্রতি সামাজিক দূরত্ব ও অন্য লোকের সংস্পর্শ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, এসব আহ্বান সত্ত্বেও লোকজনের ঘরের বাইরে যাওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না। এছাড়া অনেক দোকানপাট ও রেস্টুরেস্ট এখনও খোলা রাখা হচ্ছে। যদিও দেশটির মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন সতর্ক করেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের হিসশিম খেতে হচ্ছে। জাপান সরকার বলেছে, তারা করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। পরীক্ষার হার বাড়িয়েছে, আইন পরিবর্তন করেছে এবং সারাদেশে জরুরী আইন জারি করেছে। কিন্তু চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এসব পদক্ষেপকে অপর্যাপ্ত বলছেন। টোকিও মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হারুয়া ওজাকি গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেছেন, হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য করা বেডগুলো সব ভরে গেছে। বেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিনই ব্যাপক সংখ্যায় রোগী আসাতে সে সবও ভরে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের ধারণার চেয়েও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে আরও দ্রুত। এছাড়া হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সরঞ্জামেরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ওসাকার মেয়র স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অব্যবহৃত রেইনকোট দান করার আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা বর্তমানে সুরক্ষা পোশাক হিসেবে গার্বেজ ব্যাগ ব্যবহার করছেন। অতি ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় জাপানে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন দেশটির চিকিৎসকরা। দেশটির দুটি ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে ‘জরুরী চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়তে পারে’ বলে সতর্ক করে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব গুরুতর রোগীসহ অন্যদের চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে জাপানের হাসপাতালগুলোর সামর্থ্য হ্রাস করছে বলে জানিয়েছে তারা। ভাইরাসটির কারণে অতিরিক্ত যে চাপ সৃষ্টি হয় সেই কারণে হাসপাতালের জরুরী বিভাগগুলো গুরুতর অসুস্থ অনেক রোগীরও চিকিৎসা করতে পারছে না বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে এ্যাম্বুলেন্সে থাকা এমন এক রোগীকে ৮০ হাসপাতাল ফিরিয়ে দেয়ার পর তার চিকিৎসা মিলেছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। জাপান ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, প্রাথমিকভাবে এমন ধারণা পাওয়া গেলেও শনিবার দেশটিতে শনাক্ত হওয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
×