ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রায়ে গুরুত্ব পেয়েছে কিশোরের সাক্ষ্য

প্রকাশিত: ১২:২৮, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

 রায়ে গুরুত্ব  পেয়েছে কিশোরের সাক্ষ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আলোচিত হলি আর্টিজান হামলা মামলায় ১১৩ সাক্ষীর মধ্যে তাহরিম কাদেরী নামে এক কিশোর সাক্ষীর সাক্ষ্যকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করে আদালত বলে, ‘মামলায় তাহরীম কাদেরীর সাক্ষ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সঙ্গে অভিযুক্তদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে। এছাড়া সে দুজন অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছে।’ গত ১৬ জুলাই সাক্ষ্য দেয় ১৭ বছরের তাহরীম কাদেরী। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় তাহরীম। সে বলে, ‘একদিন র‌্যাশ (ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসলামুল ইসলাম) আর চকোলেট (বাশারুজ্জামান ওরফে চকোলেট) আঙ্কেল এসে পল্লবীর বাসার পাশাপাশি অন্য এক জায়গায় বাসা নিতে বলে। তখন রমজান মাস ছিল। আব্বু (তানভীর কাদেরী, গুলশান হামলার অর্থদাতা) তাদের কথামতো বসুন্ধরায় বাসা নেয়। আমরা রোজার প্রথম দিকে বসুন্ধরার বাসায় উঠি। ...আমরা বসুন্ধরা বাসায় ওঠার ৮-১০ দিন পর চকোলেট আঙ্কেল প্রথমে দুজন, এরপর তিনজনকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসে। এই পাঁচজনের সাংগঠনিক নাম ছিল সাদ, মামুন, উমর, আলিফ ও শুভ। এর কয়েকদিন পর তামিম (গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরী) আঙ্কেল ও মারজান (গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী) আঙ্কেল আমাদের বাসায় আসে। একই দিনে জাহাঙ্গীর (গুলশান হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত) আঙ্কেল, তার স্ত্রী, ছেলে শুভ এবং হৃদয় আঙ্কেল চকোলেট আঙ্কেলের সঙ্গে আমাদের বাসায় আসে।’ তাহরীম বলে, ‘তামিম, চকোলেট, মারজানরা আমাদের বাসায় ব্যাগ নিয়ে আসে। ব্যাগে অস্ত্র ছিল। তামিম, সাদ, মামুন, ওমর, আলিফ, শুভ আমাদের বসুন্ধরার বাসাতেই থাকত। তারা বাইরে কম বের হতো। তারা দরজা লাগিয়ে কথাবার্তা বলত। পাঁচজনের মধ্যে আলিফ ও ওমর অনেক অপারেশন করেছে বলে গল্প করত। কুষ্টিয়ার একজন খ্রীস্টান বা হিন্দুকে মেরে রক্তমাখা প্যান্ট খুলে পালিয়ে আসে বলে গল্প করে। সে আরও বলে, আঙ্কেলরা বলত তারা একটি বড় অপারেশন করবে। তবে কী ঘটনা ঘটাবে তা গুলশান হলি আর্টিজানে হামলার আগে জানতাম না। যেদিন অপারেশন হয়, সেদিন বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার দিকে সাদ, মামুন, উমর, আলিফ ও শুভ কাঁধে একটি করে ব্যাগ নিয়ে বের হয়। তারা বের হওয়ার সময় আমাদের সঙ্গে কোলাকুলি করে বলে, ‘জান্নাতে গিয়ে দেখা হবে ইনশাল্লাহ।’ তাহরীম আরও বলে, আব্বু আমাদের বলল, দোয়া করো যেন ওরা ধরা না পড়ে এবং ভাল একটা অপারেশন করতে পারে। সকালে অপারেশনে অংশগ্রহণকারীদের ছবি প্রকাশ হলো। আব্বু আমাকে বলল, অনেক ভাল একটা অপারেশন হয়েছে এবং তোমার ভাইয়েরা শহীদ হয়েছে। তখন আমরা সবাই বলি, ‘আলহামদুলিল্লাহ’।
×