ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাণিজ্য শুরু করতে চান ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ২৫ মার্চ ২০২০

বাণিজ্য শুরু করতে চান ট্রাম্প

করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের বহু অঙ্গরাজ্যে লকডাউন চলছে, সকল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। একে অন্যের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। কিন্ত এসবের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাবনা অন্যদিকে। তিনি চান করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই মার্কিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হোক, যুক্তরাষ্ট্র বাজার ধরে রাখুক। তার দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো চুটিয়ে ব্যবসা করুক। -খবর বিবিসি ও ওয়াশিংটন পোস্টের। ট্রাম্প সোমবার বলেন, আগামী এক অথবা দুই সপ্তাহ আমরা করোনা রুখতে কাজ করব। তবে এরপরও ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রাখা হলে অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। মার্কিন অর্থনীতি চরম মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, চলমান সতর্কতা অগ্রাহ্য করা হলে চড়া মাসুল গুনতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা এ্যন্থনি এস ফাউচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়ত এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব পুরোপুরি আঁচ করতে পারছে না। দেশের অনেক মানুষের মধ্যে এখনও সচেতনতা তেমন বাড়েনি। তাই আগে আমাদের অভ্যন্তরীণ সচেতনতা বাড়ানো জরুরী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ের পড়ার সঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয় জড়িত। আমরা খুব শীঘ্রই অর্থনীতিতে এর প্রভাব দেখতে যাচ্ছি। করোনাভাইরাসের ফলে আমাদের অর্থনীতিতেও একটা বড় ধরনের ঝাঁকুনি তৈরি হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা চালুর সঙ্গে দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করা হবে। ট্রাম্প বলেন, আমরা প্রথমে ভৌগোলিকভাবে চিন্তা করব। যেসব এলাকায় করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেশি, সেসব এলাকা বাদ দিয়ে সেখানে নেগেটিভ বেশি সেসব এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলো আগে চালু করা যেতে পারে। তিনি বলেন, যেমন ধরুন নিউইয়র্কে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এই অঙ্গরাজ্য লকডাউন অব্যাহত থাকবে। ট্রাম্প দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমেরিকা খুব শীঘ্র তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আবার চালু করবে। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ আমাদের অন্তত তিন চার মাস ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখতে বলেছে। আমি আশা করছি তার আগেই আমরা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করব। তবে এ সময় সামাজিক দূরত্বও কমিয়ে আনা হবে কি না-সাংবাদিকদের এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, না তা অবশ্যই নয়। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী একে-অন্যে নিজ নিজ দূরত্ব বজায় রেখে চলবে। ট্রাম্প বলেন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার আগে অবশ্যই আমরা এ্যন্থনি এস ফাউচিসহ অন্যান্য চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেই করব। অবশ্য এ সময় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর বিষয়টি আমলে নেয়া হবে। ওই সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দেশের সড়ক দুর্ঘটনার উদাহরণ টেনে বলেন, দেখুন আমরা দেখছি সড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। তার মানে এই নয় আমরা গাড়িতে চড়া বন্ধ করে দেব। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী রবার্ট মনুচিন গত সপ্তাহে দেশটির বেকারত্বের হার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ওতে বলা হয়, করোনা প্রাদুর্ভাবের ফলে দেশটির বেকারত্বের হার ২০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলতে পারে। গোল্ডম্যান স্যাঙ্গের এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি বলা হয়, চলমান পরিস্থিতিতে দেশটির অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ২৪ শতাংশ কমে যেতে পারে। ১৯৫৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন মাত্র ১০ শতাংশ কমেছিল। সোমবার হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস পরিস্তিতি নিয়ে ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য শীঘ্রই পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে। এরপর ট্রাম্প কয়েক দফা টুইট করেন। ওই টুইটেও একই ইঙ্গিত দেন।
×