ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

আবহাওয়া দফতর নিয়ে নানা রসিকতা চালু আছে। তারা যদি বলে যে আজ বৃষ্টি হবে তাহলে নিঃসন্দেহে বাইরে বেরুনো যাবে ছাতা ছাড়াই, কেননা আজ বৃষ্টি হবে না। অবশ্য সেসব দিন এখন আর নেই। আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ার জন্য আধুনিক উপকরণ ব্যবহৃত হচ্ছে। নতুন মেধাবীরা কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছেন। ফলে এখন আবহাওয়ার পূর্বাভাস বহুলাংশেই মিলে যাচ্ছে। তারপরও কথা থেকে যায়। ঢাকাবাসী ভেবেছিলেন টানা শীতের দাপট বুঝি শনিবার থেকে কমে আসবে। তা হয়নি। এমনকি রবিবার এই কলাম লেখার সময়েও ঢাকার আকাশে সূর্যিমামার মুখ দেখা যায়নি। কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। বলছিলাম আবহাওয়াবিদদের কথা। এখন তারা বিশেষ ব্যাখ্যাও দিয়ে থাকেন যা আগে এমনভাবে আমরা শুনতে পাইনি। যেমন ঢাকায় দেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং সর্ব উত্তরাঞ্চলের তুলনায় বেশ কম শীতই পড়েছে। তবু মনে হচ্ছে কেন যে যশোর কিংবা পঞ্চগড়ে রয়েছি? সেখানে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে চলে এসেছে তাপমাত্রা। কিন্তু গভীর রাতেও ঢাকায় ১৩-১৪ ডিগ্রীর নিচে নামেনি তাপমাত্রা। তবু এত শীত কেন ঢাকায়? আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসেও হাড় কাঁপুনি ঠাণ্ডা পড়ে। আবার ৯-১০ ডিগ্রীতেও তেমন ঠাণ্ডা অনুভূত হয় না। তাপমাত্রা কমা বা বাড়ার সঙ্গে ঠাণ্ডা বা গরম অনভূতি কমা বা বাড়ার সম্পর্ক নেই। রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য তথা সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য যত কমে ঠাণ্ডা অনুভূতি তত বাড়বে। ক’দিন ধরে ঢাকায় রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য সবচেয়ে কম। আরও কয়েকটি স্থানে ঢাকার কাছাকাছি অবস্থা বিরাজ করছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে সারাদেশেই তাপমাত্রা কমেছে। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হলো মূলত দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে রাজধানী ঢাকায়। আবহাওয়া অধিদফতর এক পূর্বাভাসে বলেছে, বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়- ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অর্থাৎ মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অর্থাৎ দিনের তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য এখানে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ঢাকায় রাতে ছিল ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও দিনে ছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাজধানীতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য নেমে এসেছে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। বুধবার ঢাকায় এটা ৫ ডিগ্রীর ঘরে নেমে এসেছিল। তার আগে মঙ্গলবারও দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য সবচেয়ে কম ছিল ঢাকাতেই। ফলে টানা ক’দিন ধরে ব্যাপক কষ্টের মধ্যে পড়তে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। কাল বড়দিন আগামীকাল বুধবার বড়দিন। খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিন, মেরি ক্রিসমাস। এবার ঢাকায় উৎসব ভালই হচ্ছে। মেজিক্যাল বা জাদুকরী থিমে বড়দিন উদযাপনে প্রস্তুত পাঁচতারকা হোটেল। সান্তাক্লজের উপস্থিতিতে উদযাপন শুরু হবে। থাকবে ম্যাজিক শো, ক্রিসমাস ক্যারল, মেরি-গো-রাউন্ড এবং শিশুদের জন্য আরও অনেক মজাদার গেম। