ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বব্যাপী মৃত্যু এক লাখ ৬৪ হাজার, আক্রান্ত ২৩ লাখ ৮৬ হাজার

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ২০ এপ্রিল ২০২০

বিশ্বব্যাপী মৃত্যু এক লাখ  ৬৪ হাজার, আক্রান্ত  ২৩ লাখ ৮৬ হাজার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রবিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৫। এর মধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে ৬ লাখ ৬ হাজার ১৩৯ জন। এদিকে করোনায় রবিবার নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৯১, যুক্তরাজ্যে ৮৮৮, ফ্রান্সে ৬৪২, স্পেনে ৪১০, ইতালিতে ৪৩৩ ও জার্মানিতে ১৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ভাইরাসটির উৎস ও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া পানামা কর্তৃপক্ষ করোনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী প্রায় ১৭০০ অবৈধ অভিবাসীকে পানামার জঙ্গলে একটি ক্যাম্পে আটক রেখেছে। খবর এএফপি, বিবিসি, ফ্রান্স২৪, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, আল-জাজিরা, সিএনএন, ডেইলি মেল, ইউরো নিউজ, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ওয়াল, সায়েন্স ফোকাস, স্কাই নিউজ, ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো ও ইয়াহু নিউজের। যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৮৯১ জনের মৃত্যু ॥ যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৬৬৪ জন। জন্স হপকিনস ইউনিভার্সিটি শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৩২ হাজার ১৯৭ জন। এদিকে করোনাভাইরাস মহামারী চীনের ‘জ্ঞাতসারেই’ ঘটেছে এমন কোন প্রমাণ পাওয়া গেলে দেশটিকে পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার হোয়াইট হাউসের দৈনিক ব্রিফিংয়ে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেজিংয়ের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে। ট্রাম্প বলেন, ‘শুরু হওয়ার আগে চীনেই এটি থামানো যেত, তা হয়নি আর এখন পুরো বিশ্ব এর কারণে ভুগছে।’ যুক্তরাজ্যে আরও ৮৮৮ জনের মৃত্যু ॥ যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে নতুন করে হাসপাতালে আরও ৮৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৬৪ জন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার এ কথা জানায়। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ১৭ এপ্রিল বিকেল ৫টা পর্যন্ত করোনা টেস্টে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪,৫৭৬ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫,৪৬৪ জন। ফ্রান্সে আরও ৬৪২ জনের মৃত্যু ॥ ফ্রান্সে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল ও নার্সিং হোমে ৬৪২ জন মারা গেছে। শনিবার এ কথা জানিয়ে বলা হয় , হাসপাতাল ও ইনটেনসিভ কেয়ারে মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৩৬৪ জন এবং নার্সিং হোমে ২৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে করোনা মহামারীতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৩২৩ জন। স্পেনে আরও ৪১০ জনের মৃত্যু ॥ করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার কমছে স্পেনে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪১০ জন, যা গত প্রায় এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দৈনিক মৃত্যু। রবিবার স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় রয়টার্স। স্পেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রবিবার ৪১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন অর্থাৎ শনিবার মৃত্যু হয়েছিল ৫৬৫ জনের। দেশটিতে এ রোগে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২০ হাজার ৪৫৩ জন। রবিবার পর্যন্ত দেশটিতে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২১৮ জন। জার্মানিতে আরও ১৮৪ জনের মৃত্যু ॥ জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮৪ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৯৪ জন। রবিবার জার্মানির রবার্ট কশ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, টানা চারদিন পর শনিবার দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এদিন সেখানে নতুন করে ২ হাজার ৪৫৮ জনের শরীরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এর আগে শনিবার ৩ হাজার ৬০৯ জন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল জার্মান কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯৭ জন। ১৭০০ অবৈধ অভিবাসী পানামার জঙ্গলে আটক ॥ পানামা কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী প্রায় ১৭০০ অবৈধ অভিবাসীকে পানামার জঙ্গলে একটি ক্যাম্পে আটক রেখেছে। এই অভিবাসীদের মধ্যে অনেকে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তাদের ক্যাম্পে আটক রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কলাম্বিয়া সীমান্তের কাছে লা পেনিটায় তাদের আটক রাখা হয়েছে। ক্যাম্পটিতে প্রায় ২০০ জন রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, অভিবাসীদের মধ্যে ১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের ইতোমধ্যেই ক্যাম্প থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় চীনের স্বচ্ছতা নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি অস্ট্রেলিয়ার ॥ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় চীনের স্বচ্ছতা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। ভাইরাসটির উৎস ও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে দেশটি। রবিবার রয়টার্স এ তথ্য জানায়। গত বছরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে অবস্থিত বন্যপ্রাণীদের একটি বাজার থেকে করোনাভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। রয়টার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ মানুষ এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার জন। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিসে পেইনে বলেন, চীনের স্বচ্ছতা নিয়ে তার উদ্বেগ ‘খুব উচ্চ পর্যায়ে’। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস ঘিরে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করা দরকার এবং আমি মনে করি এটা করা গুরুত্বপূর্ণ। এটা হোক তা অস্ট্রেলিয়া সম্পূর্ণ দৃঢ়ভাবে চাইবে।’ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রবিবার দেশটিতে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫৩ জন। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৫৮৬। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের। গত সাত দিন ধরে রোগী শনাক্তের হার বাড়ার পরিমাণ ১ শতাংশের কম। এর আগে অস্ট্রেলিয়া অভিযোগ করেছিল, দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে চীন। এ ঘটনায় দেশ দু’টির সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনকে নিয়ে সমালোচনা করার পর আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি এলো অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে।
×