ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসে শিশু চিত্রাঙ্কন

সৃজনের ঝরনা ধারায় মুছে যাক বন্দিত্বের গ্লানি...

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ৩০ মার্চ ২০২০

সৃজনের ঝরনা ধারায় মুছে যাক  বন্দিত্বের গ্লানি...

খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ আনন্দে আর সৃজনের ধারায় প্রত্যাখ্যান করি করোনার কড়াল গ্রাস। বেঁচে রই সৃষ্টি আনন্দে, জীবনের জয়গানে কাটুক আঁধার। তাই আসুন জেগে উঠি বর্ণময় সৃজনধারায়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সাধারণ মানুষ সরকারের নির্দেশনা মেনে নিজ ঘরে অবস্থান করছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে তেমন কেউ বের হচ্ছেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধ ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও সব ধরনের বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে বন্ধ, সড়কে নেই কোন যানবাহন। এই সময়টাতে বাড়িতে অলস সময় না কাটিয়ে বইপড়া, চিত্রাঙ্কন, ছড়া, কবিতা, গান ও নৃত্য করার আহ্বান করেছে বরিশাল চারুকলা। বিশেষ করে শিশুদের ছবি আঁকার প্রতি তারা জোর দিয়েছে। ইতোমধ্যে তারা ‘আসুন সৃজনে মেতে উঠি’ নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বা গ্রুপ তৈরি করেছেন। যেখানে বাড়িতে থাকার এই সময়ে শিশুদের আঁকা ছবিগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। চারুকলার সংগঠকদের মতে, করোনাভাইরাসের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। কেউ বাহিরে যেতে পারছেন না। নিজ পরিবার নিয়ে সবাই গৃহাঙ্গনে স্বেচ্ছাবন্দী। এই বন্দিদশার সময়টুকু হেলায় না কাটানোর জন্যই এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, আমাদের শিশু ও শিক্ষার্থীদের হাতে এখন অফুরন্ত সময়। সৃজনের এক অবারিত দ্বার। এখন সময় তো বইপড়া, ছবি আঁকা, ছড়া, কবিতা, গান ও নৃত্য করার। তাই চারুকলার সংগঠকদের আহ্বানে ‘যে যেভাবে পারি সৃজনে উন্মাদনায় ভরিয়ে দেই না এই সময়টুকু।’ শুধু তাই নয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বলছেন তারা। যাতে স্বজন, বন্ধু ও শোভাকাক্সক্ষীরা তা দেখতে পারেন। বরিশাল চারুকলার সাধারণ সম্পাদক রনি দাস বলেন, এই প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে আমরা যেমন শিশুদের অলস সময় না কাটানোর জন্য ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহী করে তুলছি। তেমনি গৃহজীবন যাপনের এই সময়টাতে যে যতো ছবি জমা দেবে, তার ওপর ভিত্তি করে পুরস্কারেরও ব্যবস্থা করেছি। এখন পর্যন্ত অনেক শিশুরাই তাদের আঁকা ছবি জমা দিয়েছে। আমরা আশা করছি, শিশুরা উৎসাহী হয়ে এতে অংশগ্রহণ করবে। সবার প্রতি আহ্বান করে রনি দাস বলেন, আসুন আনন্দে আর সৃজনের ধারায় প্রত্যাখ্যান করি করোনার কড়াল গ্রাস। বেঁচে রই সৃষ্টি আনন্দে, জীবনের জয়গানে কাটুক আঁধার। তাই বর্ণময় সৃজনধারায় আসুন জেগে উঠি। চারুকলার সাবেক সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, ছবি আঁকার মধ্যদিয়ে আমরা শিশুদের ভাবনাগুলোকে দেখতে পাই। তাই ভাবনার বিনিময়ের এই অফুরন্ত সময়টুকুকে সম্ভাবনা হিসেবে ধরে আমরা নিজ সন্তানদের মধ্যে ছড়িয়ে দেই সৃজনের এই ঝরনাধারা। যার আলোকে ধুয়ে-মুছে যাক আমাদের বন্দিত্বের গ্লানিময় একঘেঁয়ে যাপিত জীবন।
×