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাচ্চাদের জন্য সান্তাক্লজের ব্যাগভর্তি উপহার। আমন্ত্রিত সব অতিথি সুস্বাদু ‘ক্রিসমাস ব্রাঞ্চ’ খাওয়ার পাশাপাশি মজাদার সব আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন। বড়দিনের উৎসবমুখর পরিবেশে গুলশানের আমারিসহ বড় বড় রেস্তরাঁয় থাকছে বিশেষ আয়োজন। বড়দিনের স্পেশাল ডিনার আয়োজন চলবে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। বিশেষ এই আয়োজনে আরও থাকছে মুখরোচক প্যাস্ট্রি, বড়দিনের স্পেশাল কেক, ফ্রুট সালাদ ইত্যাদি। ঢাকা শহরসহ দেশের অন্যান্য জেলায় খ্রীস্টান সম্প্রদায় বড়দিনকে সামনে রেখে ত্রাণকর্তা যিশুকে স্বাগত জানানোর জন্য নানান আয়োজন ও কর্মসূচী গ্রহণ করে। ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চগুলোতে সপ্তাহজুড়েই চলছে নানা অনুষ্ঠান। ইউরোপে বড়দিনের তিন মাস আগে থেকেই উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। ঢাকায় ডিসেম্বর মাস না আসা পর্যন্ত ঠিক উৎসবের আমেজ আসে না। গির্জা কর্তৃপক্ষ এবং খ্রীস্টান বিভিন্ন যুব সংগঠনের উদ্যোগে সন্ধ্যায় বড়দিনের কীর্তন আয়োজন করা হয়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা শীতকে অগ্রাহ্য করে শহরময় বাড়ি বাড়ি ঘুরে নেচে গেয়ে কীর্তন পরিবেশন করে বড়দিনকে স্বাগত জানান। ঢাকার সবচেয়ে বড় খ্রীস্টান কমিউনিটি মিরপুর এলাকায়। বিগত দুই দশক ধরে মিরপুর আন্তঃমাণ্ডলিক বড়দিন উদযাপন কমিটি ২৫ ডিসেম্বরের আগে বিশেষ আনন্দ উৎসবের আয়োজন করে থাকে। আমাদের বন্ধু কেকা অধিকারী ছেলেবেলার বড়দিন নিয়ে বললেন এভাবে : ‘শৈশবে আমরা থাকতাম কলাবাগানে। সব মুসলিম আর দু’ঘর হিন্দু প্রতিবেশীর মধ্যে আমরাই ছিলাম একমাত্র খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী পরিবার। পড়তাম লেক সার্কাস স্কুলে। একটা সময় ছিল যখন ক্লাসে তো বটে, পুরো স্কুলেও একমাত্র খ্রীস্টান ছাত্রী ছিলাম আমি। ২৫ ডিসেম্বর কাছে এলেই বন্ধুরা বলতে আরম্ভ করত, ‘বড়দিনে তোরা কি করিস?’ ‘এবার বড়দিন কোথায় করবি?’ আমাদের গির্জায় নিয়ে যাবি? বড়দিন দেখব।’ বলাবাহুল্য, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়ে থাকে ফিবছর। নীরব এলাকা সরব এলাকা সচিবালয় এলাকাটি নীরব এলাকা বলে ঘোষণা করেছে সরকার। গত ৮ ডিসেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ ডিসেম্বর থেকে জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকাকে নীরব জোন (নো হর্ন জোন) হিসেবে গণ্য করা হবে। ২০০৬ সালের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী, নীরব এলাকায় দিনের বেলায় শব্দের মাত্রা থাকবে ৫০ ডেসিবেল এবং রাতের বেলা ৪০ ডেসিবেল। ওই বিধিমালার ধারা ৮(২) এ অনুযায়ী, নীরব এলাকায় নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে হর্ন বাজালে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। ওই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রথম অপরাধের জন্য কমপক্ষে এক মাস কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে। পরবর্তী অপরাধের জন্য কমপক্ষে ছয় মাস কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। বেশ একটা ঘটনাই বটে। কিন্তু কথা হচ্ছে ঢাকায় শব্দদূষণের মাত্রা কম কোথায়? কোন এলাকাকে আমরা বলতে পারব না সরব এলাকা? সাধারণভাবে আমরা বলতে পারি শিক্ষালয় এবং হাসপাতাল- এই দুটি এলাকার জন্য নীরবতা পালন অনেক বেশি প্রয়োজন। কিন্তু ঢাকায় কোন্ হাসপাতাল বা শিক্ষালয় রেহাই পাচ্ছে শব্দদূষণ থেকে? বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদফতরের আওতাধীন সচিবালয় এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজিদ আহমেদ জরিমানা আদায় করেন। তিনি বলেন, সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় জনপ্রশাসনের এক উপ-সচিব গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় হর্ন বাজান। এ অপরাধে তার গাড়ি আটক করা হয়। এ সময় উপ-সচিব নিজেই গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসা ছিলেন। উপ-সচিবের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উল্লেখ করে ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, হর্ন বাজানোর অপরাধে জনপ্রশাসনের উপ-সচিবের কাছ থেকে ৫০০ টাকা জরিমানা হিসাবে আদায় করা হয়েছে। তিনি অপরাধ করেছেন সে কারণে তার কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়। শিল্পী প্রিমার অগ্রযাত্রা ও স্বীকৃতি আগে চিত্রশিল্পীদের জীবদ্দশায় তাদের জীবন ও শিল্পকর্ম বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশ খুব একটা হতো না। তবে জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসানের মতো কালজয়ী শিল্পীদের কথা আলাদা। সরকারী পর্যায়ে কিংবা নামী প্রকাশনালয় শিল্পীদের এ্যালবাম প্রকাশ করত। এখন গ্যালারি কর্তৃপক্ষ (বেঙ্গল, কসমস) সে দায়িত্বভার নিয়েছে। ব্যতিক্রমী ও গুণী শিল্পীদের জীবন ও কর্ম নিয়ে ঢাউস পুস্তক প্রকাশিত হচ্ছে। বলাবাহুল্য, সম্পূর্ণ রঙিন এবং আর্ট পেপারেই মুদ্রিত হচ্ছে এসব গ্রন্থ। শনিবার গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে হলো শিল্পী নাজিয়া আন্দালীব প্রিমার শিল্পকর্ম নিয়ে দারুণ একখানা গ্রন্থ ‘প্রিমা ডোনা’র প্রকাশ। প্রকাশনা অনুষ্ঠান এখন বুক সাইনিং বা অটোগ্রাফসহ বই বিক্রির বৈশিষ্ট্য ধারণ করেছে। ৪০০ পৃষ্ঠার এ্যালবাম সাইজের এ বইটি নিয়ে উপস্থিত শিল্পী সুধীজনের আগ্রহের কমতি ছিল না। প্রিমাকে বহুমাত্রিক শিল্পী হিসেবে আখ্যায়িত করলেন ডক্টর আনিসুজ্জামান। মিলনায়তনে হাতেগোনা কয়েকজন ছিলেন ভিনদেশী, তবু প্রায় সবাই ইংরেজীতেই বক্তব্য রাখলেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ইংরেজী ভাষণ শুনে মনে হলো শব্দচয়ন ও পরিমিতিবোধ রক্ষায় তিনি অভিন্ন অবস্থানেই রয়েছেন মাতৃভাষার বাইরে বক্তব্য দিতে গিয়েও। প্রায় প্রত্যেক বক্তাই প্রিমার বহুশিল্পমুখিতা এবং বহুদেশ ভ্রমণের প্রসঙ্গ টানলেন। এভাবে যে তিনি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের শিল্পকলাকে পরিচিত করাচ্ছেন, এই বিশেষ অবদানের কথাও অনুল্লেখিত রইল না। বিটিভিতে আমি বিশ্বসাহিত্য ও বিশ্বশিল্পকলা নিয়ে যে অনুষ্ঠান (নিসর্গ ও নক্ষত্র) করে থাকি সেখানে একজন শিল্পীকে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানানোর তেমন সুযোগ নেই। কিন্তু প্রিমা নানা মাধ্যমে ছবি আঁকা এবং স্থাপনা শিল্প করার পরও সাধারণ মানুষের কাছে শিল্পকলাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য বিচিত্র সব কর্মকা- করে থাকেন। নিজেও হয়ে ওঠেন শিল্পকলার অংশ। এছাড়া দেশেদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে অংশগ্রহণ করা ছাড়াও একেবারে স্বউদ্যোগে ভ্রমণ করেন, বিভিন্ন বিখ্যাত গ্যালারিতে যান, ভিনদেশী শিল্পীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, আড্ডা দেন। ফলে তিনি অনেক বেশি সক্রিয় এবং একইসঙ্গে সমাজসচেতন। শুধু নারী স্বাধীনতা কিংবা নারীর ওপর নিপীড়ন- নারীসম্মত এমন তৎপরতায় আবদ্ধ থাকেন না। তাই তাকে দ্বিতীয় দফায় টিভি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে দ্বিধা করিনি। কেননা তাঁর কাছ থেকে শিল্পকলার নতুন চিন্তা ও প্রয়াসের তথ্য ও আলোচনা পাওয়া খুবই সম্ভব। চমৎকার অঙ্গসৌষ্ঠবসম্পন্ন সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থটির পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে ভাবছিলাম, এটি কেবল সূচনা মাত্র। প্রিমা সামনের দশকে নিশ্চয়ই আরও অনেক কাজ করবেন, তাই দ্বিতীয় বইটি প্রকাশের বেলায়ও তিনি সতীর্থদের চাইতে এগিয়েই থাকবেন। জয়তু প্রিমা। গুণী গীতিকারকে নিয়ে তথ্যচিত্র গীতিকার গোলাম মোরশেদ যৌবনে লিখতেন কবিতা। বস্ত্রশিল্প রফতানির ব্যবসায় যুক্ত হলে কবিতা লেখা কমে যায়। ভক্ত ছিলেন লাকী আখন্দের গানের। বিষয়টি অনেকটা কাকতালীয়ই। লাকী আখন্দ শিল্পজোর খাটালেন তার এই ভক্তের ওপর। বললেন, গান লিখতে হবে, আমি সুর করব। এমন প্রস্তাব পেলে যে কারোরই সেই নব্বইয়ের দশকে আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতো দশা হতো। কিন্তু গোলাম মোরশেদ হলেন চিন্তিত। কবিতা লেখা সম্ভব, কিন্তু গান? যা হোক লিখলেন, সুরকার অনুমোদনও করলেন, উৎসাহ দিলেন। এভাবেই তৈরি হলো প্রথম গানের এ্যালবাম। গাইলেন সব বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীরা। এরপর একে একে অনেক গানই লেখা। লাকী আখন্দ তো আছেনই, জেমস, সামিনা চৌধুরী, ফাহমিদা নবীসহ অনেক তারকাশিল্পীর কণ্ঠে গোলাম মোরশেদের গান খ্যাতি পেল। এদেশের গানের বেলায় জনপ্রিয়তার সংস্কৃতি এমন যে গানের শিল্পীই খ্যাতি পান, কখনও কখনও সুরকার। কিন্তু কখনোই গীতিকার নন। অথচ গানের প্রথম ভাবটির বা জন্মক্ষণের স্রষ্টা তিনিই। গোলাম মোরশেদের মতো কবিতাধর্মী বাণীসমৃদ্ধ গানের রচয়িতাকে বুঝতে পেরেছেন আরেক সঙ্গীতশিল্পী, যিনি প্রধানত রবীন্দ্রসঙ্গীতই গেয়ে থাকেন। তিনি মাহবুবা বিনু। এই মাহবুবাই চিত্রশিল্পী তারেক মাহাদিকে নিয়ে নির্মাণ করেছেন পূর্ণদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র। একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে এটি প্রদর্শিত হয়। চোখ, মনকে ধরে রাখার মতো এই ছবি। দারুণ দৃশ্যায়ন ও আলোক সম্পাত। গীতিকারের কথা কান পেতে শুনবার মতোই। নিজেকে উহ্য রেখেও যে নিজের সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলা যায়, তাতে সুরুচি, সুশিক্ষা, বিনয়, শিল্পপ্রেম এবং পরিমিতি বোধের প্রকাশ ঘটানো যায় তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল এই ছবি। ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ [email protected]
×