অনলাইন ডেস্ক ॥ ভারতের মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা রাজ্যে আজ সোমবার বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই দুই রাজ্যের সঙ্গে একইদিনে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের ৬৪টি আসনেও উপনির্বাচন হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের আমলে এটিই প্রথম নির্বাচন।
কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে টানটান উত্তেজনার আবহে সোমবার বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে দুই রাজ্যে। জয়ের প্রশ্নে বিজেপি প্রায় নিশ্চিত হলেও বিরোধীরা বলছে, ভোটের ঠিক একদিন আগে দেশ জুড়ে যুদ্ধের জিগির তুলে ভোটারদের প্রভাবিত করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি।
বলিউড টাউন খ্যাত মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে গত শনিবার মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করেন মোদি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলিউড তারকা শাহরুখ খান, আমির খান, রাজকুমার হিরানি, কঙ্গনা রনৌত, সোনম কাপুর, একতা কাপুর, জ্যাকি শ্রফ, সনু নিগমসহ অনেকে।
মূলত এই দুই রাজ্যকেই পাখির চোখ করে লড়াইতে নেমেছিল বিজেপি ও কংগ্রেস। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে কট্টর কংগ্রেস সমর্থকরা কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। এছাড়াও নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপি যেভাবে প্রচারে নেমেছিল তার ছিটেফোঁটাও করতে পারেনি কংগ্রেস।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে এই দুই রাজ্যে ঘুরে নির্বাচনী সমাবেশ করেছেন। বিজেপি সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও দুই রাজ্য সফর করেছেন। বিজেপি মূলত কাশ্মীর সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং পাকিস্তান বিরোধিতাকে হাতিয়ার বানিয়েছে।
বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী মূলত বিজেপি সরকারের আমলে অর্থনীতির পতন ও বেকারত্বের মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়াও জিএসটি, নোটবাতিলের মতো বিষয়গুলো ভিত্তিহীন তা প্রমাণ করার চেষ্টা করলেও বিজেপির জাতীয়তবাদী প্রচারণার কাছে কার্যত হেরে গেছেন।
হরিয়ানা নির্বাচনে লড়বে বিজেপি, কংগ্রেস এবং জাতীয় লোক দল। রাজ্যটির ৯০ টি আসনে নির্বাচন হবে। যার মধ্যে ১৭টি সংরক্ষিত। নির্বাচন উপলক্ষে মোট প্রার্থী ১ হাজার ১৬৯ ও ভোটার এক কোটি ৮৩ লাখ। রাজ্যের ১৬ হাজার ৩৭৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।
মহারাষ্ট্রে মতাদর্শিক শরিক শিবশেনার সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে লড়বে বিজেপি। অন্যদিকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছে এনসিপি। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা আসন ২৮৮টি এবং ভোটার প্রায় নয় কোটি। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ২৩৭ প্রার্থী নির্বাচনে লড়বেন আর ভোট হবে প্রায় ৯৭ হাজার কেন্দ্রে।
মহারাষ্ট্রে দ্বিতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি দলীয় বর্তমান মুখমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। রাজ্যটির ২৮৮ আসনের মধ্যে ১৬৪টিতে বিজেপি এবং ১২৬টি আসনে লড়বে তাদের জোটসঙ্গী শিবসেনা। বিভিন্ন সমীক্ষার ফল বলছে, রাজ্যটির ক্ষমতা গেরুয়া শিবিরের হাতেই থাকছে।
মহারাষ্ট্রের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা বলদেভ সিং জানিয়েছেন নির্বাচন উপলক্ষে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন থাকবে। যার মধ্যে ২ লাখ রাজ্য পুলিশ বাকিরা সিআইএসএফ ও সিআরপিএফ জওয়ান।
এছাড়াও নকশাল অধ্যুষিত এলাকায় নির্বাচন উপলক্ষে বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে হেলিকপ্টার এবং ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৭টা থেকে, শেষ হবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার।