ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে সম্মেলন

আগে ঘরের লোকের শাস্তি, পরে অন্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

 আগে ঘরের লোকের  শাস্তি, পরে অন্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি শুদ্ধি অভিযান প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নীতি, ‘ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখাব’। শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। আগে ঘরের লোককে শাস্তি দিব। তারপর অন্য লোকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বুধবার দুপুরে যশোর ঈদগা ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি আগামী তিন বছরের জন্য শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পরিচালনায় সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, যারা দীর্ঘদিন দলে পদ পায়নি, তাদের পদ দিতে হবে। নেতাদের পিছনে ঘুরে বেড়ায়, পরিচয় দিতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করছে, আওয়ামী লীগে পদ নেই। কোণঠাসাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসুন। আওয়ামী লীগ ত্যাগী, আদর্শবান কর্মীদের সংগঠন। ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না; মশারির মধ্যে মশারি করবেন না। মৌসুমি পাখিদের গুরুত্ব দেয়া যাবে না। মৌসুমি পাখিরা মৌসুমে আসে, মৌসুমে চলে গেলে পর্বতমালায় ফিরে যায়। আন্দোলন সংগ্রামের সময় মৌসুমি পাখিদের পাওয়া যাবে না। নেতাদের আচরণ ভাল করতে হবে। আচরণ ভাল না হলে উন্নয়নের মূল্য নেই। একটি খারাপ আচরণে দশটি উন্নয়ন ঢেকে যাবে। আওয়ামী লীগ চায় বিশুদ্ধ রক্ত। দূষিত রক্তের দরকার নেই। আওয়ামী লীগে বিশুদ্ধ রক্তের অভাব নেই। দূষিত রক্ত বের করে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘জঙ্গী হামলায় ঢাকা রক্তাক্ত হয়েছিল। সেই হলি আর্টিজান মামলায় ৭ জনের ফাঁসির রায় হয়েছে। ফেনীর সোনাগাজীর নুসরাত হত্যার রায় হয়েছে। বুয়েটের আবরার হত্যাকারীরা ছাত্রলীগের কর্মী ছিল। তারা গ্রেফতার হয়েছে, রেহাই পায়নি। তাদের বিচার হবে। দলের ত্যাগী নেতাদের খোঁজখবর নেয়ার তাগিদ দিয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দলের অনেক নেতাকর্মী আছেন, যারা দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। কিছু নেতার কপাল খুলেছে। কিন্তু ত্যাগী নেতাদের অনেকেই এখনও কুঁড়েঘরে বসবাস করেন। ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে পারেন না। অনেকে অসুস্থ আছেন। চিকিৎসা করাতে পারছে না। মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না। দলের নেতাকর্মীদের চিকিৎসার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার দরজা খোলা। প্রয়োজনে তিনি বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। আপনার আমাদের জানাবেন। এর আগে দুপুর ১২টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও পারভীন জামান কল্পনা। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। পরে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীড়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এবারের সম্মেলনে ৪৫৫ কাউন্সিলর ও প্রায় ১১ হাজার ডেলিগেট উপস্থিত ছিলেন।
×