ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ

প্রকাশিত: ০১:৩৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৯

পাকিস্তানের আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক ॥ পাকিস্তানে সেনাপ্রধানের মেয়াদবৃদ্ধি নিয়ে সরকারের সঙ্গে দেশিটির সুপ্রিম কোর্টের বিবাদ শুরু হয়েছে। সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন তা স্থগিত করেছে আদালত। তাই সেনাপ্রধানের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে লড়তে ইমরানের মন্ত্রিসভার আইনমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। ইমরান খান সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার মেয়াদ বৃদ্ধি করে গত ১৯ আগস্ট একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। কিন্তু ইমরান সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জে করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে দ্য জুরিস্ট ফাউন্ডেশন। সেই পিটিশনের ভিত্তিতে আদালত গতকাল প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করে। আজ বুধবার এর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রজ্ঞাপন স্থগিত করে আদালত তার সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি, কেন্দ্রীয় সরকার ও সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ জেনারেল বাজওয়াকে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল পেরে না ওঠায় আইনমন্ত্রী পদত্যাগ করে সেনাপ্রধানের হয়ে আদালতে লড়ার ঘোষণা দেন। সুপ্রিম কোর্ট এই স্থগিতাদেশ দিলে মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী ফারুগ নাসিম পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে মন্ত্রী শেখ রশিদ বলেন, ইমরান খান তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। মূলত আদালতে সেনাপ্রধানের হয়ে মামলাটি লড়তে তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন ইমরান খান। কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে ফারুগ নাসিম সুপ্রিম কোর্টে সেনাপ্রধানের হয়ে লড়তে পারতেন না। তাই বলা হচ্ছে তাকে পদত্যাগ বাধ্য করা হয়েছে। অনেকে আবার বলছেন, সেনাপ্রধানের মেয়াদবৃদ্ধি নিয়ে আইনি সব বিষয় সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে পদত্যাগ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডন এই খবর দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ২৯ শে নভেম্বর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া মেয়াদ শেষ হবে। তাই আদালতের স্থগিতাদেশ আসার পরপরই সরকার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে নতুন দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা ছাড়াও বিষয়টি নিয়ে গতকালই দুই দুইবার ইমরান খানের নেতৃত্বে বৈঠকে বসে মন্ত্রিসভা। বৈঠকে মন্ত্রিসভা সেনাবাহিনীর কিছু নিয়মে সংশোধন আনা ছাড়াও সেনাপ্রধানের নিয়োগের মেয়াদ বৃদ্ধির নিয়ম রেখে নতুন একটি ধারা যুক্ত করে। আদালত প্রশ্ন তুলেছে, সেনাপ্রধানের তিন বছর মেয়াদ বৃদ্ধি করে গত ১৯ আগস্ট যদি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তাতে মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন ছিল না। এছাড়া সেনাপ্রধানের মেয়াদবৃদ্ধির ক্ষমতা শুধু প্রেসিডেন্ট রাখেন অন্য কেউ নয়। সুপ্রিম কোর্টের শুনানি হলেই জানা যাবে সেনাপ্রধানের মেয়াদ বাড়ছে নাকি তাকে অবসরে যেতে হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের সব নির্বাচিত সরকার দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বলে কথিত আছে। ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ আছে। তাইতো মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার মেয়াদ তিন বছরের জন্য বর্ধিত করে তা অনুমোদন করেন।
×