ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিডনি টেস্টে ২৭৯ রানের বড় জয় স্বাগতিকদের, নাথান লেয়নের ১০ উইকেট, ম্যাচ ও সিরিজসেরা মার্নাস লাবুশেন

নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ১২:১৬, ৭ জানুয়ারি ২০২০

নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০২০ সালে বিরাট কোহলিদের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে কোন দল? কোন রকম দ্বিধা না করে সৌরভ গাঙ্গুলী জবাব দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া। বিসিসিআইর বর্তমান বস ও ভারতীয় গ্রেট ভুল বলেননি। নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে নতুন বছর শুরু করল টিম পেইনের দল। সিডনিতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ২৭৯ রানের বিশাল জয়ের পথে কিউদের উড়িয়ে দিল স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ৪৫৪ রানে অলআউট অজিরা ২ উইকেটে ২১৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। দুরন্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন ডেভিড ওয়ার্নার। জয়ের জন্য ৪১৬ রানের অসম্ভব লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সোমবার চতুর্থ দিনে মাত্র ১৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ২৫৬। ম্যাচে ২১৫ ও ৫৯ রান এবং সিরিজে ৯১.৫০ গড়ে ৫৪৯ রান করে ম্যাচ ও সিরিজসেরার দুটি পুরস্কারই বগলদাবা করেছেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা মার্নাস লাবুশেন। দাপুটে নৈপুণ্যে ট্রান্স-তাসমান ট্রফিজয়ের পাশাপাশি নতুন প্রবর্তিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে কোহলি-সৌরভদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে অস্ট্রেলিয়া। তিন সিরিজে ৭ ম্যাচের সবকটি জিতে টেবিলের শীর্ষে ভারত। পয়েন্ট ৩০৭। সমান সিরিজে ১০ ম্যাচে অজিদেরও জয় এখন সমান ৭। পয়েন্ট ২৯৬। ২৯৬, ২৪৭, ২৭৯- সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার তিন ম্যাচে জয়ের ব্যবধান। পাকিস্তানের পর এবার কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করল পেইন বাহিনী। কেবল তাই নয়, এবারের মৌসুমে ঘরের মাঠে পাঁচ টেস্টের সব ম্যাচ অজিরা জিতল চার দিনের মধ্যে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউেন্ড (এসসিজি) বিনা উইকেটে ৪০ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে যায় ওয়ার্নার ও জো বার্নসের ব্যাটে। এলবিডব্লিউর সফল রিভিউ নিয়ে বার্নসকে ফিরিয়ে ১০৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন টড এ্যাস্টল। দ্বিতীয় উইকেটে আরেকটি শতরানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার ও লাবুশেন। আগের পাঁচ ইনিংসে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে না পারা ওয়ার্নার এবার পান তিন অঙ্কের দেখা। ২৪তম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া বাঁহাতি এই ওপেনার ৯ চারে ১৫৯ বলে করেন ১১১ রান। প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান লাবুশেনের সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন অধিনায়ক পেইন। দারুণ ছন্দে থাকা টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান অবশ্য তিন অঙ্কের দেখা পাননি। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় সীমানায় ক্যাচ দিয়ে থামেন ৫৯ রানে। সঙ্গে সঙ্গে ২ উইকেটে ২১৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। জয়ের জন্য ৪১৬ রানের অসম্ভব লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টম ব্লান্ডেল ও টম লাথামকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিয়ে সফরকারীদের নাড়িয়ে দেন মিচেল স্টার্ক। জিত রাভালকে দিয়ে শিকার শুরু করেন লেয়ন। প্রথম ইনিংসে ফিফটি পাওয়া অভিষিক্ত গ্লেন ফিলিপসকে খুলতে দেননি রানের খাতা। স্টিভেন ফ্লেমিংকে (৭১৭২) ছাড়িয়ে টেস্টে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে রস টেইলরের প্রয়োজন ছিল ২১ রান। এর চেয়ে এক রান বেশি করার পরই তাকে বোল্ড করে দেন প্যাট কামিন্স। ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা কিউইদের হয়ে খানিকটা লড়াই করেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও বিজে ওয়াটলিং। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে ৬৮ বলে ৫২ রান করা ডি গ্র্যান্ডহোমকে ফিরিয়ে ৬৯ রানের জুটি ভাঙ্গেন লেয়ন। এরপর বেশি দূর এগোয়নি অতিথিদের সংগ্রহ। মাটি কামড়ে পড়ে থাকা ওয়াটলিংয়ের প্রতিরোধ ভেঙ্গে নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দেন লেয়ন। ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো ম্যাচে ১০ উইকেট পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ এই অফস্পিনার। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৪৫৪/১০ (১৫০.১ ওভার; লাবুশেন ২১৫, স্মিথ ৬৩, ওয়েড ২২, হেড ১০, পেইন ৩৫, প্যাটিনসন ২, কামিন্স ৮, স্টার্ক ২২, লেয়ন ৬*; হেনরি ১/৯৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩/৭৮, ওয়াগনার ৩/৬৬, সমারভিল ১/৯৯, এ্যাস্টল ২/১১১) ও দ্বিতীয় ইনিংস ২১৭/২ ডিক্লে. (৫২ ওভার; ওয়ার্নার ১১১*, বার্নস ৪০, লাবুশেন ৫৯; ১/৫৪, টড এ্যাস্টল ১/৪১)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ২৫১/১০ (৯৫.৪ ওভার; লাথাম ৪৯, ব্লান্ডেল ৩৪, রাভাল ৩১, টেইলর ২২, ফিলিপস ৫২, ওয়াটলিং ৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ২০, এ্যাস্টল ২৫*, হেনরি ৩*; স্টার্ক ১/৫৭, কামিন্স ৩/৪৪, লেয়ন ৫/৬৮) ও দ্বিতী ইনিংস ১৩৬/১০ (৪৭.৫ ওভার; লাথাম ১, ব্লান্ডেল ২, রাভাল ১২, টেইলর ২২, ওয়াটলিং ১৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ৫২, টড এ্যাস্টল ১৭; স্টার্ক ৩/২৫, কামিন্স ১/২৯, লেয়ন ৫/৫০) ফল ॥ অস্ট্রেলিয়া ২৭৯ রানে জয়ী। ম্যাচ ও সিরিজসেরা ॥ লাবুশেন (অস্ট্রেলিয়া)। সিরিজ ॥ ৩ টেস্ট অস্ট্রেলিয়া ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
×