সংসদ রিপোর্টার ॥ ফিলিস্তিন নিয়ে বাংলাদেশের নীরবতা নিয়ে সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সময়ের সমস্যা রয়েছে। তবে শুধু এটুকু বলব- ফিলিস্তিন সম্পর্কে আমাদের (বাংলাদেশের) নীতি আজও বলবত রয়েছে। ওআইসির সভায়ও এ নিয়ে বলেছি। ফলে এ নিয়ে সন্দেহের কোন কারণ নেই। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটা পরিকল্পনা করেছে, যা ফিলিস্তিনীদের ওপর আঘাত আসতে পারে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ফিলিস্তিনের পক্ষে হলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার পরও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। এটা কী ট্রাম্প প্রীতির কারণেই নিশ্চুপ কিনা, এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য জাতি জানতে চায়।
মেনন বলেন, ফিলিস্তিনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশের নীতি হচ্ছে ফিলিস্তিনীদের সংগ্রামে সমর্থন করা। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইলের নেতানিয়াহুকে সামনে নিয়ে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যা সমস্যা সমাধানের চুক্তি সম্পূর্ণভাবে নস্যাত করে সমস্ত ফিলিস্তিনকে ইসরাইলের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিকল্পনার মধ্যে যেটুকু জমি রয়েছে সেটি হচ্ছে পুরনো ফিলিস্তিনের মাত্র ১২ শতাংশ। তাও এটাকে বিক্ষিপ্তভাবে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ থেকে তাদের যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে। ওই পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের সমাধানের ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনে কোন আর্মি থাকতে পারবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের নিরস্ত্র করতে হবে। এই ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশ সব সময় দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশের রজতজয়ন্তী উৎসবে যে তিন বিশ্ব নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তার মধ্যে ছিলেন ফিলিস্তিন নেতা ইয়াসির আরাফাত। অথচ অবাক হচ্ছি ইসরাইলের এই পরিকল্পনার ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোন শব্দ নেই, একটি শব্দও তারা উচ্চারণ করেনি।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশ চিরকাল ফিলিস্তিনের পক্ষে। ফিলিস্তিনের জনগণ ওই পরিকল্পনাকে প্রত্যাখান করেছে, এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাখান করেছে, ওআইসি প্রত্যাখান করেছে, তারপরেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে পরিপূর্ণভাবে নিশ্চুপ। এটা কি ডোনাল্ড ট্রাম্প সাহেবের ভয়ে কিনা, আমার জানা নেই। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প ক’দিন পর ভারত যাবেন, সেখানে মোদি সাহেবের সঙ্গে মিলে এই অঞ্চলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, সেখানে বাংলাদেশে কোন অবস্থানে থাকবে? এটা কোন ধরনের পররাষ্ট্র নীতি। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দাবি করছি।
এ সময় নিজ আসনে দাঁড়িয়ে জবাব দিতে চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানতে চান মন্ত্রী ৩০০ ধারায় বিবৃতি দিতে চান কিনা? ফ্লোর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু এটুকু বলেন, ফিলিস্তিন সম্পর্কে আমাদের (বাংলাদেশের) নীতি আজও বলবত রয়েছে। ফলে এ নিয়ে সন্দেহের কোন কারণ নেই।